চোখ ধাঁধানো চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দেশ কেনিয়া। এটি বিখ্যাত সাভানা সাফারির জন্য। এখানে আছে মরুভূমি, আলপাইন তুষারপাত, বন আবার চমৎকার সমতল, নাইরোবি মহানগরী আর রঙ্গিন আদিবাসী সংস্কৃতি। আরও আছে স্বচ্ছ পানির লেক, কোরাল রিফ। বন্য পাণীদের সাফারিগুলো এখানকার মূল পর্যটক আকর্ষণ। কিন্তু এর পাশাপাশি আপনি কেনিয়া পর্বতে ট্রেকিং করতে পারবেন, ভারত মহাসাগর উপকূলে স্নোর কেলিং করতে পারবেন। কেনিয়ায় আকর্ষণ বহুমূখী। আসুন জেনে নিই তাদের কথা। আজ ২য় পর্ব-
মাসাইমারা ন্যাশনাল পার্ক
তাঞ্জানিয়ার বর্ডারে এর অবস্থান। দুই দেশের বন্য পানীদের মাঝে বর্ডার টেনে দিয়েছে এই পার্ক। পার্কটির নামকরণ হয়েছে রেড-ক্লকড মাসাই জনগোষ্ঠীর নামে। তাদের জনবসতীকে আবিষ্ট করেই এই পার্ক, তারা এখানেই থাকেন এবং প্রাণীদের সাথে তাদের জীবন তেমনিই চলছে যেমন চলে আসছিল বহু শতাব্দী ধরে। তাদের ভাষায় 'মারা' মানে 'বহুবর্ণে চিত্রবিচিত্র'। সম্ভবত নামের ক্ষেত্রে তাদের এই শব্দের ব্যবহারের কারণ আফ্রিকার গাছেদের আলো আর আধারির খেলা এবং আকাশের মেঘ বিশাল ঘাসের জমিতে যে ছায়া ফেলে তার অপূর্ব সৌন্দর্য্য।
জুলাই থেকে অক্টোবারে হাজারো বন্য পশু, জেব্রা আর থমসন্স গ্যাজেলে সেরেঙ্গেতি থেকে এখানে চলে আসে। মারা নদীতে চোখে পড়ে হিপো আর কুমির। এখানে আরও আছে বিশালসংখ্যক সিংহ, চিতা এবং লোপার্ড। এখানকার আবহাওয়াও চমৎকার, মৃদু এবং কমনীয়।
এম্বসেলি ন্যাশনাল রিজার্ভ
এটি কেনিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণ। এম্বসেলি শব্দটি একটি মাসাই শব্দ যার অর্থ 'লবণাক্ত ধূলা'। বিশাল সংখ্যক হাতি একত্রে কাছ থেকে দেখার জন্য এটাই মোক্ষম জায়গা। অন্যান্য প্রাণীরাও আছে এখানে যেমন- চিতা, সিংহ, ইম্পালা, ইল্যান্ড, ওয়াটারবাক, গ্যাজেল এবং প্রায় ৬০০ প্রজাতির পাখি। প্রকৃতিপ্রেমীরা পার্কটিকে খুবই পছন্দ করেন, তারা এক্সপ্লোর করেন শুষ্ক মৌসুমের এম্বসেলি লেক, জলাভূমির সালফার স্প্রিংস, বৃক্ষহীন তৃণভূমি আর উডল্যান্ড। মাসাই জনগোষ্ঠীর বিচিত্র জীবনযাত্রা দেখতেও ভাল লাগবে আপনার।
সাভো ন্যাশনাল পার্ক
কেনিয়ার সবচেয়ে বড় পার্ক এটি। দুই ভাগে বিভক্ত পার্কটি, সাভো ওয়েস্ট এবং সাভো ইস্ট। একত্রে পার্কটি কেনিয়ার সমগ্র এলাকার ৪ শতাংশ জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। নদীতে ঘেরা পার্কটিতে দেখতে পাবেন জলপ্রপাত, সাভানাহ, আগ্নেয় পর্বত, বিশাল আগ্নেয় শিলা পাথর এবং অবশ্যই বিচিত্র বন্য জীবন।
নাইরোবি এবং মোম্বাসার মাঝে পূর্ব সাভো বেশি খ্যাত এর চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য। হাতিদের সাথে ছবি তোলা আর লাল বালি নিয়ে খেলা করা পর্যটকদের প্রিয় কাজ এখানে। গালানা নদী পার্কটিতে যোগ করেছে আরও নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য। পাশের ঘন বন, কোথাও আবার সমতল, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ লাভা ফ্লো- ইয়াট্টা প্লাটিউ, মুদান্দা পাথর এবং লুগার্ড ফলস যা গিয়ে পড়েছে কুমির ভরা পুকুরে - সব মিলিয়ে সাভো যেন নানান রঙের রোমাঞ্চের আরেক নাম।
সাভো পশ্চিমকে আরও বিচিত্র করেছে জিমা স্প্রিংসগুলো। প্রাকৃতিক স্প্রিন্সের সাথে দেখা মিলবে অসংখ্য হিপো, কুমির, চাইমু ক্রাটার, বিচিত্র প্রজাতির পাখির। গভীর বনাঞ্চলের জন্য প্রণীদের দেখা পাওয়া একটু কঠিন এখানে। কিন্তু সেটা বাদ দিলেও এখানকার প্রকৃতি মন ভরিয়ে দেবে আপনার।
No comments:
Post a Comment