Tuesday, June 28, 2016
সুখী দম্পতিদের উপকারী ঝগড়ার রকমফের
ভালোবাসা যেহেতু আছে, বিবাদও থাকবে সম্পর্কে। নইলে ভালোবাসা আরো বাড়বে কিভাবে? সবাই বলেন, ঝগড়া ভালো নয়। এতে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু নিউ ইয়র্কের ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপিস্ট এবং 'হোয়াট অ্যাবাউট মি? স্টপ সেলফিশনেস ফ্রম রুইনিং ইওর রিলেশনশিপ' বইয়ের লেখক ড. জেন গ্রির জানান, স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের জন্যে কিছুটা বিবাদও জরুরি। এখানে তিনি জানাচ্ছেন সেই সব উপকারী দ্বন্দ্বের কথা যা দাম্পত্য জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। ১. অর্থ বিষয়ে বিবাদ : হয়তো দুজনই উপার্জন করছেন। কিংবা শুধু স্বামীই কাজ করেন। আর স্ত্রী গৃহিণী। এ ক্ষেত্রে যে একমাত্র স্বামী যা বলবেন তাই করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। দামি গাড়ি কিনবেন নাকি বিলাসী রেস্টুরেন্টে খেতে যাবেন তা আপনারাই ঠিক করুন। অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন, বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করে। আসলে অর্থ খরচের বিষয় নিয়ে বিতণ্ডা হয় না। ঝামেলা হয় নিজস্ব মূল্যবোধ নিয়ে। চাইলে দামি গাড়ি কিনতেই পারেন। কিন্তু পরিবেশ ও পরিস্থিতি বুঝে তা কিনতে রাজি নন আপনি। এটা আপনার ভেতরকার বিষয়। আর এসব বিষয় নিয়ে ঝগড়া শেষ পর্যন্ত গঠনমূলক হয়ে ওঠে। অর্থের সংকট থাকলেও বিবাদ উভয়ের আন্তরিক আলোচনায় পরিণত হতে পারে। তাই সংসার জীবনে কিভাবে পয়সা খরচ করবনে তা নিয়ে নিজের মতামত দিতে এবং প্রয়োজনে তর্ক-বিতর্কে জড়াতে অস্বস্তি বোধ করবেন না। ২. যৌন বিষয়ে ঝগড়া : দাম্পত্য জীবন থেকে যদি যৌনতা হারিয়ে যায়, তবে তা দৈহিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত সেক্স উভয়ের জন্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিতণ্ডা সৃষ্টি হতে পারে। দুজনই অতৃপ্তি নিয়ে চুপচাপ থাকলে হিতেবিপরীতটাই ঘটবে। তাই এ নিয়ে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ুন। প্রয়োজনে থেরাপিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ৩. যেভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন : বিভিন্ন ধরনের আবেগের প্রকাশ ঘটা প্রয়োজন। বিশেষ করে সবচেয়ে মারাত্মক আবেগটি হলো ক্ষোভ। কার ক্ষোভ প্রকাশের বৈশিষ্ট্য কেমন তা জানা প্রয়োজন। এর জন্যে দুজনই মনে ক্ষোভ নিয়ে ঝগড়ায় জড়াতে পারেন। এতে করে দুজনই বুঝ উঠবেন, কার ক্ষোভ কিভাবে সামাল দিতে হবে। ৪. পরিবারের অন্যান্যদের নিয়ে ঝামেলা : শ্বশুর-শাশুড়ি বা অন্যদের উপস্থিতি নিয়ে পরিবারে ঝামেলা হয়। যখন বাসায় আপনার বাবা-মা আসাতে চান তখন কি স্বামী এ নিয়ে মেজাজ খারাপ করেন? যদি করেই থাকেন, তবে এ বিবাদকে এড়িয়ে যাবেন না। আসলে আপনার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন নিয়ে কে কি চিন্তা করছেন তা জানা থাকা ভালো। এ নিয়ে ঠাণ্ডা আলোচনাও চলতে পারে। আবার ভুল বোঝাবুঝি থাকলেও তা স্পষ্ট হয়। ফলে এগুলোর অবসানের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই এটা বেশ স্বাস্থ্যকর ঝগড়া বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞ। ৫. কেউ একজন চাকরি হারালে : বর্তমান চাকরিটা হঠাৎ করেই হারাতে পারেন। অর্থনৈতিক সংকট বড় ঝামেলার সৃষ্টি করে। এমন ধকল সামলাতে দুজনের ঝগড়া অবশেষে সমাধান টেনে আনতে পারে। তা ছাড়া একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিও পরিষ্কার হবে। কারো চাকরি গেলে সঙ্গী-সঙ্গিনী যদি বিষয়টি একেবারেই না মেনে নিতে পারেন, তবে তা এখনি পরিষ্কার হতে হবে। নইলে পরে বড় ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। যিনি চাকরি খুইয়েছেন তার বিষণ্ন সময় সৃষ্টি হয়। তাই পাশে থাকা উচিত। আর একচোট বিতর্কের মাধ্যমে কাজটি সমাধা হতে পারে। ৬. বাসায় কে কি কাজ করেন : স্বামী অলস সময় কাটান। আর স্ত্রী সারাদিন কাজ করতে থাকেন। এ নিয়ে উত্তেজিত স্ত্রী কিছু কটু কথা শোনাতেই পারেন। এতে স্বামী কিছু নড়েচড়ে বসতে পারেন। অর্থাৎ, দুজনেরই একযোগে বাড়ির কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এ ধরনের ঝগড়ায় সংসার সামলাতে দুজনেরই অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। দেখা যায়, তারা একসঙ্গে রান্না ঘরে কাজ করছেন বা বাসন মাজছেন বা ডায়নিং গোছাচ্ছেন। বিষয়টা বেশ মধুর। সূত্র : এমএসএন
Labels:
লাইফস্টাইল
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment