Social Icons

Saturday, June 25, 2016

সমালোচক রোমারিও এখন নেইমারের অনুরাগী

কানে মাইক্রোফোন, এমনভাবে মিডিয়া সেন্টারে বসেছিলেন দেখলে মনে হবে ব্রাজিলীয় সাংবাদিক। গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। চুলগুলো সেই আগের মতোই ছাঁটা। একটাই পার্থক্য, আগে মাঠে নামলে সমর্থকদের একটা আলাদা শিহরণ হতো। এখন সেই রামও নেই, নেই রাজত্বও। তবুও তিনি ব্রাজিলের অলরাউন্ডার।

রোমারিও ডি’সুজা ফারিয়া। কিন্তু পাশে ওটা আবার কে, তাঁরই মতো মুখমণ্ডল। ছেলে রোমারিনহোকে নিয়েই চলে এসেছেন ব্রাসিলিয়া প্রেস সেন্টারে। আসার উদেশ্য, ‘ও গ্লোবো’র টিভি ধারাভাষ্য করা। ব্রাজিল রয়েছে তেরোসোপোলিসের গ্রাঞ্জা কোমারিতে, যাবেন না শিবিরে? কী হবে গিয়ে? আমার কোনো মূল্যই নেই ওখানে। জানেন না, ব্রাজিলে একজন দারুণ বিচক্ষণ কোচ রয়েছেন! যিনি আমার উপস্থিতি ভালোভাবে নেবেন না। বোঝা গেলো স্কোলারির ওপর রাগ এখনও যায়নি। ১৯৯৮বিশ্বকাপে তুখোড় ফর্মে থাকা রোমারিওকে দলে নেওয়া হয়নি, এমনকি চারবছর পরে ২০০২সালেও একই চিত্র। স্কোলারি যে ব্রাজিল দল ঘোষণা করেছিলেন, সেখানে নাম ছিলো না রোমারিওর। যিনি দল ঘোষণার পরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে কেঁদে ফেলেছিলেন, তাঁর সেই চোখের জল মোছার স্মৃতি ব্রাজিলীয়রা ভোলেননি। বলেছিলেন, এই ঘটনা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় হতাশার। রোমারিও যে ব্রাজিলের নয়নের মণি, তাও বোঝা যায় তৎকালীন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট হেনরিক কার্দাসোর তৎপরতায়। কোচ স্কোলারিকে বলা হয়েছিলো, অবিলম্বে রোমারিওকে দলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু বিগ ফিল আগেও একরোখাভাবে বলেছিলেন, তাঁর দলে রোমারিও মানায় না।

নেইমার দারুণ ছন্দে। ব্রাজিলের প্রথম কোনো মহাতারকা যিনি নেইমারের বার্সায় যোগ দেওয়ার ঘটনাকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। বলেছিলেন, ‘আরে বাবা, ব্রাজিলের ছেলে, শুরু থেকেই যদি ইউরোপে চলে যাস্ , তাহলে এখানকার ফুটবলের গরিমা তো দিনের পর দিন কমবে।’ সেই সমালোচকই এখন নেইমারের অনুরাগী। ‘না, না যাই বলুন ছেলেটার কিন্তু ক্ষমতা আছে, না হলে দলের বাকিরা যেখানে অতি সাধারণ, সেখানে একা টানছে তো ম্যাচে। একসময় আমিই বলেছিলাম আমার থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে নেইমার, কিন্তু বলে দিতে পারি এই ছেলেটি এবার তাক লাগিয়ে দেবে বিশ্বকে, মিলিয়ে নেবেন!’

বাবা কথা বলছেন। বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন ছেলে রোমারিনহো। বাপ কা বেটা বললে ভুল হবে না। কিন্তু রোমারিও যেমন নাম করেছেন, ছেলে সেইভাবে দাগ কাটতে পারেননি। ২০বছর বয়স, ব্রাজিল যুব দলের সদস্যও। কিন্তু নেইমারদের দলে স্থান পেলে যেমন বৃত্তটা সম্পূর্ণ হতো, তেমন হয়নি। মিডিয়াকে রোমারিও পুত্র বলছিলেন, ‘সবাই তো আর বাবার মতো হবে না। আমাকে সময় দিতে হবে। বাবা আমার থেকে স্পেশাল ছিলেন। আমি সাধারণ, আমাকে অনেকবেশি পরিশ্রম করতে হবে!’ এও বললেন, ‘বাবা চেয়েছিলেন আমি বিদেশে খেলতে যাই। আমি চেয়েছিলাম শুরুটা ব্রাজিলেই হোক, তাই আমি সিরি ডি ব্রাসিলেন্সেই খেলছি।’ একসময় বাবার ক্লাব ভাস্কো দ্য গামার আকাদেমিতে ভর্তিও হয়েছিলেন।

রোমারিওর যদিও ধারণা ছেলে অচিরেই ব্রাজিল দলে সুযোগ পাবে। দেখি কতোটা যেতে পারে, কিন্তু আমি চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবো না, দায়িত্ববান পিতার মতোই জানালেন ১৯৯৪সালের বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলের মহানায়ক। তাঁর সঙ্গে বেবেতোর জুটি নিয়ে কত কথা, কতই না স্মৃতি। এখনও যোগাযোগ রয়েছে বেবেতোর সঙ্গে? ‘যোগাযোগ তো আমিই রেখেছিলাম, কিন্তু তারপর দেখলাম ওই আমাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে, তাই আর কথা হয় না!’ 

ফুটবলার থেকে কোচ, আবার খেলা ছেড়ে ব্রাজিলের সোশ্যালিস্ট দলের রাজনীতিকও হন। এখন অবশ্য বিশ্বকাপের বাজারে টিভি ধারাভাষ্যকার থেকে শুরু করে নিয়মিত সংবাদপত্রের বিশেষজ্ঞও। ব্রাজিল দল নিয়ে তাঁর একটাই মূল্যায়ন, দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ব্রাজিলের লড়াই আরো কঠিন হবে। কেন না দলের রক্ষণ তেমন জমাট নয়। মাঝমাঠে একজনের খেলা তাঁর স্মৃতিকে উসকে দিচ্ছে, সেটিও জানিয়ে রাখলেন, ওই অস্কার নামক ছেলেটি কিন্তু আমার মতো খেলে। প্রতিভাবান, কিন্তু ওকে আমার মতো গোলও করতে হবে, না হলে কেউ মনে রাখবে না!

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates