ভাড়াটে খুনি ওয়াসিমের গুলিতে খুন হয়েছেন আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল সাত থেকে আটজন।
রোববার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দফতরের সামনে প্রেস ব্রিফিংএ সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া ওয়াসিম ও আনোয়ার নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আনোয়ার মূল হত্যাকারীদের ব্যাক-আপ ফোর্স হিসেবে ঘটনার সময় কাজ করেছিল।
হত্যার দায় স্বীকার করে ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের দুজনের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সম্পর্কে আমরা অবহিত। তাদের সবাইকে যাতে শনাক্ত করে আইনের কাছে সোপর্দ করতে পারি সে চেষ্টা করছি।
কী কারণে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কেবল দুজন আসামি পেয়েছি। বাকিদের পেলে, তদন্ত সম্পন্ন হলে, তখন হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর বিষয় তথা কেন, কী কারণে এসপির স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হলো তা জানানো যাবে।'
গ্রেফতার দুজন আদালতে কী স্বীকারোক্তি দিয়েছে জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার বলেন, 'তারা সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছে এটাই তাদের জবানবন্দি। ওয়াসিম মোটরসাইকেলে ছিল। সে সরাসরি মিতুকে হত্যায় অংশ নিয়েছিল।'
মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বাদীকে (বাবুল আক্তারকে) নজরদারিতে কেন রাখা হবে? যদি এ রকম কিছু থাকে, তদন্তে এমন কিছু বেরিয়ে আসে, তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়ার সরাসরি সুযোগ আছে। এখানে লুকোচুরির কী আছে?'
এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অনেকের কাছ থেকে তথ্য নেয়ার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এটিকে আটক কিংবা গ্রেফতার কোনটাই বলা যাবে না বলে জানান ইকবাল বাহার।
মিতু হত্যার ঘটনা অন্যদিকে প্রভাবিত করা হচ্ছে- বাবুল আক্তারের এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন উনি কী দৃষ্টিভঙ্গিতে বলেছেন তা উনি ভালো বলতে পারবেন। ঘটনা যাতে সঠিক থাকে এবং সঠিকভাবে তদন্ত হয়, সে ব্যাপারে আমরা সক্রিয় আছি।'
বাবুল আক্তারকে গভীর রাতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে- এমন প্রশ্নে সিএমপি কমিশনার বলেন, 'বাদীকে কখনও জিজ্ঞাসাবাদ কথাটি বলতে আমি প্রস্তুত নই। বাদীর সঙ্গে মামলা নিয়ে দীর্ঘ সময়, দীর্ঘক্ষণ, বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হতে পারে। এটিকে জিজ্ঞাসাবাদ বলার কোনো সুযোগ নেই। বাবুল আক্তারকে পুলিশ দিয়ে ডাকা হয়নি।'
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে বাবুল আক্তারের অবস্থান স্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে, তার নিরাপত্তার জন্য। তার মুভমেন্টেও পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হয়। এটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কোনো সুযোগ নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল বাহার বলেন, বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না, 'সে সময় কারা ছিল তা তদন্তের স্বার্থে পরিপূর্ণভাবে জনসমক্ষে দেয়া যাবে না। পূর্ণ তদন্ত শেষ হলে যেটি প্রতিষ্ঠিত হবে সেটি আপনাদের (সাংবাদিকদের) সামনে উপস্থাপন করব। সেটি সত্য হবে।'
কার নির্দেশে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'খুনিরা সংঘবদ্ধ চক্র, ভাড়াটে খুনি। কার নির্দেশে বা কিভাবে খুন করা হয়েছে এটি পর্যায়ক্রমে বের করব। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই পূর্ণাঙ্গ খোলাসা করব না। তবে হত্যারাকীরা জঙ্গি কিনা নাকি অন্য কেউ তা এখনও জানা যায়নি।'
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment