বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবির মাধ্যমে প্রবেশ। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। খুবই অল্পসময় রাজত্ব করেছিলেন চলচ্চিত্র ভুবনের এই কিংবদন্তি অভিনেতা। অভিনয় করেছেন মাত্র ২৭টির মতো চলচ্চিত্রে। তার সাবলীল অভিনয় নৈপুণ্যে জয় করেছিলেন কোটি মানুষের ভালবাসা। হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের সিনেমা জগতের এক নম্বর নায়ক। তিনি সালমান শাহ।
বাংলদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। মারা যান ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তার মৃত্যু রহস্য আজও উদঘাটিত হয়নি। সালমান শাহ ভক্তরা জানতে পারেনি কেন তাদের প্রিয় নায়ক জীবনকে ছুটি দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন। আবার সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর অভিযোগ—তাকে হত্যা করা হয়েছে। সালমান শাহর মৃত্যুর দুই দশক পেরিয়ে এসেও তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ঠিক আগের মতোই শক্তিশালী। সালমান শাহর মতো এমন দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তা খুব কম চলচ্চিত্র তারকারাই অর্জন করতে পেরেছেন।
নব্বই-এর দশকের শ্রেষ্ঠ নায়ক সালমান শাহর প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার এই অভিনেতার প্রথম চলচ্চিত্র কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে। একই চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে মৌসুমী এবং গায়ক আগুনের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। নায়ক সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায়। সালমান শাহ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সামিরা।
সালমান চলচ্চিত্র ছাড়াও বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেন। এরমধ্যে পাথর সময়, ইতিকথা, আকাশ ছোঁয়া, দোয়েল, সব পাখি ঘরে ফেরে, সৈকত সারস, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী উল্লেখযোগ্য।
সালমান চলচ্চিত্র ছাড়াও বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেন। এরমধ্যে পাথর সময়, ইতিকথা, আকাশ ছোঁয়া, দোয়েল, সব পাখি ঘরে ফেরে, সৈকত সারস, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী উল্লেখযোগ্য।
নায়ক সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় কেয়ামত থেকে কেয়ামত, দেন মোহর, তোমাকে চাই। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় বিক্ষোভ ও আনন্দ অশ্রু, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় জীবন সংসার, মহামিলন, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের ঠিকানা, এই ঘর এই সংসার। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় কন্যা দান, মায়ের অধিকার, প্রেম যুদ্ধ, সত্যের মৃত্যু নাই, সুজন সাথী, স্বপ্নের নায়ক, তুমি আমার প্রভৃতি। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় বুকের ভেতর আগুন ও প্রেম পিয়াসী চলচ্চিত্রগুলো।
সালমান শাহ তার অভিনয় জীবনে বেশ কিছু গুণী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে সোহানুর রহমান সোহান, জহিরুল হক, মুহম্মদ হান্নান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, জীবন রহমান, শিবলী সাদিক, শফি বিক্রমপুরী, শাহ আলম কিরণ, দেলায়ার জাহান ঝন্টু, নুরুল ইসলাম পারভেজ, হাফিজ উদ্দিন, তমিজ উদ্দিন রিজভী, মালেক আফসারী, বাদল সরকার, মতিন রহমান, দিলীপ সোম, রানা নাসের, ছটকু আহমেদ, জাকির হোসেন রাজু অন্যতম।
চলচ্চিত্র অভিনয়ে সালমান শাহর নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন শাবনূর, মৌসুমী ছাড়াও অভিনয় করেছেন শাবনাজ, লিমা, শিল্পী, শ্যামা, সোনিয়া, দৃষ্টি, সাবরিনা ও কাঞ্চি। সালমান শাহ মৃত্যুর আগে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন পরে কাজ করতে পারেননি। এগুলো হচ্ছে শেষ ঠিকানা, প্রেমের বাজী, আগুন শুধু আগুন, কে অপরাধী, মন মানে না, ঋণ শোধ, তুমি শুধু তুমি।
No comments:
Post a Comment