প্রবাসী শ্রমিকদের স্বাধীনভাবে ওমানে প্রবেশ এবং বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা ‘অনাপত্তি পত্রে’র আইন বাতিল করতে যাচ্ছে ওমান সরকার। দেশটির জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন। সাঈদ বিন নাসের আর সাদি নামে ওমানের জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা টাইমস অফ ওমানকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন- ‘আমরা অনাপত্তি পত্রের ধারাটি তুলে দেবো। এটা আর থাকবে না। এই পরিকল্পনা বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ওমান তার প্রতিবেশী দেশগুলোর পদক্ষেপকে অনুসরণ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওমানের প্রতিবেশী দেশগুলো প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য দেশ ত্যাগের ক্ষেত্রে এই ‘এনওসি’ বা ‘অনাপত্তি পত্র’ নেয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বাতিল করেছে। তবে এখন পর্যন্ত ওমানে চাকরি পরিবর্তন করতে হলে প্রবাসী শ্রমিককে অবশ্যই তার বর্তমান নিয়োগদাতার কাছ থেকে অনাপত্তি পত্র নিতে হয়। এই অনাপত্তি পত্র ছাড়া কোন প্রবাসী শ্রমিক পরবর্তী ২ বছরের মধ্যে আবার ওমানে প্রবেশ করার অনুমতি পায় না। সাঈদ বিন নাসের এই আইন পরিবর্তনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছেন-
‘আমরা শ্রম আইন যুগোপযোগী করছি। আমাদের নতুন শ্রম আইন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হবে। নতুন শ্রম আইনের একেবারে চুড়ান্ত পর্যায়ে আছি আমরা। খুব শীঘ্রই এটা হয়ে যাবে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওমানে ব্যবসা করার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো এর শ্রম আইন। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি থেকে ওমানের শ্রম আইনে এই ‘অনাপত্তি পত্র’ নেয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়। তারপর থেকেই এটাকে প্রবাসী শ্রমিকদের শোষণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই দেখা হয়। এর ফলে ভালো কাজের সুযোগ পেলে বা কাজ ছেড়ে দেয়ার অনেক কারণ থাকলেও তা করতে পারে না প্রবাসী শ্রমিকরা। অনেক শ্রমিক, যারা কাজের চুক্তি শেষের পর ওমান ত্যাগ করে নিজের দেশে ফিরে গিয়ে আবারো নতুন কোন কোম্পানীতে কাজে ফিরতে চেয়েছে তারা বড় ধরণের শোষণের শিকার হয়েছে। বর্তমান মালিকের কাছ থেকে অনাপত্তি পত্র সংগ্রহ করতে উল্টো সেই মালিক বা নিয়োগদাতাকে হাজার হাজার রিয়াল দিতে হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত তার শ্রম আইন অনেক শিথিল করেছে এবং কাতারেও পরিবর্তিত শ্রম আইনের বাস্তবায়ন শুরু হবে এ বছরেরই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে।
No comments:
Post a Comment