কত বড় ব্যবধানে জিতবেন হিলারি ক্লিন্টন ? কয়টি ইলেকটোরাল ভোট আসবে তাঁর ঝুলিতে ? ৩৫০ ? নাকি তিনি একাই জিতে নেবেন ৪০০ ?
আমেরিকাবাসী এখন ব্যস্ত এই আলোচনাতেই ! কারণ, হার-জিতের তর্ক তো শেষ বিতর্কের সঙ্গেই শেষ হয়ে গিয়েছে। যে বিতর্কের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, হেরে গেলে এই ভোটের ফল তিনি মেনে নেবেন না ! এরপরও যে কয় জনের মনে সংশয় ছিল, তার অবসান হয়ে যায় বিতর্কের পর রিপাবলিকান প্রার্থীর প্রচারসভায়। যেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেন , ‘ভোটের ফল তিনি মেনে নেবেন। তবে ...জিতলে।’
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কারণে আমেরিকাজুড়ে এখন সমালোচনার ঝড়। সরব ডেমোক্র্যাটরা। আড়াল খুঁজছেন রিপাবলিকানরাও। ট্রাম্পের দলীয় সতীর্থরাই বুঝে উঠতে পারছেন না, জনসমক্ষে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন এমন আজব উক্তিকে। কেউ বলছেন , ‘ঝোঁকের মাথায় বলে ফেলেছেন ’, কেউ বলছেন , ‘এটা নেহাতই কথার কথা ’, কেউ আবার প্রকাশ্যেই বলছেন , ‘উনি বলে দিলেই তো আর হল না ’। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এমন ‘ব্লান্ডার ’-এসব থেকে বিপাকে অন্য রিপাবলিকান প্রার্থীরা। নিজেদের ঘরটুকু বাঁচাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।
অতটা না হলেও বেশ খানিকটা বেহাল অবস্থা ট্রাম্পের নিজের প্রচার ম্যানেজার কেলিয়ান কনওয়ে রও। ‘কেন বললেন ট্রাম্প এই কথা ? গণতন্ত্র মানেন না তো ভোটে দাঁড়িয়েছেন কেন ?’ প্রশ্নের ঠেলায় তাঁর তো প্রাণ ওষ্ঠাগত। আর রিপাবলিকানদের এমন ছন্নছাড়া অবস্থার সুযোগ নিয়ে , কফিনে শেষ পেরেক পুঁততে আসরে নেমে পড়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।
একদিকে , হিলারি-কেইন , অন্যদিকে ঝড়ো ব্যাটিং ‘নীল ’ শিবিরের। মায়ামির সভা থেকে ট্রাম্পকে তীব্র আক্রমণে বিদ্ধ করলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। তিনি বললেন , ‘ট্রাম্প যা বলেছেন তা ভয়ঙ্কর ! এটা ভাবতেও পারা যায় না !’ এমনকি এতো কিছুর পরও ট্রাম্পকে সমর্থন করার জন্য কিছু রিপাবলিকানকেও কটাক্ষ করেন তিনি। ট্রাম্পকে আক্রমণে প্রেসিডেন্টের থেকেও একধাপ এগিয়ে যান ফার্স্ট লেডি। অ্যারিজোনার সভায় তিনি বলেন , ‘ট্রাম্প তো আমেরিকার মূল ভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ করছেন। ’
বিতর্কের মঞ্চে সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ভোটের ফল মানবেন কি না , তা ‘সময় এলেই বলবেন ’। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন মিশেল ওবামা বলেন , ‘গণতন্ত্র রহস্য রোমাঞ্চের জিনিস নয়।’
বিতর্কের মঞ্চে সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ভোটের ফল মানবেন কি না , তা ‘সময় এলেই বলবেন ’। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন মিশেল ওবামা বলেন , ‘গণতন্ত্র রহস্য রোমাঞ্চের জিনিস নয়।’
রিপাবলিকানদের অনেকে অবশ্য ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে ক্লিনটন আমলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরেরের মন্তব্যের তুলনা টানছেন। কিন্তু , বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য , এ সব করে আর কোনও লাভ নেই। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে !
রাজনৈতিক সংগ্রামের এই উত্তপ্ত বাতাবরণেই গত বৃহস্পতিবার রাতে এক চ্যারিটি নৈশভোজে মুখোমুখি হন হিলারি -ট্রাম্প। গুরুগম্ভীর বিতর্কের পর এখানে পালা ছিল প্রার্থীদের কৌতুক-দক্ষতা মেপে দেখার। কিন্তু আগাগোড়াই নৈশভোজের পরিবেশ ছিল থমথমে , অস্বস্তিকর। উপস্থিত অতিথিরাও কাঁটা হয়ে ছিলেন , বিশেষ করে রিপাবলিকানরা , এই বুঝি কোনও অসাংবিধানিক কথা বলে ফেললেন ট্রাম্প।
আর সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে যথারীতি এখানেও বিতর্কে জড়ান ট্রাম্প ! মজা করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত দর্শকদের নিন্দা শুনে বাড়ি ফেরেন। কারণ ঠাট্টা-হাসির বাইরে বেরিয়ে আচমকাই হিলারিকে আক্রমণ করতে শুরু করেন তিনি, যা এখানে একেবারেই নিষিদ্ধ ছিল। এই পরিস্থিতিতে খেপে গিয়ে চিৎকার শুরু করে দেন দর্শকরা। শেষ পর্যন্ত ক্ষান্ত দেন ট্রাম্প। যাকে এ বারের প্রেসিডেন্সিয়াল ভোটে প্রচার যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি বলেই ধরছেন অনেকে!
সূত্র-এই সময়
সূত্র-এই সময়
No comments:
Post a Comment