নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মুন্দিরপুর গ্রামে ভগ্নিপতিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে এক তরুণীকে রাতভর গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর বিচার-সালিশের আশ্বাস দিয়ে ওই তরুণীকে রাজধানী ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার তিন দিন পর চিকিৎসা শেষে রোববার বিকালে ওই তরুণী সোনারগাঁ থানায় এসে পুলিশের কাছে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ মো. মঞ্জুর কাদের পিপিএম জানান, এ ঘটনার পর সোনারগাঁ থানা পুলিশের একাধিক টিম রোববার সন্ধ্যায় মুন্দিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল হোতা মাদকসেবী ও বখাটে যুবক সেলিম ও আজিজুলকে আটক করে।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মুন্দিরপুর গ্রামে বসবাসরত নূর মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া স্বপনের ভাড়া বাসায় গত বৃহস্পতিবার বিকালে তার মামা আলম মিয়া রাজধানী ঢাকার ডেমরা থেকে বেড়াতে যান।
আলম মিয়ার সঙ্গে তার শ্যালিকাও বেড়াতে যায়। বাড়িতে ওইসময় স্বপন উপস্থিত না থাকলেও তার স্ত্রী সাহেদা বেগম উপস্থিত ছিলেন। আলম মিয়া ও তার শ্যালিকার মুন্দিরপুর গ্রামে স্বপনের ভাড়া বাসায় বেড়াতে যাওয়ার বিষয়টি এলাকার কয়েকজন বখাটে যুবক ও মাদকসেবীদের নজরে আসে।
পরে ওইদিন মধ্যরাতে মাদকসেবী ও বখাটে যুবক সেলিমের নেতৃত্বে ডালিম, আজিজুল, আলমসহ ৭-৮ জনের একটি দল ওই বাড়িতে হানা দেয় এবং ওই তরুণীকে ঘর থেকে জোরপূর্বক তুলে মুন্দিরপুর কাঠবাগানে নিয়ে যায়।
এসময় ওই তরুণীর দুলাভাই আলম মিয়া বিষয়টি টের পেয়ে বখাটেদের পিছু নিলে তারা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কাঠবাগানের ভেতর একটি গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে রাখে।
এসময় ওই বখাটেরা দুলাভাই আলমের সামনে শ্যালিকাকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
বিষয়টি পরেরদিন শুক্রবার সকালে এলাকায় জানাজানি হলে বখাটেরা স্থানীয় মাতব্বর আনোয়ার ও মঞ্জুরকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।
পরে আনোয়ার ও মঞ্জুর রোববার বিকাল ৩টায় সালিশের আয়োজন করে। কিন্তু ওই তরুণী শালিসে অংশগ্রহণ না করে সোনারগাঁ থানায় এসে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে।
এ ঘটনার পর রোববার বিকালে সোনারগাঁ থানার দারোগা (এসআই) সাধন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একাধিক টিম মুন্দিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষক সেলিম ও আজিজুলকে আটক করে।
গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী আদমজী ইপিজেডের একটি সেকশনে কর্মরত বলে জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃত ধর্ষক সেলিম মুন্দিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে ও আজিজুল একই গ্রামের আলী রহমানের ছেলে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment