সারা বিশ্বে বিশেষ করে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে মশা একটি মারাত্মক সমস্যা। প্রতিবছর মশার দংশনে ওই সব এলাকায় জিকা, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার লোকের মৃত্যু ঘটছে।
প্রাণঘাতি ভাইরাস বা জীবানু বহনকারী মশা নিধনে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এবার ব্রাজিলে কারখানায় উৎপাদন করা লাখ লাখ মশা উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা করেছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে কাটা দিয়ে কাটা তোলা অর্থাৎ কারখানার মশা দিয়েই জীবানু বহনকারী মশা ধ্বংস করা হবে।
ব্রিটিশ ফার্ম অক্সিটেক জানায়, এসব মশা জিনগতভাবে পরিবর্তিত (টেস্টটিউবে উৎপাদন করা)। এসব মশা দল বেঁধে এডিস এজিপটির মতো মশা, যেগুলো জিকা, ডেঙ্গু ও পীতজ্বর সৃষ্টিকারী ভাইরাস বহন করে সেসব মশার সঙ্গে মিশে যাবে।
এসব টেস্টটিউব মশা যখন অন্যান্য মশার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে তখন ওই মশাগুলো মরে যাবে। এই পদ্ধতিতে জন্মানো মশাগুলো জিনগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ (রোগাক্রান্ত)। এর কারণে অন্যান্য মশাগুলো খুব দ্রুত মরে যাবে।
অক্সিটেক জানায়, তাদের কারখানাটি সাও পাওলোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পিরাসিকাবায় অবস্থিত। এই করাখানায় এক সপ্তাহে ছয় কোটি রোগাক্রান্ত মশা উৎপাদন করা যায়।
অক্সিটেকের প্রেসিডেন্ট হাদিয়ান প্যারি দাবি করেন, পিরাসিকাবা বিশ্বের প্রথম ও সবচেয়ে বড় কারখানা, যেখানে জিনগত ত্রটিপূর্ণ মশা উৎপাদন করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে পরীক্ষা চালায়। পানামা ও কায়মান দীপ ও ব্রাজিলের বাহিয়া প্রদেশে মিউট্যান্ট মশা ছাড়ার পর সেখানে এডিস মশার উপদ্রব ৯০ শতাংশ কমে গেছে।
তবে ব্রাজিলের অ্যানভিসা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এখনো এটি বিক্রির অনুমতি দেয়নি। এসব মশা ছাড়ার পর মশাবাহিত রোগ কমেছে এমন কোনো গবেষণা তারা এখনো করেনি।
তবে প্যারি বলেন, আমরা অ্যানভিসার অনুমতির অপেক্ষায় আছি। এজন্য আমাদের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, তবে ২০১৭ সালের মধ্যে আশা করা যাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment