ডুবতে থাকা এক নারীকে বাঁচিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন উদ্ধারকারী। তিনি তো কোনো ধন্যবাদ পেলেনই না, উপরন্তু আচ্ছামতো বকেছেন ওই নারীর স্বামী।
পারলে তো তিনি ওই যুবককে সবার সামনে মারধর করেন। কলার ধরে স্বামীর হুঙ্কার, ‘আমার স্ত্রীকে বাঁচালি কেন? কার অনুমতিতে সুইসাইডটা ভেস্তে দিলি?’
কি আশ্চর্য! হাজার চেষ্টা করেও সেই ‘গুণধর’ স্বামীকে বোঝানো তো গেলই না, উপরন্তু সাহায্যকারীর ছবি তুলে বদলা নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের বল্লভ সদনে এমন ঘটনায় উদ্ধারকারী দুই যুবক তো বটেই, পথচারীরাও থ।
ওই উদ্ধারকারীরা আসলে আহমেদাবাদের দমকলকর্মী। তাদের কাছে ফোনে খবর আসে, ৩৭ বছরের এক মহিলা সবরমতী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। তৎক্ষণাৎ দুই দমকলকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাদের মধ্যে একজন নদীতে ঝাঁপিয়ে উদ্ধার করেন মহিলাকে। আর একজন তাঁর স্বামীকে খবর দেন। এই পর্যন্ত সব কিছু আর পাঁচটা ঘটনার মতোই ছিল।
কিন্তু গল্পের মোড় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেন ওই মহিলার স্বামী। খবর পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তিনি। তবে বৌয়ের খোঁজখবর না নিয়েই সোজা ধমকাতে শুরু করেন ওই দমকলকর্মীকে।
কলার টেনে ধরে তাকে এই মারেন তো সেই মারেন অবস্থা। কে বলেছিল আমার বৌ-কে বাঁচাতে? কার অনুমতিতে নদীতে ঝাঁপিয়েছিস? সুইসাইডটাই ভেস্তে দিতে কে বলেছে? রাগে গজগজ করতে করতে এই কথাগুলোই উগরে দিচ্ছিলেন তিনি।
ভ্যাবাচ্যাকা দুই দমকলকর্মীর হাজার বোঝানোতেও তার রাগ কমানো যায়নি। উল্টে মোবাইলে ছবি তুলে তাকে শাসাতেও শুরু করেন।
এরপর স্ত্রী এবং স্বামীকে নিয়ে আহমেদাবাদের রিভারফ্রন্ট থানায় হাজির হন দমকলকর্মীরা। অভিযোগ দায়ের করা হয় স্বামীর বিরুদ্ধে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন থানার ইনস্পেক্টর। এরপরই জানা গেল এসবের পেছনের কথা।
ইনস্পেক্টর জানান, তাদের ১০ বছরের বিবাহিত জীবন। দুই সন্তান রয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে।
স্বামীর সন্দেহ স্ত্রীর অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। সেই নিয়ে দু’জনের মধ্যে গোলমাল লেগেই থাকত। পরে স্ত্রী জানতে পারেন যে স্বামীরই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।
দু’জনের মধ্যে সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে স্ত্রী আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
পরে অবশ্য পুলিশের মধ্যস্থতায় নিজেদের সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ওই দম্পতি।
Friday, October 28, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment