আশ্চর্যজনক হলেও সত্য মায়ের দুগ্ধপানে যে সন্তান বেঁচে থাকে সেই মাতৃদুগ্ধও আজকাল বিক্রি হচ্ছে। বিকিকিনি করার বিষয়টি এখন ব্যবসায়ও পরিণত হচ্ছে! তেমনই ঘটনা ঘটেছে সুদূর কম্বোডিয়ায়। ক্রেতা আর কেউ নয়,বিত্ত বৈভবে ভরা পরাক্রমশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঢালাওভাবে না হলেও কম্বোডিয়ার অনেক মা এ কাজটি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অবশ্য দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে তারা এ পথে নামছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি নিয়ে যখন সমালোচনার ঝড় বইছে তখন দেশটির তরফ থেকে এই মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কম্বোডিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এ মায়ের দুধ রপ্তানি হয়ে থাকে। দরিদ্র অনেক মা উপায়ান্তর না পেয়ে এই মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করছেন বলে খবরে প্রকাশ। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার বাজার খুলছে অনেক কোম্পানি। সমালোচকরা বলছেন, মায়ের দুধ বিক্রি করার এ প্রবণতা তার নিজ সন্তানকে দুগ্ধপানে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আর এ কারণে নবজাতক শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ হচ্ছে না।
তবে এ অভিযোগ যে সব ক্ষেত্রে হচ্ছে তা নয়, আবার এ অভিযোগকে একেবারে উড়িয়েও দিচ্ছেন না অনেকে। প্রশ্ন উঠেছে কম্বোডিয়ায় মায়েদের মাঝে এ প্রবণতা কি তাদের নারীসত্ত্বাকে অবমাননা করছে নাকি তাকে আরো ক্ষমতায়িত করছে। এ ধরনের প্রশ্ন যখন নানা মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে তখনই কম্বোডিয়া সরকারের পক্ষ থেকে মাতৃদুগ্ধ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়।
মঙ্গলবার দেশটির পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর এর মূল কারণ হচ্ছে মায়ের দুধ কোনভাবেই ব্যবসায়িক উদ্দেশে ব্যবহার করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের যে কোম্পানিটি এটি প্রক্রিয়াজাত করছে তার নাম অ্যামবোরসিয়া ল্যাবস। যেসব মায়েদের সন্তান জন্মদানের পর বুকের দুধের সমস্যা হতো তাদের কাছে এগুলো বিক্রি করা হতো। আউন্সপ্রতি তা কেনা হতো অর্ধডলারে। পক্ষান্তরে বিক্রি করা হতো তার আটগুন বেশি দামে। বিশ্বে অনেক দেশে ‘মিল্ক ব্যাংক’ রয়েছে,যেখানে অনেক মায়েরা দুগ্ধ দান করে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেকে অনলাইনকেও কাজে লাগিয়ে থাকেন।
বিষয়টি নিয়ে ইউনিসেফ জানিয়েছে, দরিদ্র নারীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী তাদের ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। প্রকৃতপক্ষে এর মাধ্যমে নারীদের সাথেই প্রবঞ্চনাই করা হচ্ছে। সংস্থাটি জানায়, কোনভাবেই মায়ের দুধ ব্যবসায়িক উদ্দেশে ব্যবহৃত হতে পারে না।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, দরিদ্র নারীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী তাদের ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। আর এর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে নারীদের সাথেই প্রবঞ্চনাই করা হচ্ছে। বিবিসি।
No comments:
Post a Comment