সুদান বললেই ভেসে ওঠে গৃহযুদ্ধের ছবি! সুদান বললেই ওঠে আসে দারফুরের কথা। ‘দারফুর সমস্যা’ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের কাছে পরিচিত। সুদান মানেই প্রবল রাজনৈতিক সংকট। কিন্তু হালে ওই তকমা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাচ্ছে সুদান। সুদানে এত পিরামিড পাওয়া গেছে যা মিসরেও নেই!
পিরামিডের দেশ মিসর। কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু গত কয়েক বছরের খনন আর নতুন আবিষ্কারে মিসরের গর্ব বেশিদিন থাকছে না। মিসরে এখন পর্যন্ত পিরামিড পাওয়া গেছে ১৩৮টি এদিকে সুদানে গত কয়েকবছর খনন করে আবিষ্কৃত হয়েছে ১৭৭টি পিরামিড!
দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, সুদানের উত্তরাঞ্চলজুড়ে খননকাজ চলছে। সুদানের উত্তরের দেশটিই মিসর। নীল নদও কেবল একার মিসরের না। ছুঁয়েছে সুদানকেও। নীল নদের একটি অংশ দেশটির রাজধানী খার্তুম দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পিরামিডের দিক থেকে মিসরকে পেছনে ফেললেও পর্যটকের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায়। বিস্তীর্ণ মরু প্রান্তরজুড়ে পিরামিডগুলো দাঁড়িয়ে আছে। অথচ নেই মিসরের মতো ভিড়। দেশটির অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ, পর্যটনের অবকাঠামোর অভাব এসব কারণেই হয়তো পর্যটনের এ অবস্থা বলে মনে করছেন ভ্রমণ বিশ্লেষকরা।
প্রাচীনকালে প্রায় ২০০ বছর ধরে কুশ সাম্রাজ্য টিকেছিল সুদানে। খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০ সালে কুশ রাজা দেশটি আয়ত্বে নেন। কুশদের রাজধানী ছিল ‘নাপাটা’।
৫৯০ খ্রিস্টপূর্বে মিসরের বাসিন্দারা সুদানে মোরোটিক সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। ওই মোরাটিকদের মধ্যেই ফেরাউন শাসকদের প্রভাব ছিল। এরাও ফেরাউনদের মতো পিরামিড গড়ত। বলা হয় এভাবেই মিসরের পিরামিডের বিস্তৃতি ঘটে সুদানের উত্তরাঞ্চলেও।
১৭৭টি পিরামিড এখনো টিকে আছে। অবশ্য এগুলো অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারত। বিশেষ করে জিউসেপ্পে ফারলিনি নামে এক গুপ্তধন শিকারি ইটালিয়ান সেনার চোখ পড়েছিল সুদানের এসব পিরামিডের ওপর। ১৮৩৪ সালের দিকে অটোমান সেনাদের নিয়ে এসব এলাকায় হামলাও করেন তিনি। ফারলিনি চেয়েছিলেন স্বর্ণ। তাঁর ধারণা ছিল এসব পিরামিডে স্বর্ণসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র থাকতে পারে। ফারলিনি ঝড় তেমন একটা বয়ে যায়নি এসব পিরামিডের ওপর। এগুলো এখনো অক্ষত আছে বলে ধারণা ইতিহাসবিদের।
No comments:
Post a Comment