জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ওবামা প্রশাসনের নেয়া ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’ পরিকল্পনা বাতিলের নতুন এক নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্বন নিঃসরণের কারণে বেড়ে যাওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতাকে সীমিত রাখতে ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’ পরিকল্পনাটি বাতিল করে মঙ্গলবার ‘এনার্জি ইন্ডিপেন্ডেন্স এক্সিকিউটিভ অর্ডার’ নামে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ট্রাম্প।
এর ফলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জলবায়ু নীতির মূল অংশগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ওবামা প্রশাসনের ওই নীতির আওতায় বিভিন্ন রাষ্ট্র কার্বন নির্গমন কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তির উল্লেখ না থাকায় কার্বন নিঃসরণ ২ শতাংশে সীমিত রাখার ঐতিহাসিক আন্তর্জাতিক সমঝোতার বাস্তবায়নও সংশয়ের মুখে পড়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে এসব কথা জানা গেছে।
এ নীতি থেকে সরে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়ার ফলে ব্যবসায়ী গ্রুপ ট্রাম্পের প্রশংসা করলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। তারা এ পদক্ষেপকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েছে এবং এটি বিশ্বের স্বচ্ছ জ্বালানি প্রযুক্তির ধারার বিপরীতে বলে উল্লেখ করেছেন। পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলছেন, এটি ঘরে-বাইরে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।
ট্রাম্প বলেছেন, তার এই নির্বাহী আদেশ ‘কয়লার বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ও ‘কর্মসংস্থান বিনাশী বিধিনিষেধের’ অবসান ঘটাবে। জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক শিল্প-কারখানাগুলোকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে ট্রাম্প পরিবেশগত বিধিনিষেধ কমিয়ে আনার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার মধ্যে এই নির্বাহী আদেশকে সবচেয়ে জোরালো মনে করা হচ্ছে। প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের এই বিপন্নতার প্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে কপ ২১ নামের একটি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো একটি জলবায়ু চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। চুক্তির আওতায় বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর নভেম্বরে ওবামা প্রশাসন ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। শুরু থেকেই ওই প্যারিস চুক্তির বিরোধিতাকারী ট্রাম্প জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক উৎপাদন ফিরিয়ে এনেছেন। নিশ্চিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণসাপেক্ষেই তার সিদ্ধান্তে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যাবে, ফলে স্বভাবতই বৈশ্বিক উষ্ণতাও বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি।
No comments:
Post a Comment