প্রশ্ন : জান্নাত আল্লাহ কি দিয়ে বানিয়েছেন ? এক হুজুর সেদিন ওয়াজে বললেন, জান্নাতের একটি ইট হবে স্বর্ণের, আরেকটি ইট হবে রৌপ্যের, দুই ইটের মাঝখানে যে মসল্লা হবে, তা হবে মেশকেআম্বার, ইয়াকুতু মাজ্জান পাথরের মিশ্রণ থাকবে এবং জান্নাতের ছাদ ও ফ্লোর হবে জাফরানযুক্ত সুগন্ধি মাটি । হুজুর এই বয়ান দিতে গিয়ে বলেন যে, এটি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত । রাসুল (সা.) জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে এ কথা বলেন । তিনি আরো বলেন, জান্নাতে দেওয়া হবে হুর, খেতে দেওয়া হবে শরাব আর পাখির ভুনা গোশত । একেকজনের (পুরুষ) জন্য ৭২টি হুরের ব্যবস্থা আছে, হুরের গালে জান্নাতি ব্যক্তির ছবি দেখা যাবে । আমার প্রশ্ন, কোরআন-হাদিস মতে, এসব বর্ণনা কি ঠিক ?
উত্তর : আপনি যেটা শুনেছেন, হুজুর যে তথ্য দিয়েছেন, সেটি সঠিক । শুধু শেষের অংশটি অর্থাৎ ৭২ ছাড়া । রাসুল (সা.) জান্নাতের যে বর্ণনা দিয়েছেন উনি তাঁর অনুবাদ করেছেন এবং অনুবাদের তথ্যগুলো ঠিক আছে । এটি একটি হাদিসের অনুবাদ তিনি করেছেন । এটি সহিহ হাদিসে প্রমাণিত ।
উপাদান সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন সেটা ঠিক, শুধু একটি জায়গায় বাদে । ৭২টি হুরের কথা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়নি । সেখানে বলা হয়েছে দুজন থাকবে, একজন জান্নাতি স্ত্রী থাকবে এবং একজন হুর থেকে তাঁর স্ত্রী থাকবে । এটি হাদিসে বলা হয়েছে । এরা প্রত্যেকে এমন অবস্থায় থাকবে, কেউ কারোও প্রতি দুনিয়ার মতো ঈর্ষান্বিত হবে না । আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তাঁদের অন্তরে যেসব হিংসা, দ্বেষ হবে, তা আমি আগে থেকে উঠিয়ে নিব ।’
এমনকি কোনো কোনো ইমাম বলেন যে, তাঁরা এমনভাবে বসবাস করবে যে, কেউ কারো প্রতি ঈর্ষা তখন থাকবে না । হুরকে সেবিকা বলা যাবে না । হুর সম্মানিত একজন, বলতে পারেন আল্লাহর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত বোনাস । যারা জান্নাতে যাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁদের সম্মানিত করার জন্য এই হুর থাকবে ।
এটাই হচ্ছে মূল কথা । ৭২ বা ৭০ জন নয় । যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হবে, তাঁদের জন্য ৭০ জন হুর দেওয়া হবে । সবার জন্য ৭০ জন হুর শুদ্ধ নয় । এ ছাড়া জান্নাতের যে বর্ণনা দিয়েছেন, সেটি ঠিক আছে ।
জান্নাতের বর্ণনায় আরো এসেছে যে, সব জান্নাত এক রকম হবে না । হাদিসে এসেছে কোনো কোনো জান্নাত হবে পুরোটাই স্বর্ণের এবং আরো দুটি জান্নাত হবে পুরোটাই রৌপ্যের ।
No comments:
Post a Comment