Social Icons

Friday, April 14, 2017

তুরস্কের ঐতিহাসিক গণভোটে অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখি এরদোগান

অনেক সুবিশাল মসজিদের মতোই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইস্তাম্বুলের সর্বোচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান করছেন। তার সমর্থকদের আশা রবিবারের গণভোট হচ্ছে তুরস্কের পুনর্নির্মাণে এরদোগানের কর্মজীবনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত।

এই গণভোটে লক্ষ লক্ষ তার্কি ভোটার সিদ্ধান্ত নিবে তারা সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিবর্তে সর্বময় ক্ষমতা দিয়ে প্রেসিডেন্সি পদ্ধতি প্রতিস্থাপন করবেন কিনা।

প্রায় এক শত বছর আগে অটোমান সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই নির্বাচন দেশটির শাসন পদ্ধতিতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

ন্যাটোর সামরিক জোটের দুটি মুসলিম সদস্যদের একটি হচ্ছে তুরস্ক। এছাড়াও দেশটি বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়াবলির অন্যতম কেন্দ্রস্থল। সাম্প্রতিক সময়ে এসব বিষয় আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হচ্ছে সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, ইউরোপের অভিবাসী সংকট এবং মস্কো ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে আঙ্কারার পরিবর্তিত সম্পর্ক।

গণভোটের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্য দেশটির ৮০ মিলিয়ন জনগণ বিভক্ত হয়ে গেছে। এই বিভাজন ইউরোপে বৃহৎ তুর্কি প্রবাসীদের মধ্যও ছড়িয়ে পরেছে। 

নিরাপত্তার অজুহাতে ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রচারণা নিষিদ্ধ করায় এরদোগান ইউরোপীয় নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি তাদের এই কর্মকে নাৎসিবাদের সঙ্গে তুলনা করেন। 

অন্যদিকে তার বিদেশি বিরোধীরা বলছেন তারা এব্যাপারে সতর্ক পর্যবেক্ষণ করছেন।

এরদোগানের সমর্থকেরা তার এই প্রচেষ্টাকে তুরস্কের পুনর্নির্মাণে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন এরদোগানকে ক্ষমতা দেয়া হলে তিনি জনজীবনে ইসলামি মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনাসহ, ধর্মনিষ্ঠ কর্ম পরিবেশ তৈরি এবং বিমানবন্দর, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি বিষয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হবেন।

অন্যদিকে, বিরোধীরা এটিকে দেখছেন প্রেসিডেন্টের অধীনে কর্তৃত্ববাদ হিসেবে। তাদের ধারণা এরমাধ্যমে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু দেখানো হবে এবং আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠিত ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিকে ধীরে ধীরে দুর্বল ও অকার্যকর করে দেয়া হবে। একই সঙ্গে পশ্চিমা গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার মূল্যবোধ থেকে আরো দূরে সরে যাবে।

এরগিন কুলোস্ক (৬৫) নামে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও ইস্তাম্বুলের মসজিদ সমিতির প্রধান বলেন, ‘গত ১৫ বছরের মধ্যে তিনি (এরদোগান) তুরস্কের জন্য বলতে গেলে প্রায় সব কিছুই অর্জন করেছেন; যা একসময় সবার কাছে অসম্ভব ও অচিন্তনীয় বলে মনে হতো। বৃহৎ সেতু, সমুদ্রতলদেশীয় টানেল, রাস্তা, বিমানবন্দর ইত্যাদি সব কিছুই তিনি নির্মাণ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘তার সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে তিনি মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারেন। আমি তাকে সাম্প্রতিক একটি বিশাল সমাবেশে দেখেছি। তিনি রাজনীতির জন্য এসব করছেন না। এগুলো আসে তার অন্তর থেকে।’

কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী উদারপন্থী, বামপন্থী কুর্দি এবং এমনকি কিছু জাতীয়তাবাদীসহ এরদোগানের বিরোধীরা এটিকে তাদের অস্তিত্বের হুমকি বলে মনে করছেন।

নুরতেন কায়েকান নামে ইজমিরের উপকূলীয় শহর ইজিয়েনের একজন গৃহিনী (৬১) বলেন, ‘তিনি (এরদোগান) প্রজাতন্ত্র এবং আতাতুর্কের উত্তরাধিকার ধ্বংস করতে চাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ ভোট জয়ী হলে আমরা বিশৃঙ্খলার মধ্য পড়ে যাব। তিনি কেবল দেশের অর্ধেক মানুষের প্রেসিডেন্ট হবেন।’

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates