তিন মাস বয়সী ব্রিটিশ শিশুটির নাম হার্ভে কেনিয়ন। লন্ডন থেকে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে আমেরিকার ফ্লোরি়ডা যাচ্ছিল সে। ছুটির রাজ্যে যাওয়া অবশ্য হয়েছে। তবে বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে। কেননা ‘সন্ত্রাসী’ সন্দেহে শিশু হার্ভে ক্যানিয়ন যে কিনা কথাও বলতে পারেনা তাকে জেরার জন্য তলব করেছিল লডনস্থ মার্কিন দূতাবাস।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, ৬২ বছর বয়সী পল ক্যানিয়ন চিন্তা করেছিলেন ছুটি কাটাতে তার পরিবার নিয়ে যাবেন আমেরিকায়। তার সঙ্গে থাকবে স্ত্রী ক্যাথি (৫২), কন্যা ফায়ে (২৭), কন্যার জামাই জন ক্যারিন্স (৩১), তিন বছররের নাতি আভা ও তিনমাস বয়সী নাতি হার্ভে।
আমেরিকায় ঢুকতে হলে ভিসার জন্য ইলেক্ট্রনিক সিস্টেম ফর ট্রাভেল অথরাইজেশন (ইএসটিএ)-এর ফরম পূরণ করতে হয়। তিন মাসের ওই শিশুর হয়ে তার দাদা পল কেনিয়ন ফরমটি পূরণ করেন। ফরমে জানতে চাওয়া হয়, আমেরিকা যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তি কোনও কালে সন্ত্রাসমূলক কাজকর্ম, গুপ্তচরবৃত্তি, নাশকতা এবং গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না? বা এখনও যুক্ত রয়েছেন কি না? হ্যাঁ বা না— এই অপশনে টিক দিতে হত। তা করতে গিয়েই ভুলবশত দাদা নাতির ফরমে হ্যাঁ- তে টিক চিহ্ন দিয়ে দেন।
সেই ফরমটি দূতাবাসের অফিসারদের নজরে পড়তেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হার্ভেকে ডেকে পাঠানো হয়। অবাক হয়ে যায় হার্ভের পরিবার। যে এখনও ঠিকঠাক করে উঠে বসতে পর্যন্ত পারে না, সে সন্ত্রাস-গুপ্তচরবৃত্তি-গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকবে কী করে!
তখনই টনক নড়ে দাদার। বুঝতে পারেন কী ভুলটাই না তিনি করে ফেলেছেন! কিন্তু উপায় নেই দূতাবাসের ডাকে তাই হার্ভেকে নিয়ে চেশায়ারের থেকে ১০ ঘণ্টা যাত্রা করে লন্ডনের মার্কিন দূতাবাসে পৌঁছাতে হয় তাদের। সঙ্গে ছিলেন হার্ভের মা। কিন্তু সশরীরে হাজির হলেও এত সহজে রেহাই মেলেনি হার্ভে এবং তার পরিবারের। সে যে সত্যিই এমন কোনও কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত নয়, তা বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাদের।
হার্ভেকে উদ্দেশ্য করে একটার পর একটা প্রশ্ন ছুড়ছিলেন অফিসারেরা। তাতে অবশ্য পাত্তা দেয়নি হার্ভে। সে নিজের তালেই ছিল। হাত-পা ছুঁড়ে দিব্যি মজে ছিল খেলায়। ঘণ্টাখানেক ‘জেরা’র পর শেষমেশ রেহাই মেলে তার। কিন্তু তত ক্ষণে আমেরিকা যাওয়ার ফ্লাইট ছেড়ে দিয়েছে। অতিরিক্ত ৩০০০ পাউন্ড খরচ করে ফের টিকিট কাটেন ক্যানিয়ন পরিবার।
গোটা ঘটনায় বিরক্ত পল বলেন, ‘কোনও সন্ত্রাসবাদী কি ওই জায়গায় নিজে থেকে হ্যাঁ- তে টিক দেবে? এটা যে নিছকই ভুল তা বোঝা উচিত ছিল।’ মার্কিন দূতাবাসের তরফে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ডেইলি মেইল।


No comments:
Post a Comment