বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তাদের নাম ও ঠিকানার সাথে সাথে ছবি, হাত ও আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করা হবে।
নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মতো শরণার্থী শিবিরের আগে থেকেই অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরও আনা হবে নিবন্ধনের আওতায়। মূলত দেশে অবস্থানরত ৬ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ভোটার হওয়া প্রতিরোধে এ সিদ্ধান্ত।
গত তিন দশকে সীমান্ত অতিক্রম করে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলেও তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই। শুধুমাত্র প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হয়েছিলো। তাদেরকে রাখা হয়েছিলো নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরে।
কিন্তু গত এক দশকে রোহিঙ্গা আসার পরিমাণ বাড়লেও হয়নি কোনো নিবন্ধন। এর মাঝে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা যেমন বাঙালি জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছে। তেমনি জালিয়াতির মাধ্যমে ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে অন্তত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা।
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন প্রতিরোধ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আদিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা নানা উপায়ে আমাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়ে মিশে যাচ্ছে। এদেরকে শনাক্ত করে এক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে।’
গত ২৩শে আগষ্ট থেকে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়া সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে আসে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে। নানা সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত সরকার এসব রোহিঙ্গাকে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কক্সবাজার জেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট একে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমাদের টেকনিক্যাল লোক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসবে। সেসবের মাধ্যমে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নিবন্ধন করা হবে।’
কক্সবাজার উখিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন বলেন, ‘নিবন্ধন অবশ্যই দরকার। আমরা তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানলে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।
প্রাথমিকভাবে টেকনাফ এবং উখিয়াকে ২০টি জোনে ভাগ করে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির পাশাপাশি জনবল দিয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানালেন ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যে কোনো ধরণের সহযোগিতা চাইলে আমরা তা অবশ্যই করবো।’
বর্তমানে ৩৩ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গার জন্য কক্সবাজার জেলার টেকনাফের লেদা এবং উখিয়ার কতুপালংয়ে দু’টি রেজিষ্ট্রার্ড শরণার্থী শিবির রয়েছে। আর আন রেজিষ্ট্রার্ড শরণার্থী শিবির রয়েছে অন্তত ৫টি।
No comments:
Post a Comment