Social Icons

Tuesday, December 22, 2015

হুলু লাঙ্গাতের জলপ্রপাতে

মালয়েশিয়া এসে অনেক জলপ্রপাত দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। পাহাড়ি দেশ বলে প্রায় সবখানেই জলপ্রপাতের দেখা মেলে। জলপ্রপাতে গোসলরত কয়েকজন কুয়ালালামপুরের মূল শহর কেএলসিসি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হুলু লাঙ্গাত এলাকায় একটি জলপ্রপাত আছে। কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম সেখানে। জায়গাটি পুরোপুরি পর্যটনকেন্দ্র। তাই সারা বছরই এখানে পর্যটকদের ভিড় আছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রোববার। সেদিন অনেকেই জলপ্রপাতে শরীর ভেজাতে চলে যান সেখানে। স্থানীয় ভাষায় এই জলপ্রপাত পর্যটনকেন্দ্রের নাম এয়ার তেজুন সুমগাই গাবাই। সেখানে পৌঁছানোর পর মূল গেটের সামনে গাড়ি পার্কিং করতে গিয়ে পড়তে হলো বিপাকে। কারণ আমরা পৌঁছার আগেই অনেক পর্যটক এসে হাজির হয়েছেন। তাঁদের গাড়ি পার্কিংয়ে থাকার কারণে আমরা খালি জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে মূল গেট থেকে অনেকটা দূরে সড়কে গাড়ি পার্কিং করা হলো। জনপ্রতি এক রিঙ্গিত দিয়ে প্রবেশ টিকিট কিনে ভেতরে প্রবেশ করে হাঁটতে শুরু করেছিলাম। রাস্তার পাশ দিয়ে জলপ্রপাতের পানি গড়িয়ে আসার দৃশ্য লক্ষ করলাম। চারদিকটা পাহাড়ে ঘেরা। নানা রকমের শত শত গাছগাছালি। এই জায়গাটিকে জঙ্গলও বলা যায়। এখানকার বাতাস প্রচণ্ড ঠান্ডা। বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসা গুঁড়িগুঁড়ি পানি শরীরকে স্পর্শ করে। সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। একটু সামনে যেতেই একটা আঁকাবাঁকা সিঁড়ি নজরে পড়ল। সিঁড়িটি ওপরের দিকে উঠে গেছে। জলপ্রপাতের মূল দৃশ্য কাছ থেকে দেখতে হলে এই সিঁড়ি বেয়ে ওপরের দিকে উঠতে হবে। হাঁটতে হাঁটতে পথ যেন শেষ হয় না। শুধু ওপরের দিকে উঠেই যাচ্ছি। হাঁপিয়ে একটু দাঁড়ালাম। লক্ষ করেছিলাম, আরও অনেকেই একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁরাও হাঁপিয়ে উঠেছেন। সিঁড়ি বেয়ে ওপরের দিকে ওঠার সময় বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কিছু পর পর কাঠের ঘর বানিয়ে রাখা হয়েছে। কাঠের ঘরগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। বসার জন্য ঘরের ভেতরে চেয়ার-টেবিল রাখা আছে। ঘরের চারদিকটা খোলা। হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে পৌঁছলাম মূল দৃশ্যের কাছে। পাহাড়ের ওপর থেকে জলপ্রপাতের পানি গড়িয়ে পড়ছে। অসংখ্য পর্যটক গোসল করছেন।  আমরাও নেমে পড়লাম গোসল করতে। প্রচণ্ড ঠান্ডা পানি। পানিতে নামার পর সব ক্লান্তি যেন নিমেষেই দূর হয়ে গেল। ভেসে ছিলাম অনেক্ষণ। প্রবাসে ব্যস্ততার জীবনে অশান্ত মনকে শান্ত করলাম। নিজেকে চিন্তামুক্ত মনে হচ্ছিল। গোসল শেষ করে সেই সিঁড়ি বেয়ে নিচের দিকে নামলাম। সিঁড়ি বেয়ে ওপরের দিকে ওঠা কষ্ট, কিন্তু নিচের দিকে নামতে গেলে কোনো কষ্ট হয় না। মূল গেট দিয়ে বাইরে বের হয়ে পাশের একটি খাবার রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসলাম। রেস্তোরাঁর ভেতরে বিশাল বড় অ্যাকুরিয়ামের মধ্যে বন্দী থাকা মাছ থেকে নিজের পছন্দ মতো একটি মাছ বেছে নিলাম। সেই মাছটি রান্না হলো। সি ফুড রেস্তোরাঁগুলোতে অর্ডার করার পর রান্না করা হয়। খাওয়া-দাওয়া সেরে রওনা হলাম শহরের উদ্দেশে। কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates