ওরা মাঝে মাঝেই চকোলেট খাচ্ছিল, সঙ্গে ছিল ব্র্যান্ডেড এনার্জি ড্রিঙ্ক। আবার একে অপরকে আলফা, মেজর এবং কমান্ডার বলে সম্বোধন করছিল।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানাল ভারতের গুরুদাসপুরের পুলিশ সুপারের বন্ধু রাজেশ বর্মা।
৩১ ডিসেম্বর রাতে তিনিও পুলিশ সুপারের গাড়িতে ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপারের রাঁধুনিও। তারা একটা ধর্মীয় স্থানে যাচ্ছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন রাজেশই। তিনি জানান, পথে কয়েক জন উর্দিধারী গাড়ি থামিয়ে তাকে অমৃতসর বিমানবন্দরের রাস্তা জানতে চায়। তখনও বুঝে উঠতে পারেননি কী ঘটতে চলেছে।
এর পরই জঙ্গিরা গাড়িসহ তিনজনকে অপহরণ করে। মাঝপথেই জঙ্গিরা তার গলায় ছুরি মারে বলে জনান রাজেশ। মরে গিয়েছে ভেবে তাকে রাস্তায় ফেলেও দেওয়া হয়। তার পর তারা গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়।
যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে রাজেশ আরো বলেন, ‘জঙ্গিরা বার বারই বিমান বাহিনীর বিমানঘাঁটির কথা বলছিল। এত বড় হামলা হতে চলেছে ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া পাইনি।’
পাঠানকোটে হামলার পরেই নিরাপত্তার ফাঁক নিয়ে প্রশ্ন যেমন উঠতে শুরু করেছে, তেমনই রাজেশের তথ্যের সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এনআইএ।
জঙ্গি হামলার তিন দিন পরেও এখনও সেনা অভিযান চলছে পাঠানকোটের বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে। কোনো রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ সেনাকর্তারা। তাই মঙ্গলবারও তল্লাশি অভিযান জারি রাখা হয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর।
তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জঙ্গিরা দুটো দলে ভাগ হয়ে এ দেশে ঢুকেছিল। প্রথম দলে ছিল দু’জন। আর দ্বিতীয় দলে চার জন। প্রথম দলটি নাকি আগে থেকেই এ দেশে ঢুকেছিল।
চার জঙ্গি যখন গুরুদাসপুরের পুলিশ সুপার সলবিন্দর সিংহকে অপহরণ করে, সেই খবরের সত্যতা যাচাই করতে করতে অনেক সময় পার হয়ে যায়। ততক্ষণে দুই জঙ্গি বিমান ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ে। পরে বাকি চার জন ওই দলের সঙ্গে যোগ দেয়। হামলা চালানোর আগে বিমান বাহিনীর ঘাঁটির বড় বড় ঘাসের আড়ালেই লুকিয়ে ছিল ওই জঙ্গিরা।
এখন প্রশ্ন উঠছে ওই জঙ্গিদের ঢোকানোর পিছনে স্থানীয় কি কারও মদত ছিল? এমনকি, এত অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কীভাবে তারা ঢুকল? না কি আগে থেকেই জঙ্গিরা এ দেশে অস্ত্র পাচার করেছিল?
যদি তা হয়ে থাকে, তা হলে ওই এলাকায় অস্ত্রের চোরাকারবার খুব সক্রিয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক সেনা কর্মকর্তার কথায়, ‘কখনওই এক সঙ্গে এত অস্ত্র জঙ্গিদের পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Tuesday, January 5, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment