Social Icons

Wednesday, May 4, 2016

পর্ন ছবির নেশা : বেরিয়ে আসার উপায়

পর্নোগ্রাফির নেশায় কি সত্যিই কেউ পড়েন? এই নেশা কতটা ক্ষতিকর? কী ভাবে বুঝবেন আপনি এই নেশার ফাঁদে পড়েছেন? এই মরণফাঁদ থেকে বাঁচার উপায় কী? সাম্প্রতিক গবেষণায় এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে।
পর্নোগ্রাফির নেশা সর্বনাশা। গবেষণায় জানা গেছে, অশ্লীল ছবি আর ভিডিওর নেশায় আবিষ্ট হয়ে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ডায়াগনিস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্যাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিসঅর্ডার্স (DSM-5)-এ নিয়মিত ও বাধ্যতামূলক যৌনতা বিষয়ক ভিডিয়ো ও ছবি দেখার নেশাকে মনোরোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা না হলেও তার সুদুরপ্রসারী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। গবেষণা বলছে, এই নেশার প্রকোপে শারীরিক, মানসিক, আনুভূতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে অনলাইনে পর্নোগ্রাফি সুলভ হওয়ার কারণে সহজেই তার নেশায় পড়ছে মানুষ। লীলাবতী হাসপাতালের মনোবিদ ডক্টর ভরত শাহের দাবি, 'ল্যাপটপ ও কম্পিউটার বাদ দিলেও এখন পোর-জি ও থ্রি-জি কানেকশনের দৌলতে হাতের মুঠোয় পৌঁছে গিয়েছে পর্নের পসার।'
প্রচলিত বিশ্বাস, শুধুমাত্র পুরুষই পর্নের ভক্ত। কিন্তু 'মুম্বই মিরর' পত্রিকার প্রবন্ধকার ডক্টর মহেন্দ্র ওয়াটসা জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে মেয়েরা পিছিয়ে নেই। তাঁর মতে, 'এর জন্য সহজলভ্যতাই দায়ী।' পর্ন ওয়েবসাইট 'পর্নহাব'-এর এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, পর্ন দেখিয়েদের এক তৃতীয়াংশ নারী। ওই সমীক্ষাতেই জানা গেছে, বিশ্বে পর্ন দর্শনার্থীর সংখ্যার বিচারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
লাল সঙ্কেত:
বয়ঃসন্ধির হরমোন ক্ষরণ হোক বা বয়স্কদের কৌতুহল, জীবনের কোনও এক সময় অধিকাংশ মানুষই পর্ন দেখেন। বিপদের আশঙ্কা তখনই রয়েছে যখন বিক্ষিপ্ত দর্শন রোজকার অভ্যাসে পরিণত হয়। ডক্টর শাহ বলেন, 'যখন দেখবেন চাইলেও পর্ন দেখার অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না, বুঝতে হবে আপনি তার নেশায় পড়েছেন। বিষয়টি ক্ষতিকর জেনেও স্রেফ নেশার কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া উপায় থাকে না।'
পর্নের নেশার ৬ লক্ষণ:
১) সপ্তাহে ১০ ঘণ্টার বেশি পর্ন দেখা।
২) লিঙ্গ উত্থান ও বীর্যপাতের সময় সমস্যা দেখা দেওয়া অথবা স্বাভাবিক যৌন জীবন যাপন ব্যাহত হওয়া।
৩) পর্ন দেখার সময় মেপে সারা দিনের রুটিন তৈরি করা।
৪) বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা অথবা পারিবারিক সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেয়ে পর্ন দেখে বেশি আনন্দ পাওয়া।
৫) ক্লান্তি, বিষন্নতা বা বিরক্তি দূর করতে পর্নকেই একমাত্র বিনোদন হিসেবে বেছে নেওয়া।
৬) পর্ন দেখার জন্য ক্রমাগত নিজেকে দোষারোপ করা।
মানসিক অবসাদ:
বয়ঃসন্ধির সময় বহু ছেলেই পর্ন দেখাকে পৌরুষের নিদর্শন বলে মনে করে। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে পর্নের নেশা পেয়ে বসলে জীবনে তার সুদুরপ্রসারী প্রভাব রয়ে যায়। শারীরিক, মানসিক এমনকি আর্থিক সহ্কটও এর জেরে দেখা দেয়। পর্নে নেসাগ্রস্তদের প্রায়ই অতিরিক্ত শারীরিক ক্লান্তি, মানসিক অবসাদ এবং মনের ওপর অতিরিক্ত চাপের শিকার হতে দেখা গিয়েছে। মনোবিদ ডক্টর পারুল ট্যাঙ্কের ব্যাখ্যা, 'দীর্ঘ সময় ধরে পর্ন দেখার ফলে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন অফ করার পরেও মনের মধ্যে সেই সমস্ত যৌন উত্তেজক দৃশ্য ঘুরতে থাকে। এর ফলে মানসিক পরিশ্রম বাড়ে।'
লিবিডোর দফারফা:
যৌন উত্তেজক ভিডিও দেখা নিয়মিত চর্চায় রূপান্তরিত হলে বাস্তব জীবনে যৌনতার প্রতি আকর্ষণ কমতে বাধ্য। কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের পর্দায় দীর্ঘ সময় পর্ন দেখার ফলে যৌন উত্তেজনার ভাঁড়ার নিঃশেষ হয়ে যায়। বাস্তবে যৌনসঙ্গীর সাহচর্য তাই কামোত্তেজনা বাড়াতে ব্যর্থ হয়। এর জেরে বহু সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে। এইসময়
ক্ষতিগ্রস্ত কর্মজীবন:
যে কোনও নেশার মতোই পর্নের পিছনে ছোটার ফলে যাবতীয় এনার্জির ভাঁড়ারে টান ধরে। স্রেফ পর্ন দেখার তাগিদে অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণে হামেশা অফিস কামাইয়ের বেশ কিছু দৃষ্টান্ত সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates