Social Icons

Thursday, October 20, 2016

মিরাজের রাজকীয় অভিষেকে কোণঠাসা ইংল্যান্ড

রাজকীয় অভিষেক ঘটলো অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনই বল হাতে ৬৪ রানে ৫ উইকেট নিলেন মিরাজ। তার ঘূর্ণিতে পড়ে প্রথম দিনেই ব্যাকফুটে ইংল্যান্ড। দিন শেষে ৭ উইকেটে ২৫৮ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে ইংলিশরা। 
 
ক্যারিয়ারে প্রথম আন্তর্জাতিক ও প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে ৩৩ ওভারে ৬ মেডেনে ৬৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী মিরাজ। তাই দিন শেষে আলোকিত মিরাজ নিজের এমন উজ্জ্বল পারফরমেন্সে বেশ খুশী, ‘সত্যিই আমি খুব খুশী। এটি আমার প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। এমন পারফরমেন্সের কারণে আমি অনেক বেশি খুশী। আমি চেষ্টা করেছি ভালো বল করার। তাই উইকেট পেয়েছি। উইকেট বেশ ভালো। উইকেটে স্পিন আছে। আশা করি আগামীকালও ভালো পারফরমেন্স করবো।’
 
 
চট্টগ্রাম টেস্টে আর টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুশফিকুর বল তুলে দেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা মিরাজের হাতে। শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার কুক ও বেন ডাকেটকে অসহায় করে ফেলেন মিরাজ। তার ঘূর্ণি বুঝে উঠার কোন উপায়ই পাচ্ছিলেন তারা। তাই বাধ্য হয়েই ১০ম ওভারে গিয়ে হার মানেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ডাকেট। মিরাজের অফ-স্পিনের ঘূর্ণিতে নিজের স্ট্যাম্প হারান ডাকেট। তাই ১৪ রানেই থেমে যেতে হয় তাকে। 
 
মিরাজ একপ্রান্ত দিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখলেও, অন্যপ্রান্তে ব্যর্থ ছিলেন দুই পেসার শফিউল ইসলাম ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা কামরুল ইসলাম রাব্বি। তাই বাধ্য হয়েই ইনিংসের ১১তম ওভারে সাকিবকে আক্রমণে নিয়ে আসেন মুশফিকুর। আক্রমণে এসেই নিজের দ্বিতীয় বলেই ইংল্যান্ড দলপতি কুককে বোল্ড করেন সাকিব। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডের দিন ৪ রানে ফিরেন কুক। ১৮ রানে মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় ইংল্যান্ড।
 
 
সেই চাপ আরও বাড়ে পরের ওভারে। ১২তম ওভারে মিরাজের শেষ বলটি ব্যাকফুটে গিয়ে খেলেছিলেন চার নম্বরে নামা গ্যারি ব্যালেন্স। কিন্তু ব্যাট ছোঁয়ার আগে বলটি সামান্য স্পর্শ পায় ব্যালেন্সের প্যাডে (অবশ্য সেটি তখন বুঝা যায়নি, পরে টিভি রিপ্লেতে বুঝা যায়)। আর তাতেই আবেদন করে বসে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে কারও সাথে আলাপ না করে ডিআরএস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন উইকেটের পেছনে থাকা বাংলাদেশ দলপতি মুশফিকুর। 
 
পরে ডিআরএস-এ দেখা যায় ব্যাটে যাবার আগে ব্যালেন্সের প্যাডে সামান্য স্পর্শ করে বলটি। আর তাই ব্যালেন্সকে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। ফলে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন মিরাজ। অবশ্য উইকেটটি মুশফিকুরের নামে লেখা হলে, এতে কোন ভুল হবে না। কারণ ডিআরএস-এর সিদ্ধান্তটা একাই নিয়ে ছিলেন মুশি। আর সেই সিদ্ধান্তেই সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
 
 লাঞ্চের আগে ৩ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান করা ইংল্যান্ডকে বিপদ ডেকে আনেন মিরাজ । নিজের ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দারুণ খেলতে থাকা রুটকে বিদায় দেন মিরাজ। ৫টি বাউন্ডারিতে ৪৯ বলে ৪০ রান করে ফিরেন রুট। এরপর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ডের মাধ্যমে স্টোকসের ১৮ রানের ইনিংসটি শেষ করে দেন সাকিব। ফলে ৫ উইকেটে ১০৬ রানে পরিণত হয় ইংল্যান্ড। 
 
এখান থেকে ইংল্যান্ডের পালে রানের হাওয়া যুগিয়েছেন মঈন আলী ও উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টো। ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশ বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন মঈন ও বেয়ারস্টো। এসময় তিনবার ডিআরএস-এর মাধ্যমে বেঁচে যান মঈন। আর স্লিপে একবার ক্যাচ দিয়ে রক্ষা পান বেয়ারস্টো। ফলে এই জুটির কাছ থেকে দল পায় ৮৮ রান। এতে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। 
 
কিন্তু ইংল্যান্ডকে সেই সুযোগটি দেননি মিরাজ। নিজের ২৫তম ওভারের শেষ বলে মঈনকে থামিয়ে দেন তিনি। মিরাজের অফ-ব্রেকটি বুঝতে না পারায় মুশফিকুরের হাতে ক্যাচ দেন মঈন। টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৬৮ রানে থামেন মঈন। তার ১৭০ বলের ইনিংসে ৮টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। 
 
 
আলীকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে অভিষেকেই পঞ্চম উইকেট শিকারের স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠেন মিরাজ। এমন স্বপ্ন দেখছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুরও। তাই মিরাজকে আক্রমণে রেখেছিলেন মুশি। কিন্তু সেই সাফল্য ধরা দিচ্ছিলো না মিরাজকে। তাই ৭৫তম ওভার শেষে মিরাজকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন টাইগার অধিনায়ক। এসময় তাইজুল-সাব্বির-শফিউল-মোমিনুলকে নিয়ে বোলিং করান দলপতি। 
 
কিন্তু মিরাজের উপর থেকে আস্থা হারাননি মুশফিকুর। তাই ৮২তম ওভারে আবারো মিরাজকে আক্রমনে আনেন মুশফিকুর। বল হাতে পেয়েই নিজের স্বপ্ন পূরণ করেন মিরাজ। নিজের ২৯তম ওভারের শেষ বলে বেয়ারস্টোকে থামিয়ে ইনিংসে পঞ্চম শিকার করেন তিনি। অভিষেক ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করে রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম লেখান মিরাজ। বাংলাদেশের সপ্তম বোলার হিসেবে অভিষেকে পাঁচ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখালেন মিরাজ। 
 
 
টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া বেয়ারস্টো ৮টি চারের সহায়তায় ১২৬ বলে ৫২ রান করেন। এরপর দিনের বাকি সময়টুকু বিপদ ছাড়াই পার করেছে ইংল্যান্ড। ক্রিস ওকস ৩৬ ও আদিল রশিদ ৫ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ৬৪ রানে ৫ এবং সাকিব ৪৬ রানে ২ উইকেট নেন। বাসস।
 

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates