উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ মেশিনে রিডেবল স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে আজ।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকার উত্তরা ও রমনা থানায় এবং কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়াতে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
এরআগে নিজের স্মার্টকার্ড নিয়ে রবিবার স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড (উত্তরা) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে (রমনা এলাকা) স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। উত্তরায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে ৩ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। দক্ষিণ সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর, ২০ নম্বরে ১৩ থেকে ২০ অক্টোবর এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কার্ড বিতরণ করা হবে।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ কার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে আজ।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে এই স্মার্ট কার্ড দেবে। পর্যায়ক্রমে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।
বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। আট বছর আগে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ নাগরিকের মধ্যে প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু অসাধু লোক ওই পরিচয়পত্র নকল করেছিলো। মেশিন রিডেবল স্মার্টকার্ড এ ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধ করবে। স্মার্টকার্ডের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ২৫টি আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন এবং মান নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভুয়া পরিচয়পত্র প্রতিরোধে কার্যকরি স্মার্টকার্ড। এই স্মার্টকার্ড ব্যবহারে চাকরির আবেদন, ভোটার শনাক্তকরণ, ব্যাংক হিসাব খোলা, পাসপোর্ট তৈরি, ই-গভর্নেন্স, ই-পাসপোর্ট সেবাসহ ২৫ ধরনের সেবা গ্রহণ করা যাবে। এর বিশেষত্ব হলো, স্মার্টকার্ডটি অনলাইনে ও অফলাইনে দু’ভাবেই ভেরিফিকেশন করা যাবে। এতে নাগরিকের সব তথ্য সংবলিত মাইক্রোচিপস থাকবে। বিতরণ প্রস্তুতি শেষ করতে পারেনি ইসি !
এদিকে, ঢাকার দুই থানায় কার্ড বিতরণের প্রস্তুতি শেষ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশনের অধীনস্থ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ। জানা গেছে, আগামীকাল উত্তরার ১ নম্বর ওয়ার্ড ও রমনার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কার্ড বিতরণ করা হবে। উত্তরার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৬৩ হাজার ভোটার রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত কার্ড পৌঁছেছে ৫৭ হাজার। এখনো ৬ হাজার কার্ড পৌঁছেনি। এছাড়া কার্ড বিতরণের কার্যক্রমে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এ কারণে প্রস্তুতিমূলক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রাপ্তি রশিদের কপি পাননি এ দুই থানার নির্বাচন কর্মকর্তারা। প্রতি টিমে ৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও ২ জন সহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টিম লিডার নিয়োগ দেয়া হয়নি। এর আগে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে প্রতিটি টিমে একজন লিডার ছিলেন। এছাড়া ডাটা এন্ট্রি এবং আঙুলের ছাপ নেওয়ার জন্য সরবরাহ করা ল্যাপটপের মানও ভাল নয় বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
যেভাবে পাওয়া যাবে স্মার্টকার্ড
জাতীয় পরিচয়পত্রধারী ভোটারদের স্মার্টকার্ড নেয়ার জন্য নতুন করে আঙুলের ছাপ দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের মত কেবল বৃদ্ধাঙুল বা শাহাদাত আঙুলের ছাপই যথেষ্ট নয়, লাগবে দুইহাতের ১০ আঙুলের ছাপ। এছাড়া আইরিশ বা চক্ষুর কনীনিকার ছবিও দিতে হবে। বর্তমান লেমিনেটিং করা কার্ডটি জমা দিতে হবে। কার্ডটি ১০ বছরের জন্য তৈরি হচ্ছে। প্রতি স্মার্টকার্ড তৈরিতে কমিশনের ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ ডলার। তবে এটি বিনামূল্যে নাগরিকদের দেয়া হবে। এরপর নবায়ন, হারানো কার্ড উত্তোলন বা সংশোধনের জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে।
No comments:
Post a Comment