চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় আদিবাসী বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে একের পর এক সংঘর্ষে মিয়ানমারের কয়েক ডজন সেনা নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব সংঘর্ষের কারণে কয়েক দশক ধরে চলা আদিবাসী বিরোধের অবসান ঘটাবেন বলে মিয়ানমারের নেত্রী অংসান সুচি যে প্রধান লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন তা হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে সাম্প্রতিক এসব সংঘর্ষ থেকে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে চীনে আশ্রয় নেয়ার ঘটনায় বিদ্রোহী এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে চীন সংলগ্ন মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে বিদ্রোহী আদিবাসী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) যোদ্ধদের সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৪৮ বার সংঘর্ষ হয়।
এ সব সংঘর্ষে মিয়ানমারের কয়েক ডজন সেনা নিহত হয়।তবে মোট কতজন সেনা নিহত হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি।
রাষ্ট্রীয় দৈনিকটিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ৬ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত এক সপ্তাহ ধরে সরকারি বাহিনী একাধিক অভিযান চালিয়েছে।
গত ৬ মার্চ এমএনডিএএ সদস্যরা উত্তরাঞ্চলীয় কোকাং প্রদেশের রাজধানী লাউক্কাইতে হামলা চালায়। এরপর গত সপ্তাহে মিয়ানমার সরকার জানায়, লাউক্কাইতে ট্রাফিক পুলিশের পাঁচ সদস্য এবং পাঁচ বাসিন্দা নিহত হয়েছে এবং ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানায়, ৬ মার্চ লাউক্কাইয়ের একটি হোটেলের ২৭০ কর্মীকে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী চীনা শহর নানসানে সামরিক প্রশিক্ষণ জন্য নিয়ে যায় এমএনডিএএ।
তবে রোববার বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির ওয়েবসাইটে এক জরুরি বার্তায় বলা হয়, হোটেলের সদস্যরা স্বেচ্ছায় স্বতস্ফূর্তভাবে যেতে চাইলে তাদের নিরাপদ পাহারা দিয়ে নানসানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোকাং প্রদেশে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় বাহিনী যুদ্ধ শুরু করেছে বলেও দাবি করে বিদ্রোহীরা।
এমএনডিএএ হলো মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় বিদ্রোহী জোটের সদস্য। এ জোটে আরও রয়েছে দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং অন্য দুটি ছোট গোষ্ঠী।
কোকাং এলাকায় ২০১৫ সাল থেকে এ জোটের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। এতে বহু মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষকালে পাঁচজন চীনা নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা বেইজিংকে ক্রুদ্ধ করেছে।
No comments:
Post a Comment