Social Icons

Sunday, September 10, 2017

১২ বছরের রোহিঙ্গা জসিমের বিশ্বের কাছে বার্তা


সহিংসতার মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ১২ বছরের রোহিঙ্গা শিশু জসিম। এখন সে কক্সবাজারের উখিয়ার একটি শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। ১৩ দিনে ধরে উঁচু পাহাড় ও নদী ডিঙিয়ে কীভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে, সেই বর্ণনাই কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদককে জানিয়েছে জসিম। বিশ্বের কাছে নিজের কথা জানিয়েছে ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চাওয়া জসিম।
আল-জাজিরাকে রোহিঙ্গা জসিম বলে, ‘আমার নাম জসিম, বয়স ১২ বছর। এ সমস্যা শুরু হওয়ার আগে আমি স্কুলে পড়তাম। আমার প্রিয় বিষয় ছিল ইংরেজি। কারণ, আমি মনে করি, যদি ইংরেজিতে কথা বলতে পারি, তবে বিশ্বজুড়ে নানান মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব। আমি তাদের কাছে আমার মতামত প্রকাশ করতে পারব। আমি আশা করছি, আমি শিগগিরই আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারব। কারণ, আমি ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চাই।’
জসিম বলে, ‘আমাদের গ্রামে একদিন সেনাবাহিনী এসেছিল। আমরা তখন পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে ছিলাম। ওই দিন আমি অনেক সেনা দেখেছি। সংখ্যায় তা হয়তো ১০০ বা ২০০-এর মতো হবে। তারা আমাদের অনেককে গুলি করেছিল এবং আমাদের বাড়িগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি সেদিন খুবই ভয় পেয়েছিলাম। আমরা একটি জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে ছিলাম। পরে বাংলাদেশের উদ্দেশে হাঁটা শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে ১৩ দিন লেগে যায়। অনেক সময় আমরা জঙ্গলে থামতাম এবং সেখানেই আশ্রয় নিতাম।’
১২ বছরের জসিম বলে, ‘বাংলাদেশের যাওয়ার যাত্রাপথটি ছিল বেশ কঠিন। যাত্রাপথে আমাদের বড় বড় পাহাড় এবং কিছু ছোট নদী অতিক্রম করতে হয়েছে। আমরা যখন হাঁটছিলাম, তখন সব সময় ভয় করত যে এই বুঝি সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের ঘিরে ফেলবে। বাংলাদেশে ঢোকার আগে আমরা সব সময় সতর্ক ছিলাম। কারণ, সেনাবাহিনী ভূমিতে ছোট্ট বোমা পুঁতে রেখেছে; আমরা যদি এটির ওপর দিয়ে হেঁটে যাই, তাহলে বিস্ফোরিত হবে।’
গ্রামের ভিটেমাটি নিয়ে উদ্বিগ্ন জসিম বলে, ‘আমাদের নিজেদের গ্রাম নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। কারণ, এখন আর গ্রাম নেই। আমরা সেখান থেকে সঙ্গে কোনো কিছুই আনতে পারিনি, সব হারিয়ে গেছে। আমি মায়ের সঙ্গে এসেছি; তবে বাবা এখনো রাখাইনে আছেন। বাবা আমাদের নিজের জীবন বাঁচাতে বলেছেন। পরে তিনি আমাদের কাছে চলে আসবেন। কিন্তু আমরা জানি না তিনি এখন কোথায় আছেন। আমরা তাঁর কোনো খবর পাইনি।’
জসিম বলে, ‘বাবাকে নিয়ে আমি চিন্তিত; যদি সেনাবাহিনী তাঁকে খুঁজে পায় বা ছোট্ট বোমায় উড়ে যায়। আমি আনন্দিত যে আমরা নিরাপদে আছি। কিন্তু এখানে থাকা কঠিন। কারণ, এখানে বসবাসের জন্য কোনো বাড়িঘর নেই। ভেজা স্যাঁতসেঁতে মাটিতে আমাদের ঘুমাতে হবে।’
বিশ্বের কাছে নিজের বার্তাও দিয়েছে জসিম। তার বার্তাটি হচ্ছে, ‘আমরা মিয়ানমারের নাগরিক। যদি তারা আমাদের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা দেয়, আমরা অনেক খুশি হব। আমরা এটাই চাই।’

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates