Social Icons

Sunday, September 10, 2017

৪৮ ঘণ্টায় ভয়াবহ আক্রমণ, শেষ ৯৯টি ট্যাঙ্ক

সফল হচ্ছিল না ‘নাগ’। বিশাল মরুপ্রান্তর দিয়ে যদি হানা দেয় শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, তা হলে রুখে দেবে নাগ-ই। আশা ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর। কিন্তু দিনের বেলায় মরুভূমির ভীষণ তাপমাত্রা ধাঁধা লাগিয়ে দিচ্ছিল চোখে। ছোবল মারতে পারছিল না নাগ। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও অবশ্য হাল ছাড়েনি।
আরও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তির জন্য অত্যাধুনিক ‘চোখ’ দেওয়া হল নাগকে। তার পরই পরীক্ষামূলক প্রয়োগে বিধ্বংসী আঘাত হেনেছে নাগের নতুন সংস্করণ ‘প্রসপিনা’। থর মরুভূমির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থানরত পাক ট্যাঙ্ক বাহিনীর রক্তচাপ আরও বাড়াবে নাগের এই সাফল্য, বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
২০১৫ সালেই ভারতীয় বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল নাগ ক্ষেপণাস্ত্র। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) নাগকে ভূমি এবং আকাশ, দুই জায়গা থেকেই ছোড়া যায়। প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্কই মূলত এই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য। লঞ্চিং প্যাড থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা ট্যাঙ্ককেও নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নাগ।
কিন্তু রাজস্থানের মরুভূমিতে ঠিক মতো কাজ করতে পারছিল না এই ক্ষেপণাস্ত্র। দিনের বেলায় মরুভূমি এত গরম থাকে যে, ক্ষেপণাস্ত্রের টার্গেট অর্থাৎ লক্ষ্যবস্তুর তাপমাত্রা এবং মরুভূমির বালির তাপমাত্রা প্রায় সমান হয়ে যায়। ফলে নাগ ক্ষেপণাস্ত্রের ইমেজিং ইনফ্রারেড সিকার লক্ষ্যবস্তুকে ঠিক মতো চিনতেই পারছিল না। রাতের পরীক্ষায় নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি। কিন্তু দিনের বেলায় ব্যর্থ হচ্ছিল।
সেই কারণেই নাগ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তি আরও অত্যাধুনিক করার কাজে হাত দেয় ডিআরডিও। আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক ইনফ্রারেড সিকার লাগানো হয় নাগে। এই নতুন সংস্করণের নাম দেওয়া হয় ‘প্রসপিনা’। গত বছরই প্রসপিনার নৈশ পরীক্ষা হয়েছিল। সফল হয়েছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি।
এ বছরের জুনে রাজস্থানের মরু অঞ্চলে চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে দিনের বেলাই পরীক্ষামূলক ভাবে ছোড়া হয় নাগ। সে পরীক্ষায় প্রসপিনা নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে। ডিআরডিও সূত্রের খবর, এই ভয়ঙ্কর ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রকে বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলি যুদ্ধে লড়তে হয়েছে ভারতকে, সেগুলির মধ্যে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধেই সবচেয়ে বড় ট্যাঙ্ক হানার সম্মুখীন হয়েছিল ভারতীয় বাহিনী।
ভারতের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানি ট্যাঙ্ক বাহিনী। প্রাথমিক ভাবে পাকিস্তান কিছু সাফল্য পেয়েছিল, সীমান্ত থেকে পাঁচ কিলোমিটার ভিতরের শহর ক্ষেমকরণ পর্যন্ত কব্জা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ভারতীয় বাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণে পাকিস্তানের ৯৯টি ট্যাঙ্ক শেষ হয়ে যায়।
অন্যান্য সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি মিলিয়ে ভারতের হাতে সে বার পাকিস্তান ১৬৫টি ট্যাঙ্ক হারিয়েছিল। মোড় ঘুরে গিয়েছিল যুদ্ধের। বিধ্বস্ত হয়ে পালাতে হয়েছিল পাক বাহিনীকে।
পাকিস্তানের সঙ্গে যদি সঙ্ঘাত হয়, তা হলে পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে, বিশেষ করে রাজস্থানের বিরাট মরু অঞ্চল দিয়ে বড়সড় ট্যাঙ্ক হানার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তাই ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজস্থানের মরুভূমিতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সময় নাগ ক্ষেপণাস্ত্র যখন ব্যর্থ হয়েছিল, তখন পাকিস্তানের বাহিনী স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়েছিল। কিন্তু আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবাদে নাগ থেকে প্রসপিনা হয়ে উঠে ভারতের এটিজিএম যে ভাবে বিধ্বংসী আঘাত হানতে শুরু করেছে, তাতে পাকিস্তানের স্বস্তি উধাও হতে বাধ্য।

-আনন্দবাজার

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates