Social Icons

Thursday, September 14, 2017

যুক্তরাস্ট্রের বাজারে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশির তৈরি পোশাক

এককভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে ৪২ কোটি মার্কিন ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় হিসাব করলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৬০ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশটিতে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি ছিল ছয় শতাংশের বেশি। আর গত অর্থবছর দেশটিতে রপ্তানি না বেড়ে বরং কমেছে প্রায় সাড়ে সাত শতাংশ। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে দেশটিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫২০ কোটি ডলারের।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, ইউরোপের বাজারে পোশাকের চাহিদা কিছুটা উঠানামা করলেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের আমদানি কমেনি, বরং বেড়েছে। অথচ আমাদের রপ্তানি কমে গেছে প্রায় সাড়ে সাত শতাংশ। একই সময়ে দেশটিতে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর রপ্তানি কমেনি। এর অর্থ হলো, আমরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছি। আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে আসার কথা এতদিন ধরে বলে আসলেও সমালোচকরা বিশ্বাস করতে চান নি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে প্রতিযোগী দেশ বিশেষত, ভিয়েতনাম, চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কার অবস্থা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের মত এত খারাপ নয়। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও টাকার বিপরীতে ডলার দুর্বল হওয়া এর পেছনে অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর আমদানি হওয়া তৈরি পোশাকের ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ যোগান দিয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে সেটি কমে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ও ভারতের বাজার হিস্যা বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৪ হাজার ৪৯৭ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করে। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কম। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির হালনাগাদ এসব তথ্য জানা গেছে। রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পোশাকশিল্প ব্যবসায়ী এম. এ বাসার  বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি উত্থান-পতনের মধ্যে আছে সত্য। তবে বড় ধরনের পতন হবে না বলেই আমার মনে হচ্ছে। আশা করছি, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।’ তাছাড়া তিনি ভয়েস বাংলাকে আরো বলেন, ‘বর্তমানে দুটি কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। চট্টগ্রাম বন্দরের জটিলতার কারণে লিড টাইম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া পোশাক খাত নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে অনেক ক্রেতা বাংলাদেশ বিমুখ হচ্ছেন। যেমন কিছু শ্রমিক সংগঠন ও এনজিওর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে “শ্রমিক অধিকার নাই” বলে অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় আমাদের। এসব এড়াতে বেশি দাম দিয়ে হলেও অন্য দেশে ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন দেশটির ক্রেতারা।’ অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীন। গত জানুয়ারি-জুলাই সময়কালে দেশটিতে ১ হাজার ৪৩১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে চীন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই রপ্তানি ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। এই বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম ৬৫২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানির ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভিয়েতনাম থেকে গিয়েছিল। গেল সাত মাসে সেটি বেড়ে ১৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত।
যুক্তরাষ্ট্রে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ভারত ২৩২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। গত বছর ভারতের বাজার হিস্যা ছিল ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত সাত মাসে সেটি বেড়ে ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ার এই প্রবণতা থেকে বোঝা যায়, আমদানিকারকরা যে বাজার থেকে কিনলে তাদের পোষাবে বা লাভ হবে, সেখানেই যাবে আর সামগ্রিক পরিবেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য তাদেরকে কীভাবে এখানে আসার সুযোগ করে দেওয়া যায়, সে চেষ্টাও করতে হবে।’

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates