Social Icons

Friday, September 8, 2017

স্ত্রী নিজ ইচ্ছায় তালাক দিলে কি দেন মোহরের টাকা পাবে ?


আমার এক ছোট ভাই ভালোবেসে একরকম পরিবারের সবাইকে জোর করে রাজী করিয়ে বিয়ে করেছিল। বিয়ে করার সময় তার কোন চাকরী ছিলনা। একথা মেয়ে জেনেও তাকে বিয়ে করেছিল। কারন মেয়েটি নার্সিং জব করে। আর মেয়েটি তখন বলেছিল সে চাকরি করেই সংসার চালাবে। কোন সমস্যা হবে না। তবে ছেলেটি একটি চাকরি জোগাড় করেছিল এবং আবার সেটা গত দেড় বছর আগে চলে যায়। এরপর অনেক ঘোরাঘুরি করে আবার এখন চাকরি করছে। কিন্তু গত প্রায় ২ বছর যাবত মেয়েটি ছেলেটি হতে একটু দুরত্ব নিয়ে চলছিল। এবং পরে জানা যায় মেয়েটি অন্য একটি ছেলের সাথে প্রেম করছে। এখানে উল্লেখ্য যে তাদের বর্তমানে ৪-৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে জেনেও ছেলেটি মেয়েটিকে নিয়েই ঘর করতে চায় শুধু সন্তানের কথা ভেবে। কিন্তু এখন শুনছি মেয়েটি তাকে ডিভোর্স দিবে। এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন মেয়েটির সাথে তার মা ও ভাই একই বাসায় থাকত বা এখনও আছে। তারা প্রায়ই মেয়েটিকে কু-পরামর্শ দিত। আর মেয়ের টাকায় ঐ মা, ভাই ও বোনও অংশ নিয়ে থাকে। আমার প্রশ্ন হলো, যদি মেয়েটি ছেলেটিকে ডিভোর্স দেয় তবে কি ছেলেটিকে মেয়েটির দেন মোহরের টাকা ফেরত দিতে হবে ? তাদের যে একটি ছেলে সন্তান আছে, সে সন্তাটকি আইনগতভাবে কার কাছে থাকবে ? আইন এ বিষয়ে কি বলে ? অনুগ্রহ করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। ধন্যবাদ।codmarrag
উত্তর : ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্য। আমাদের সমাজের অনেক নারীরাই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না যে স্ত্রী নিজ ইচ্ছায় তালাক দিলেও দেনমোহরের টাকা থেকে সে বঞ্চিত হবে না যদি না সে নিজ থেকেই সে অধিকার ছেড়ে দেয়। আর তালাকের পর সন্তান কার কাছে থাকবে এটা নির্ভর করে সন্তানের বয়সের উপরে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন নিচের পোস্টগুলো থেকে। ধন্যবাদ
১/
কোন মেয়ে যদি সেচ্ছায় ডিভোর্স দেয়, তাহলে কি মোহরানার টাকা আবদার করতে পারে?
যদিও বৈবাহিক সম্পর্ক একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিন্তু বাস্তবতার প্রেক্ষিতে তা অনেক সময় ধরে রাখা সম্ভব হয় না। কেবল একজন পুরুষই নয় একজন স্ত্রীও বিভিন্নভাবে তার স্বামীকে ডিভোর্স/তালাক দিতে পারেন। মোহরানার অর্থ একজন স্ত্রীর অধিকার। যেভাবেই তালাক হোক বা যিনিই তালাক দিন না কেন মোহরানার অধিকার খর্ব হবে না। স্বামী কতৃক তালাক দেয়ার ক্ষমতা বলে প্রাপ্ত অধিকারে তালাক দিলে মোহরানার অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কিন্তু স্ত্রী কতৃক প্রদত্ত এক বিশেষ তালাক “মুবারাত” এর মাধ্যমে তালাক দিলে অনেক স্ত্রী মোহরানার দাবী নিজ থেকেই ছেড়ে দেন। সেক্ষেত্রে তিনি পুনরায় মোহরানা দাবী করতে পারবেন না। আর সর্বদা বিবাহ বিচ্ছেদের পর ৬ বছর পর্যন্ত একজন মোহরানা দাবি করতে পারেন। ধন্যবাদ
পরামর্শ দিয়েছেন :
তাহমিনা তমা,শিক্ষানবিশ আইনজীবী
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।
২/
আমি আমার সন্তানকে আমার কাছে রাখতে চাই, এক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি?
বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন সন্তানরা। আপনার সমস্যাটি এমন, এখানে আপনি বা আপনার স্বামী যারই জয় হোক না কেন ক্ষতি আপনার সন্তানের। সন্তানের অভিভাবকত্ব সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন নিন্মরুপ-
কারা সন্তানের অভিভাবক হতে পারেন :
মুসলিম আইনে বাবা হলেন সন্তানের স্বাভাবিক আইনগত অভিভাবক। মুসলিম আইনে মা সন্তানের অভিভাবক হতে পারেন না। তবে মা ৭ বছর বয়স পর্যন্ত পুত্র সন্তানকে ও বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত কন্যা সন্তানকে কাছে রাখতে পারেন। এ অধিকারকে বলে ‘হিজানা’বা জিম্মাদারিত্ব। কিন্তু মা কখনই সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক হতে পারেন না। এখানে একটি ব্যাপার উল্লেখ্য যে, সন্তানরা অন্য নারী আত্মীয়ের যত্নে বড় হয়ে উঠলেও সন্তানের ওপর বাবার সার্বিক তত্ত্বাবধান থেকেই যায়। মা তালাক হওয়ার কারণে সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন না। কিন্তু মা দ্বিতীয় বিবাহ করলে সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অগ্রাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ওই সন্তানের ওপর মায়ের অভিভাবকত্ব যথার্থ বিবেচিত হয় তা হলে আদালত মাকে ওই সন্তানের অভিভাবক নিয়োগ করতে পারেন।
আদালত কেন অভিভাবক নিয়োগ করবেন :
যদি কোনো নাবালকের স্বাভাবিক অভিভাবক থেকে থাকে, তবে আদালতের মাধ্যমে অভিভাবক নিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে স্বাভাবিক অভিভাবক তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বা স্বাভাবিক অভিভাবকের মৃত্যু হলে অভিভাবকত্বের অধিকার নিয়ে মা-বাবা বা দাদা বা নানি-বাবার মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হলে ও সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে একাধিক আবেদনপত্র জমা হলে আদালত সমগ্র পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ শেষে নাবালকের কল্যাণের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত ব্যক্তিকে অভিভাবক নিয়োগ করবে।
গার্ডিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এর ধারা ১৭ (ক)-এর অধীনে নাবালকের অভিভাবক হিসেবে নিয়োগের জন্য পারিবারিক আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন। আদালত এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে অভিভাবকত্ব নির্ধারণ করতে পারে।
ক. নাবালকের কল্যাণ,
খ. নাবালকের বয়স, লিঙ্গ ও ধর্ম,
গ. আবেদনকারী অভিভাবকের চরিত্র ও আর্থিক সক্ষমতা, নাবালকের সঙ্গে তার গোত্র-সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা,
ঘ. বাবা-মা কারো মৃত্যু হয়ে থাকলে মৃতের অন্তিম ইচ্ছা (কার কাছে সন্তান মানুষ হবে সে বিষয়ে),
ঙ. নাবালক বা তার সম্পত্তির সঙ্গে আবেদনকারী অভিভাবকের অতীত বা বর্তমান কোনো সম্পর্ক থেকে থাকলে,
চ. নাবালকের নিজস্ব ইচ্ছা, তার অভিভাবক নির্বাচনের মতো যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা থেকে থাকলে। ধন্যবাদ
লিখেছেন :
অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
৩/
সলিম বিয়ের অন্যতম একটি শর্ত হল দেনমোহর। এটি স্বামীর কাছ স্ত্রীর একটি বিশেষ অধিকার। প্রত্যেক স্ত্রী তাঁর স্বামীর কাছে দেনমোহর প্রাপ্য থাকে। আমাদের সমাজে দেনমোহর নিয়ে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। দেনমোহর নিয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন আইন অনুযায়ী দেনমোহর কত ধার্য করা উচিত? এই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারিয়া বিন্তে আলম প্রিয়.কমকে জানান “সাধারণত বর ও কনের সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী দেনমোহর নির্ধারিত হয়। মুসলিম আইনে কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার কথা উল্লেখ করা নেই”।
দেনমোহর নির্ধারণে বিবেচ্য বিষয়
দেনমোহর নির্ধারণের ক্ষেত্রে পারিবারিক আর্থিক অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা, এবং বাবার পরিবারের অন্যান্য নারী সদস্যের দেনমোহরের পরিমাণ বিবেচনা করা হয়ে থাকে। যদি দেনমোহর নির্ধারণে সমস্যা হয় তবে আদালতের সাহায্য নিতে হবে। আদালতের মাধ্যমে দেনমোহর নির্ধারণ করা যায়।
দেনমোহর ছাড়া কি বিয়ে বৈধ?
মুসলিম আইন অনুসারে একটি বৈধ বিয়ে হতে হলে ৫টি শর্ত পূরণ করতে হয়। দেনমোহর ৫টি শর্তের অন্যতম একটি শর্ত। বিয়ের সময় যদি দেনমোহর নির্ধারিত না হয়ে থাকে, এমন কি স্ত্রী কোন দেনমোহর দাবি করবে না শর্তে বিয়েটি যদি সম্পাদিতও হয়, তবুও স্ত্রীকে দেনমোহর দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্বামী কোন ধরনের শর্ত দেখিয়েই স্ত্রীকে দেনমোহর দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারবে না।
দেনমোহর আদায়ের পদ্ধতি
দেনমোহর আদায়ের প্রসঙ্গে আইনজীবী ফারিয়া বিন্তে আলম প্রিয়.কমকে বলেন- “ইসলামি আইন আনু্যায়ী বিয়ের দিনেই দেনমোহর দিয়ে দিতে হয়। তাছাড়া স্ত্রী চাওয়া মাত্র স্বামী দেনমোহরের টাকা দিতে বাধ্য থাকবে”। এছাড়া দেনমোহর বিবাহবিচ্ছেদ অথবা স্বামীর মৃত্যুর পর পরিশোধ করতে হয়। স্বামী যদি সালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করলেও স্ত্রীকে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। সাধারণত দেনমোহরের কিছু পরিমাণ বিয়ের সময় তাৎক্ষণিক দেনমোহর হিসেবে দেওয়া হয় এবং তা কাবিন নামায় লিখিত থাকে। বাকিটা বিলম্বিত দেনমোহর হিসেবে ধরা হয়।
আইন অনুযায়ী দেনমোহর স্বামীকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। স্ত্রী পারিবারিক আদালতে মামলা করে দেনমোহর আদায় করতে পারবেন। দেনমোহর দাবি করার পর স্বামী ওই দাবি পরিশোধ না করলে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে পৃথক থাকতে পারবেন এবং ওই অবস্থায় স্বামী অবশ্যই তাঁর ভরণপোষণ করতে বাধ্য থাকবেন। দেনমোহর সংক্রান্ত মামলা স্থানীয় সহকারী জজ আদালত যা পারিবারিক আদালত নামে পরিচিত, সেখানে করা যায়।
দেনমোহর নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা
আমাদের সমাজে দেনমোহর নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকে বলে থাকেন স্ত্রী তালাক দিলে দেনমোহর মাফ হয়ে যায়। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। স্বামী বা স্ত্রী যিনিই তালাক দিয়ে থাকুক না কেন, দেনমোহরের টাকা অবশ্যই স্ত্রীকে দিতে হবে। কারণ দেনমোহর স্ত্রীর কাছে স্বামীর ঋণ হিসেবে থাকে। তবে বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনযাপন না হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে দেনমোহরের অর্ধেক পরিশোধ করা যাবে। তবে মৃত্যু বা বিয়ে বিচ্ছেদের পর দেনমোহর অবশ্যই পরিশোধ করতে হয়।

1 comment:

  1. Nariray prithibitake dokhol kore rakhlo,
    Nari nirjaton maney hocche nikristo ekta kaaj.
    Ar Purus nirjaton maney hocche hassokor ekta ghotona.

    ReplyDelete

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates