Social Icons

Monday, February 4, 2019

কলম্বিয়ার ককা উপত্যকায় একটি আখের খেতে ৪ টনের সোনার মুখোশ


কলম্বিয়ার ককা উপত্যকায় একটি আখের খেতে ট্রাক্টর চালাচ্ছিলেন এক কৃষিজীবী। আচমকাই ধাতব এক শব্দ। মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় চার টনের আস্ত সোনার মুখোশ। ফলে প্রকাশ্যে আসে মালাগানা সংস্কৃতির বেশ কিছু অজানা কথা। শুধুমাত্র একটা সোনার মুখোশকে কেন্দ্র করে খুন, লুটপাট- একের পর ঘটনায় এর পর সরগরম হয়ে ওঠে ওই এলাকা।
কলম্বিয়ার ককা উপত্যকায় পাওয়া এই সোনার মুখোশ প্রথম লুকিয়ে রেখেছিলেন ওই কৃষিজীবী। কিন্তু এই খবর চাপা থাকেনি। প্রায় ৫০০ বর্গমিটার বিস্তৃত ছিল এই চাষের জমি, যা পরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের তকমা পায়।
এই মুখোশের জন্য খুনোখুনিও হয়। ১৯৯২ সালে ওই একই এলাকা থেকে মালাগানা সংস্কৃতির বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধার হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটা সোনার চিমটে, যা ভ্রূ ঠিক করতে ব্যবহার করতেন প্রাচীনকালের অভিজাত ব্যক্তিরা। প্রত্নস্থল থেকে সোনা লুটের সময়ই ১৯৯৩ সালে এক ব্যক্তি এখানে খুন হন।
চার টনের মুখোশ মেলায় শত শত সমাধি ধ্বংস করা হয় এরপর। আরও বেশি সোনা খুঁজে পাওয়ার লোভে লুট হতেই থাকে। ধীরে ধীরে প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে ওই সংস্কৃতির নানা অজানা তথ্য সামনে আসে। স্থানীয় লুটেরাদের হাত থেকে ওই স্থানটি রক্ষা করতে সচেষ্ট হন তারা।
বহু গবেষণার পর সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ৩০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৩০০ খ্রিস্টাব্দ অর্থাৎ প্রায় ৬০০ বছর পর্যন্ত স্থায়িত্ব ছিল এখানকার সভ্যতার। এই সংস্কৃতিকে বলা হত কালিমা সংস্কৃতি। মাটির নীচে সন্ধান মিলেছিল এই সভ্যতারই নানা সামগ্রীর।
ইয়ামাস, ইয়োতোকো, সোনসো ও মালাগানা এই চার ভাগে বিভক্ত ছিল এই সংস্কৃতি। প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী থেকে সেই চার রকম সংস্কৃতিরও আভাস মিলেছে। তার মধ্যেই সবচেয়ে নজরকাড়া ছিল সোনার মুখোশটি।
সোনার বিভিন্ন সামগ্রী ছাড়াও রহস্যময় সমাধি ও সেরামিকের মডেলও পাওয়া গিয়েছে বেশ কয়েকটি। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার মুসেও দেল ওরো অর্থাৎ সোনার সংগ্রহশালায় রাখা রয়েছে এই প্রত্নসামগ্রীগুলি। প্রায় ১৫০টি মুখোশ ও গয়না মিলেছিল এই খননের ফলে। তত্কালীন প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের মু্দ্রাও মিলেছিল।
ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর সমাধিস্থ করার সময় এই মারাত্মক বড় মুখোশ পরানো হত সেই সময়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের। এদের মধ্যে পুরোহিত ও অভিজাত ব্যক্তিরাও ছিলেন। কেউ কেউ এমনিও এই ধরনের মুখোশ ব্যবহার করতেন, এমনটাও বলেছেন কয়েক জন ইতিহাসবিদ।
২০১২ সাল পর্যন্ত এই স্থানে কড়া পাহারা থাকলেও লুঠের চেষ্টা হয়েছে বার বার। শুধু কৃষিকাজ নয়, নগরায়নের ফলে এই সংস্কৃতির বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানও ধ্বংস হয়েছে আগেই।
স্থানীয়দের মধ্যে এই প্রত্নস্থল নিয়ে উৎসাহ রয়েছে এখনও। তারাই চেষ্টা করছেন এই সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার। সম্প্রতি একটি প্রদর্শনীও করার কথা চলছে এই সোনার মুখোশসহ অন্যান্য সামগ্রীগুলি নিয়ে। প্রাচীন আমলের ওই সোনার মুখোশের অমূল্য বলেই দাবি করেছেন ইতিহাসবিদরা।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates