রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে দুই শিশু সন্তান হত্যার ঘটনায় তাদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে জেসমিনকে রামপুরা থানা থেকে সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার পরিদর্শক মুস্তাফিজুর রহমান।
শুনানি শেষে আদালত জেসমিনকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিশু সন্তান নুসরাত আমান অরনী (১২) ও আলভী আমানকে (৬) হত্যার ঘটনায় তার বাবা আমানুল্লাহ রামপুরা থানায় মামলা করেন। এতে স্ত্রী জেসমিনকে আসামি করেন তিনি।
মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন মামলার বিষয়ে যুগান্তরকে জানান, পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে জেসমিন সন্তানদের হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব দাবি করে, অরনী ও আলভীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তাদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিন।
র্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানসিক অস্থিরতা, সন্তানদের লেখাপড়া ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে জেসমিন এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। হত্যার পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে তিনি চায়নিজ রেস্টুরেন্ট থেকে আনা খাবারের বিষক্রিয়ায় মারা যাওয়ার কথা প্রচার করেন।
জেসমিন একা দুই শিশুকে হত্যার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন মামলার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ।
তিনি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, জেসমিনের একার পক্ষে দুই শিশুকে হত্যা করা কঠিন। ময়নাতদন্তে নাকে-মুখে ও গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে ধরনের আলামত পেয়েছি তার ভিত্তিতে বলা যায়, একজনের পক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো দুষ্কর। বিশেষ করে ১২ বছরের একটি মেয়েকে চেতনানাশক না খাইয়ে অথবা ঘুমন্ত অবস্থায় না থাকলে একজনের পক্ষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা কঠিন।
দুই শিশুর ভিসেরা পরীক্ষার জন্য মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান ডা. সোহেল মাহমুদ।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বনশ্রীর বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়ির ৫/এ ফ্ল্যাট থেকে অচেতন অবস্থায় দুই শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত অরনী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিদ্ধেশ্বরী শাখায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ও ছেলে আলভী বনশ্রীর হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির ছাত্র ছিল।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment