নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণশীল নীতিকে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন, তখন মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে নতুন চুক্তির দ্বারপ্রান্তে জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে এমন আশাবাদের কথা জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ইইউ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাংকার। গত মঙ্গলবার এ খবর দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম বøুমবার্গ। ব্রাসেলসের ওই সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, ‘খুব শিগগিরই’ জাপানের সঙ্গে চার বছরের আলোচনাকে সমাপ্ত করার জন্য ২৮-জাতির ইইউ ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ’। এসময় শিনজো আবে গোটা বিশ্বের কাছে জাপান ও ইইউর ‘মুক্ত বাণিজ্যের পতাকাকে একটি মডেল’ হিসেবে তুলে ধরার আহŸান জানান। ওই সংবাদ সম্মেলনের পরে আবে, টাস্ক ও জাংকার একটি বৈঠকে মিলিত হন। এর আগেই জাংকার বলেন, ‘এ বছরেই’ জাপানের সঙ্গে ইইউ’র চুক্তির বিষয়ে তিনি ‘অত্যন্ত আশাবাদী’। এসব চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে আমাদের আলোচনা এখন সিদ্ধান্তমূলক স্থানে এসে পৌঁছেছে এবং আমরা আশা করছি এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। আমরা যেহেতু মুক্ত, নায্য ও নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যের নীতিতে বিশ্বাসী, তাই এই চুক্তিটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’ চীনের পরেই এশিয়ায় ইইউর দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার জাপান। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রান্স-প্যাসিফিক চুক্তির তালিকাভুক্ত ১২টি দেশের মধ্যে তারাও ছিল। ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তারা মুক্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইইউর সঙ্গে কাজ করার জন্য হাত বাড়িয়েছে। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে আবে বলেন, ‘আমরা নীতিগতভাবে যত দ্রæতসম্ভব একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করব। কারণ এটা বিশ্বের কাছে মুক্ত বাণিজ্যের একটি প্রতীক হিসেবে প্রদর্শিত হবে।’
জাপান ও ইইউর এই বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে ইইউ চাইছে চকলেট, পাস্তা, টমেটো সস, পনিরের মতো ইউরোপীয় সব পণ্যকে শুল্কমুক্ত ঘোষণা করুক জাপান। পাশাপাশি রেল খাতে ক্রয় সম্পর্কিত কাজকে উন্মুক্ত করার দাবিও রয়েছে তাদের। এর বদলে জাপানি গাড়ির ওপর থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইইউ। তাছাড়া জাপানের নির্বাহীরা যেন ইউরোপে সহজেই আসতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করবে ইইউ। জাপানের বাজারে চাল, গরু বা শূকরের গোশতের মতো পণ্যকে ‘ডিউটি-ফ্রি’ করার দাবি থেকেও সরে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ফলে মুক্ত বাণিজ্যের এই চুক্তি উভয় পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে। বিবিসি, রয়টার্স।
Wednesday, March 22, 2017
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment