Social Icons

Thursday, September 7, 2017

সমুদ্রপথে অভিবাসী প্রবেশের সব পথ বন্ধের উদ্যোগ ইতালির


ভূমধ্যসাগরের উপকূল দিয়ে ইতালি প্রবেশের সমস্ত পথ বন্ধ এবং অভিবাসীদের জন্য কঠোর নীতি প্রনয়ণ করতে যাচ্ছে ইতালি সরকার। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া হয়ে অবৈধ পথে যারা ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলো তাদের জন্য এটা একটা বড় ধরনের হুঁশিয়ারি। সম্প্রতি ইতালি ও লিবিয়া সরকার যৌথভাবে অভিবাসন এবং মানবপাচার রোধে বেশ কিছু চুক্তি সই করে। এসময় লিবিয়ার অভ্যন্তরীন মন্ত্রী মার্কো মিনিতি বলেন, শুধুমাত্র উত্তর আফ্রিকা থেকে ২০১৪ সালে ছয় লাখ অভিবাসী ইতালি প্রবেশ করেছে। যাদের অধিকাংশই লিবিয়ার তীরবর্তী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছে ইতালিতে। উন্নত জীবনের আশায় ভয়ংকর এই পথ পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছতে চান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ। এই ভয়ংকর যাত্রায় বুঝে, না বুঝে জড়াচ্ছে হাজার হাজার বাংলাদেশিও।সাগরপথে মানব পাচারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিবিয়ার একটি পাচারকারী চক্র রীতিমতো মৃত্যুযাত্রায় ঠেলে দিচ্ছে এসব বাংলাদেশিদের। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এক
পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ২ হাজার ৮ শ’রও বেশি বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পৌঁছেছেন । তারা ঢাকা থেকে তুরস্ক, জর্ডান, মিশর হয়ে তিউনিশিয়ায় যান। এরপর পৌঁছান লিবিয়ায়। তুষার, পাহাড়, মরুভুমি পাড়ি দিয়ে মাসের পর মাস হেটে, কয়েক সপ্তাহ নৌকায় ভেসে পৌঁছাচ্ছেন ইতালি সীমান্তে। কেউ কেউ বাংলাদেশ থেকে মাল্টা তারপর সেখান থেকে জাহাজে করে যাচ্ছেন ইতালি। এসব সীমান্তে অভিবাসীদের উপর সীমান্তরক্ষীরা লেলিয়ে দেয় হিংস্র কুকুর। চালানো হয় গুলি। কখনো কখনো দেখা যায়- যাত্রা শুরু করেছিলো ২০ জনের একটি দল, পথেই মারা গেছে ১৫ জন। গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে মাত্র ৫ জন। এভাবে দুর্গম পথে ইতালি পৌঁছতে গিয়ে যাত্রা পথে প্রতি বছর শত শত বাংলাদেশি মারা যাচ্ছে বলে বৃটিশ দৈনিক ইনডিপেডেন্ট এ রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে এবছরের ৭ মে।
আই ও এম এর পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, সাগরপথে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাচার হওয়া মানুষের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়ার পরেই অর্থাৎ তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশিরা। এই ভয়ংকর যাত্রায় বাংলাদেশিদের অনেকেই খরচ করছেন ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা । কিন্ত ইতালিতে পৌঁছে তাদের কাজ নেই, থাকার জায়গা নেই। কোথাওবা তাদের আটক করছে পুলিশ। অনেকেই জিম্মি হচ্ছেন মানব পাচারকারীদের হাতে। তারপরেও দলে দলে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা ওই ভয়ংকর যাত্রায়।
লিবিয়া প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার আবুল খায়ের জানান, “সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়াতে লোক আসা নিষিদ্ধ। তবুও কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে দালালদের প্রলোভনে পড়ে বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে লিবিয়াতে ঢুকছে। কিন্তু এখানে আসার পর কাজ না পাওয়া, দেশে টাকা পাঠাতে না পারা, ছিনতাই-কিডন্যাপিংয়ের শিকার হয়ে অনেকেই বড় ক্ষতি নিয়ে আবার দেশে ফেরত যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই বাংলাদেশিদের উচিৎ হবে, লিবিয়ার পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত লিবিয়ার আসার ব্যাপারে আপাতত চেষ্টা না করা।” ইতালিতে কিছু মানুষ ভাল কাজ পেলেও বেশিরভাগই প্রতারণার শিকার। এমনকি সেখানে ন্যুনতম মানবিক অধিকারটুকুও পাচ্ছেনা আটকে পড়া প্রবাসীরা। সর্বস্ব বেঁচে দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো মানুষদের দেশে ফিরে এসে ঘুরে দাঁড়াবার মত পুঁজি বা আশাও প্রায় থাকেনা। লিবিয়ার সাথে এখন ইতালিও অভিবাসীদের জন্য কঠোর আইন প্রণয়নের পর এখন আর কোন বাংলাদেশিই সমুদ্রপথে ইতালি পাড়ি জমাতে উৎসাহী হবে না বলে আশা করেন আবুল খায়ের।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates