বরগুনার আমতলী উপজেলার পাতাকাটা গ্রামের এক অন্তঃসত্তা গৃহবধূকে দুই ব্যক্তি তাদের স্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন। একই সাথে ওই গৃহবধূর পেটে থাকা তিন মাসের বাচ্চাকে দু’ব্যক্তি তাদের নিজ নিজ সন্তান বলে দাবি করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে আমতলী উপজেলার চাওড়া পাতাকাটা গ্রামের ওই নারীর সাথে তার ফুফাতো ভাই বশির প্যাদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালোই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। বশির প্যাদা তার স্ত্রীকে রেখে দিনমজুরের কাজ করতে ঢাকায় যান। এর মধ্যে তাদের সংসারে দুটি সন্তান আসে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে ওই গৃহবধূর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসার জন্য ওই গৃহবধূ উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপাখালী গ্রামের গাজী জামাল উদ্দিনের ছেলে কথিত ফকির জহিরুল গাজীর কাছে যায়। জহিরুল গাজী তাকে ঝাড় ফুক দেয়। এরপর থেকে প্রায়ই ঝাড় ফুকের জন্য ওই গৃহবধূ ওঝা জহিরুলের কাছে যায়। এতে উভয়ের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে ওই গৃহবধূ স্বামী বশির প্যাদাকে গোপনে তালাক দিয়ে কথিত ফকির জহিরুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। ওই গৃহবধূ দ্বিতীয় বিয়ে করলেও প্রথম স্বামী বশিরের ঘর সংসারে থেকে যায়। গত ২৪ আগস্ট তিনি দ্বিতীয় স্বামী জহিরুলের সাথে পালিয়ে যান। ১১ দিন তারা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিল। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিয়ে ঘোপখালী গ্রামের স্থানীয় লোকজন তাদের ধরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে।
প্রথম স্বামী বশির প্যাদা বলেন, গত ১৫ বছর ধরে সে আমার ঘর-সংসার করছে। আমাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। ও আমার স্ত্রী। ওর গর্ভের সন্তানও আমার। আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেয়নি। দ্বিতীয় স্বামী জহিরুল গাজী বলেন, আমি প্রেম করে গত ৬ মাস পূর্বে তাকে বিয়ে করেছি। সে আমার স্ত্রী। ওর গর্ভে আমার সাড়ে তিন মাসের একটি সন্তান রয়েছে। গৃহবধূ বলেন, আমি গোপনে গত বছরের ১ ডিসেম্বর আমার প্রথম স্বামী বশিরকে তালাক দিয়েছি। পরে ৬ মাস পূর্বে জহিরুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। তালাকের পরে প্রথম স্বামী বশিরের ঘর সংসার করলেও দ্বিতীয় স্বামী জহিরুলের সাথে আমার যোগাযোগ ছিল। আমতলী থানার এএসআই সোহাগ মিয়া বলেন, ওই গৃহবধূ প্রথম স্বামী বশির প্যাদাকে ১ ডিসেম্বর গোপনে তালাক দিয়ে ৬ মাস পূর্বে জহিরুল গাজীকে বিয়ে করেছে। কিন্তু ঘর সংসার করেছে বশির প্যাদার। এখন গৃহবধূর গর্ভের সন্তান নিয়ে দু’স্বামীই তাদের নিজ নিজ সন্তান বলে দাবি করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment