প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নারীদের পিরিয়ড হয়ে থাকে। পিরিয়ড তাকে প্রতি মাসে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে ও চলাকালীন নারীদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। পিরিয়ড কমপক্ষে তিন দিন থেকে শুরু করে সাত দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ সময় স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে জানতে চান- পিরিয়ড চলাকালীন শারীরিক সম্পর্ক হলে কোনো সমস্যা হয় কিনা? জেনে রাখা ভালো, পিরিয়ড চলাকালীন শারীরিক সম্পর্ক একবারেই অনুচিত। এই সময়ে শারীরিক সম্পর্ক নারীর জন্য নানাবিধ বিপদ ডেকে আনতে পারে।
পিরিয়ড চলাকালীন শারীরিক সম্পর্কে ইনফেকশন হতে পারে। শরীর থেকে প্রভাবিত রক্ত পেটের অন্য কোনো অংশে ঢুকে যেতে পারে। পেটের অন্য অংশ ঢোকার পর রক্ত জমাট বেঁধে হতে পারে বিপত্তি। এ ছাড়া মাসিকের সময় জরায়ু ও যোনির অম্লভাব থাকে না। তাই এটি খুব সহজেই রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। শারীরিক মিলনের পরবর্তী সময়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। জরায়ুমুখ ঘুরে যেতে পারে, যা পরবর্তী সময় মারাত্মক কুফল বয়ে আনতে পারে।
ইসলামের দৃষ্টিতে পিরিয়ডের সময় যৌনমিলন সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে। এটি অশুচি। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে- হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীগণ থেকে বিরত থাকো এবং যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়, ততক্ষণ তাদের নিকটবর্তী হবে না।
পিরিয়ড কী
প্রতি চন্দ্র মাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে, তাকেই পিরিয়ড বা ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন পেটব্যথা, পিঠব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। পিরিয়ডে ভালো মানের ন্যাপকিন ব্যবহার করা জরুরি। এ ছাড়া কোনোভাবেই একই কাপড় পরিষ্কার করে একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। পিরিয়ডের সময় শরীর থেকে যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া থাকে।
আসুন জেনে নিই পিরিয়ডের সময় শারীরিক সম্পর্ক হলে কি ধরনের বিপত্তি হতে পারে-
ইনফেকশন হতে পারে
মাসিকের সময় জরায়ু ও যোনির অম্লভাব থাকে না। তাই এটি খুব সহজেই রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। পিরিয়ডের সময় শারীরিক সম্পর্ক হলে নারীদের জরায়ুতে ইনফেকশন হতে পারে।
জরায়ুতে প্রচণ্ড ব্যথা
পিরিয়ড চলাকালীন শারীরিক সম্পর্ক হলে পরবর্তী সময় নারীদের জরায়ুতে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। ফলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রক্ত পেটের ভেতর ঢুকে যেতে পারে
পিরিয়ড চলাকালীন শরীরিক সম্পর্ক হলে পিরিয়ডের যে রক্ত শরীরের ভেতর থেকে প্রভাবিত হয়, সেটি অন্য কোনো অংশে ঢুকে জমাট বেঁধে যেতে পারে। এতে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ।
রক্তপাত বেশি হতে পারে
পিরিয়ডের সময় শারীরিক সম্পর্ক হলে রক্তপাত স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে। তাই পিরিয়ড চলাকালীন শরীরিক সম্পর্ক নয়।
চিকিৎসকের পরামর্শ
পিরিয়ড চলাকালীন কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ অনেক নারী আছেন যারা জরায়ু সমস্যায় ভোগেন। তাই প্রত্যেক নারীর উচিত নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
ডা. বেদৌরা শারমিন,গাইনি কনসালট্যান্ট,সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড।