প্রথম দুই উত্তেজনাকর বিতর্কের পর আজ যুক্তরাষ্ট্রের সময় রাত ৯ টায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টায়) তৃতীয় ও শেষ বিতর্কে মুখোমুখি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। লাস ভেগাসের ইউনিভার্সিটি অব নেভাদায় এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। যে কারণে দলের অভ্যন্তরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। শেষ বিতর্কে এ বিষয়টি উত্তেজনা ছড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে নারীদের সম্পর্কে নোংরা মন্তব্যের ভিডিও প্রকাশ ও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কয়েক জন নারীর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পর তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তার স্বামী একজন নিখাদ ‘ভদ্রলোক’ এবং অভিযোগকারী নারীরা মিথ্যা বলছে। অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারির ক্লিনটনের ব্যক্তিগত সার্ভারের কিছু ই-মেইল প্রকাশ করা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর (এফবিআই) মধ্যে মতবিরোধের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এফবিআই’কে হিলারির গোপন ই-মেইল ফাঁস করতে চাপ দিয়েছিলেন। খবর:সিএনএন, বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের।
শেষ বিতর্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে বিতর্ক দেখে অনেক ভোটারই কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্ত নেন। এবারো এর ব্যতিক্রম হবে না। কিন্তু প্রথম দুই বিতর্কে ধরাশায়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম বিতর্কে হারের পর থেকে তার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। শেষ বিতর্কে নিজেকে তুলে ধরার শেষ সুযোগ পাচ্ছেন ট্রাম্প। ইউনিভার্সিটি অব নেভাদার বিতর্কে সঞ্চালক হিসেবে থাকছেন ফক্স নিউজ সানডে’র উপস্থাপক ক্রিস ওয়ালেস। শেষ বিতর্কের ধরণ হবে প্রথম বিতর্কের মতো। যেখানে দুই প্রার্থী বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান ও যুক্তি তুলে ধরবেন।
স্বামীকে ভদ্রলোক বললেন মেলানিয়া ট্রাম্প
মেয়েদের সম্পর্কে নোংরা মন্তব্য আর যৌন হয়রানির অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচনার মুখে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মেলানিয়া ট্রাম্প। তিনি সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তার স্বামী ভদ্রলোক এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী নারীরা মিথ্যা বলছেন। তবে একইসাথে তিনি বলেন, ভিডিওতে তার স্বামী মেয়েদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা ‘অগ্রহণযোগ্য’, কিন্তু যে স্বামীকে তিনি চেনেন এবং জানেন, অল্প কিছু মন্তব্য দিয়ে তাকে বিচার করা যায় না।
তিনি বলেন, আমি আমার স্বামীকে বিশ্বাস করি। সে ভদ্র, দয়ালু এবং মেয়েদের সম্মান করে। কখনই সে এমন কাজ করতে পারে না। অনেক সময় তার সামনেই অনেক নারীকে দেখেছেন তারা যেচে পড়ে তার স্বামীকে তাদের ফোন নন্বর দিচ্ছেন, অশালীন আচরণ করছেন। মেলানিয়া ট্রাম্প মনে করেন, তার স্বামীর প্রচার-প্রচারণাকে ব্যাহত করতেই হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনি টিম ও সংবাদমাধ্যমগুলো পরিকল্পনা করে এসব অভিযোগ তৈরি করছে। এদিকে, শুধু ট্রাম্প নয় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের ও বিতর্কিত বিভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণের ইতিহাস রয়েছে বলে সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে।
হিলারির ই-মেইল প্রকাশে এফবিআইকে চাপ দেওয়া হয়
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, সোমবার প্রকাশিত কিছু নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল নিয়ে তদন্তের সময় কিছু ই-মেইল প্রকাশ করা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও এফবিআই’র মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছিলো। এতে দেখা যায়, পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্যাট্রিক এফ. কেনেডি ২০১২ সালের বেনগাজিতে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনে হামলার বিষয়ে হিলারির কিছু ই-মেইল প্রকাশ করার জন্য এফবিআই’কে চাপ দিয়েছিলেন। তবে এফবিআই ও পররাষ্ট্র দপ্তর এমন ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে। আর দুই পক্ষের আলোচনার বিষয়ে হিলারি জানতেন এমনটাও নথিতে উল্লেখ নেই।
No comments:
Post a Comment