ব্রাজিলের সীমান্ত
পর্তুগিজে স্থানটির নাম ‘মার্কো দাস ত্রেস ফ্রন্টেইরাস’ (Marco das Três Fronteiras), বাংলায় যার অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘তিন সীমান্তের চিহ্ন’। ব্রাজিলের দক্ষিণে ‘পারানা’ (‘টুপি-গুয়ারানি’ ভাষার এ শব্দের অর্থ ‘অফুরন্ত নদী’) প্রদেশের এই স্থানে দাঁড়িয়ে একসাথে আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ের সীমান্ত দেখা যায়। ‘ইগুয়াসু’ ও ‘পারানা’ নদীর এই মিলনস্থলে ব্রাজিলের ‘ফয দো ইগুয়াসু’, আর্জেন্টিনার ‘পুয়ের্তো ইগুয়াসু’ ও প্যারাগুয়ের ‘সিউদাদ ডেল এসতে’ শহর অবস্থিত।
ব্রাজিলের ২৬টি প্রদেশের একটি হলো পারানা। আয়তনে প্রায় দুই লক্ষ বর্গ কিমি (ব্রাজিলের ১৫তম বৃহৎ প্রদেশ) যা পৃথিবীর ১১৫ টি দেশের চেয়েও বড়। তিনটি প্রধান আকর্ষণের জন্য পারানা প্রদেশ বেশ সমাদৃত- পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ ‘ইতাইপু’; দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম জলপ্রপাত ‘ফয দো ইগুয়াসু’, ‘ইগুয়াসু ন্যাশনাল পার্ক’ এবং আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-প্যারাগুয়ের সমসীমান্ত ‘মার্কো দাস ত্রেস ফ্রনতেইরাস’।
প্যারাগুয়ে সীমান্ত
ব্রাজিলিয়ানদের প্যারাগুয়ে ও আর্জেন্টিনায় যেতে ভিসা লাগে না। তাই পারানা প্রদেশের ‘বন্ধুত্ব সেতু’ নামের মাত্র অর্ধ-কিমির ছোট্ট একটি সেতু দিয়ে প্রতিদিনই দু’দেশের (ব্রাজিল-প্যারাগুয়ে) লোকজন যত্রতত্র এদিক-ওদিক যাতায়ত করে। অন্যদিকে, এই প্রদেশেরই ‘ভ্রাতৃত্ব সেতু’ নামক মাত্র ৪৮৯ মিটারের অন্য আরেকটি সেতু দিয়ে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের বাসিন্দারা হরহামেশাই দু’দেশের মধ্যে যাতায়ত করে।
তিন সীমান্তের কাছাকাছি
হেঁটে হেঁটে ছোট্ট ছোট্ট সেতু পার হয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে চলে যাওয়া ব্যাপারটাই দারুণ এক অনুভূতি। আমার কাছে আরও অনেক বেশী, কেননা আমাদের সীমান্ত রাষ্ট্রগুলিতে তো সেই সুযোগটা নেই। আমরা তো আবার খু…উ…ব বেশী…।
ব্রাজিলের এই পারানা প্রদেশেও বেশ কিছু বাংলাদেশী আছে যারা সকালে প্যারাগুয়েতে গিয়ে ব্যবসাপাতি সামলায় আর রাতে ব্রাজিলে ফিরে সংসার। এদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা ৩৫ বছরের বেশী ধরে এখানে বাস করছে। প্যারাগুয়েতে বাংলাদেশেীর সংখ্যা প্রায় ২০০০ যাদের প্রায় সবাই চাইনিজ ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করে, সেখানে তাদের নিজস্ব মসজিদও আছে। আর্জেন্টিনাতেও বাংলাদেশী আছে তবে সে সংখ্যা খুব বেশী নয়। ভাবা যায়, আজ থেকে ২৫-৩৫ বরে পূর্বে বাংলাদেশীরা ব্রাজিল-প্যারাগুয়েতে এসে আস্তানা গড়ে তুলেছিল!! আমরা পারি… আমাদের পারতেই হয়…হবে।
No comments:
Post a Comment