Social Icons

Friday, December 18, 2015

প্রকৃতির বিস্ময় ইগুয়াজু জলপ্রপাত - ব্রাজিল

বহু বছর ধরে পর্যটকদের আকর্শনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ইগুয়াজু জলপ্রপাত (Iguazu Falls)। ইগুয়াজু জলপ্রপাতটি প্রকৃতির এক সত্যিকার বিস্ময় এবং পৃথীবির সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত। অবিশ্বাস্য আকারের কারনে ইগুয়াজু জলপ্রপাতটি ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের চেয়ে ও বিখ্যাত বলে মনে করা হয়। যা আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সীমান্তে জলপ্রপাতটির অবস্থিত। ইগুয়াসু নদী যেখানে পারানা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে, তার ২৪ কিমি. পূর্বে ইগুয়াসু জলপ্রপাত অবস্থিত। এ জলপ্রপাতটির ৮০ শতাংশ অংশ আর্জেন্টিনার এবং বাকি ২০ শতাংশ ব্রাজিলের।
এই মনোরম জলপ্রপাতটি দেখতে বছরে প্রায় ১ মিলিয়ন পর্যটক আর্জেন্টিনায় আসেন। এটি ২৭৫টি আলাদা জলপ্রপাত ও ঝরনার মিলনে তৈরি হয়েছে। জলপ্রপাতটি ৮০ মিটারের মতো উঁচু এবং ২৭০০ মিটার চওড়া। পারানা মালভূমির ঢাল বেয়ে পাহাড়ি ঝরনাধারা নেমে এসে প্রায় ৭৩ মিটার নিচে পতিত হয়। ইগুয়াসু আকারে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের চেয়ে বড়।
 বর্ষাকালে এটির প্রশস্ততা প্রায় ৪ কিলোমিটারে গিয়ে দাঁড়ায়, তবে শুষ্ক মৌসুমে এটি প্রায় ৭৩০ মিটার প্রস্থের দুটি আলাদা জলপ্রপাত হিসেবে পতিত হয়।
১৫৪২ সালে Cabeza Da Vaca নামের একজন ইউরোপীয়ান সব’প্রথম জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন।তিনি Caiagangue এবং Tupi Gurani ইন্ডিয়ানদের দ্বারা পরিবেষ্টিত ঐ এলাকায় একটি অভিযানে ছিলেন। প্যারাগুয়ের একঠি নদীর মূলের সন্ধানে তিনি এই জলপ্রপাতটিকে একটি চমকপ্রদ প্রতিবন্ধতা হিসেবে খুজে পান।তিনি এই জলপ্রপাতটির নাম দেন “সেন্ট মেরীর জলপ্রপাত” কিন্তু জলপ্রপাতটি অবশেষে পুরনো ভারতীয় শব্দ ইগুয়াজু দ্বারাই পরিচিতি পায়।
ইগুয়াজু শব্দটি এসেছে ইন্ডিয়ান Tupi শব্দ থেকে থেকে যার অথ’ পানি।ইগুয়াজো জল প্রপাতকে পতু’গীজ ভাষায় বলা হয় Foz Do Iguagu আর স্প্যানিশ ভাষায় বলা হয় Cataratas Del Iguazu.

 ইগুয়াজু জলপ্রপাতটি সৃষ্টি হয়েছে ইগুয়াজু নদী থেকে। পড়েছে ব্রাজিল ও আজে’ন্টিনার সীমান্তবতী’ এলাকায়।জলপ্রপাতটির সিংহভাগই ব্রাজিলে। নদীর সামান্য অংশ পড়েছে প্যারাগুয়ে সীমান্তে। ইগুয়াজু জলপ্রপাতটির উচ্চতা প্রায় ৬০-৮০ মিটার(২০০-২৬৯ ফুট)।এর দৈঘ’ প্রায় ২.৭ কি মি। এখানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৭৫৬ ঘনমিটার পানি উপর থেকে নিচে পড়ে। বৃষ্টিকালে বিশেষ করে নভেম্বর-মাচে’ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১২৭৫০ ঘনমিটার পানি উপর থেকে নিচে পড়ে।





ইগুয়াজু জলপ্রপাতের আজে’ন্টাইন পাশ থেকে যে কেউ হেটে জলপ্রপাতটির নিম্নভাগে দেখতে পারবে এবং নৌকা দিয়ে জলপ্রপাতটির মুখ থেকে ঘুরে আসতে পারবে। তাছাড়া জলপ্রপাতটির পাশে অবস্তিথ “ন্যাশনাল পাক” ঘুরে আসতে পারবে। আর ব্রাজিলিয়ান পাশ থেকে সম্পূর্র জলপ্রপাতটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করতে পারবে। তাছাড়া ব্রাজিল অংশে অবস্থিত “ন্যাশনাল পার্ক” পরিদর্শন করতে পারবে। দুটি পাকই ইউনেস্কো কতৃক ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান।
আর ব্রাজিলিয়ান পাশ থেকে সম্পূন’ জলপ্রপাতটির নৈসগি’ক সৌন্দয’ একসাথে উপভোগ করতে পারবে। তাছাড়া ব্রাজিল অংশে অবস্তিথ “ন্যাশনাল পাক” পরিদশ’ন করতে পারবে। দুটি পাক’ই ইউনেস্কো কতৃক ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য।
ইগুয়াজু জলপ্রপাতটি বিভিন্ন দ্বীপে বিভক্ত যা পৃথক পৃথক জলপ্রপাতে রুপান্তরিত হয়েছে এরমধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে Devils Throat, San Martin, Bosetti ইত্যাদি। এদের বেশির ভাগের উচ্চতাই ২০০ ফুটের কাছাকাছি।
ইগুয়াজু জলপ্রপাত  সৃষ্টি নিয়ে বেশ মজার একটা ঘটনা প্রচলিত আছে। একবার নাকি স্বর্গের এক দেবতার নাইপি নামের এক মেয়েকে  ভীষন পচ্ছন্দ হয়ে গেল। এখন দেবতা নাকি সেই মেয়েকে বিয়ে করবেই। কিন্তু মেয়েটি আবার তারাবো নামে একটি ছেলেকে পচ্ছন্দ করে। তাদের ভালবাসা এমনই গভির,সেই দেবতাকে ছেড়ে তারাবোর হাত ধরে একটি নৌকায় করে পালিয়ে গেল। ওরা আবার পালিয়ে যাচ্ছিল ঐ নদী দিরয়েই। তখন সেই দেবতা তাদের নদীতে দেখতে পেয়ে রাগের চোটে তরবারী দিয়ে এক কোপে নদীটিকে দুই ভাগ করে দিল। আর এভাবেই নাকি সৃষ্টি হল ইগুয়াজু নদী।
নায়াগ্রা জলপ্রপাতের দেশ আমেরিকার একসময়কার রাষ্ট্রপতি রুজভেল্টের স্ত্রী একবার গিয়েছিলেন ইগুয়াজু জলপ্রপাত দেখতে। এটি দেখে তিনি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে আপন মনে তাঁর মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়েছিল, ‘আহা রে, হতভাগা নায়াগ্রা!’
ইগুয়াজু জলপ্রপাত দেখার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে বসন্তকাল। গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া গরম আর আদ্র থাকে এবং শীতকালে পানির স্তর অনেক বেশী নিচে নেমে যায়।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates