Social Icons

Saturday, December 5, 2015

আওয়ামী লীগের ২, বিএনপির ৯, স্বতন্ত্র ১০ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল

স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রথম দিন গতকাল দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় বিএনপির ৯ এবং আওয়ামী লীগের ২ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ সময় ১০ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়। মেয়র পদে জাতীয় পার্টি জাপার ২ এবং জামায়াতের ১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রতিপক্ষের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় ফেনীর পরশুরাম, মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমসহ কয়েকটি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। ওদিকে রাজশাহী, যশোর, বরিশাল, সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন পৌরসভায় কমপক্ষে ৫১ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এতে অনেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গতকাল রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
 
রাজশাহীর দুই পৌরসভায় চার মেয়র প্রার্থীর মনোয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া চারঘাট, দুর্গাপুর ও কেশরহাট পৌরসভায় ১৩ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থিতা বাতিল হওয়া মেয়র প্রার্থীরা হলেন বাঘার আড়ানী পৌরসভার বর্তমান মেয়র, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ কলিন্স এবং কাকনহাট পৌরসভার বিএনপির বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী শাহিনুর রহমান।

গোলাপগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। বাছাইয়ের প্রথমদিন সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বাতিল হওয়া ৬ কাউন্সিলর প্রার্থী হলেন, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ফজলুল আলম, ৫নং ওয়ার্ডের মাহতাব উদ্দিন, ৬নং ওয়ার্ডের আলা উদ্দিন ও হামিদুজ্জামান মাসুম এবং ৭নং ওয়ার্ডের খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও হেলালুজ্জামান হেলাল। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার সাইদুর রহমান জানান, রোববার এ পৌরসভায় ৭ মেয়র প্রার্থী ও ১১ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। এ পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাতিল হওয়া প্রার্থীদের কারো শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র জমা না দেয়া, কারো হলফনামায় স্বাক্ষর না করাসহ বিভিন্ন ত্রুটি ছিল। কানাইঘাট পৌরসভার সহকারী রিটার্নিং অফিসার কামাল আহমদ বলেন, রোববার মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন।

 বাগেরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনা হাসিবুল হাসান শিপনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং অফিসার। বর্তমানে বাগেরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। 



 বাঘারপাড়া পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে মেয়র পদে দুজন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে তিনজন। মেয়র পদে বাঘারপাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রউফ ও ইসলামী আন্দোলনের শহিদুল ইসলামের মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শম্পা রানী, ৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাহিদা বেগম ও একই ওয়ার্ডের সীমা খাতুনের মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে।



ওগাঁর দুটি পৌরসভায় ১৩ কাউন্সিলর এবং নজিপুর পৌরসভায় দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। নওগাঁ পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিরুল ইসলাম এবং নজিপুর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানিয়েছেন।
 
  মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শামসুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী জামাল হোসেনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। মীরকাদিম পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির গতকাল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এ ঘোষণা দেন।



 গৌরনদী পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাছাইতে মেয়র পদে ৪টি মনোনয়নপত্র বৈধ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ১১ প্রার্থীর মধ্যে তিনজনের মনোয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী। উপজেলা নির্বাচন অফিসার মিজানুর রহমান জানান, বাছাইতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মো. হারিছুর রহমান, বিএনপির প্রার্থী উপজেলা যুবদলের সভাপতি শরীফ শফিকুর রহমান স্বপন, ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী ওবাইদুল হক মিয়া, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. তুহিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ও সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী তাইয়াবা আক্তার সুইটি, ছালমা আক্তার ছবি ও ২নং ওয়ার্ডের খাদিজা বেগমের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে এক মাত্র প্রার্থী রয়েছেন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বর্তমান কাউন্সিলর সেলিনা আক্তার।
 
 সাভার পৌরসভা নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিন মিয়া জানিয়েছেন। ন্যাপের মফিজুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আয়কর প্রত্যয়নপত্র ও সম্পদের বিবরণী জমা না দেয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। 

 চুনারুঘাট পৌরসভার দুই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শিল্পপতি ইতেফাখরুল গনি খায়রুর মনোনয়ন ফরমের সমর্থক স্বাক্ষরের পাতায় প্রার্থী স্বাক্ষর না করায় মনোনয়ন বাতিল হয়। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মীর সাহেব আলী সমর্থকদের যে তালিকা ও স্বাক্ষর দিয়েছেন তদন্তে কয়েকটি স্বাক্ষর যথাযথ না হওয়ায় তার প্রার্থিতাও বাতিল হয়। এতে চুনারুঘাট পৌরসভায় শুধু আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল আলম রুবেল ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছর মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে।


 কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভায় ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বাদ পড়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল হক খান ফারুক চৌধুরী। 

 চাঁদপুর ছেংগারচর পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সারোয়ারুল আবেদীনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টায় সারোয়ারুল আবেদীন বা তার প্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ১৩ই ডিসেম্বরের মধ্যে সারোয়ারুল মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আবেদন না করলে নির্বাচন কমিশন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।

সারোয়ারুল আবেদীনের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছেংগারচর পৌরসভার মেয়র হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (বর্তমান মেয়র) রফিকুল ইসলাম জজ। 
 
 ৫ পৌরসভার মধ্যে চারটিতে মেয়র পদের মনোনয়ন বাছাইয়ে ৫ জনের মেয়র প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন কারণে কুষ্টিয়া পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট শামীম-উল হাসান অপু, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবদুল খালেক ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী কে এম জাহিদের মেয়র প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। ভেড়ামারা পৌরসভায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আজগর আলীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে, খোকসা পৌরসভায় মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেয়া পাঁচজনের প্রার্থিতাই বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

 চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৫ প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নি অফিসার দেবময় দেওয়ান। তারা হলেন বিএনপির নয়ন বাঙ্গালী, জাতীয় পার্টির খোরশেদ আলম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাহাব উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম হোসেন পাটোয়ারী (এনাম)।

 পৌরসভা নির্বাচনে এক নারী প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। হলফনামা ও আয়-ব্যয়ের হিাসব না দেয়ায় এবং বিস্তারিত তথ্য পূরণ না করায় এ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য করা হয়।
 
 রায়পুর পৌরসভার সাধারণ কাউন্সিলর পদে দুই জামায়াত সমর্থিত ও অপর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীসহ তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি ফজলুল করিম ও ৫নং ওয়ার্ড জামায়াত নেতা জিল্লুর রহমানসহ দুজন ও অপরজন ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবু জাহেদ বাচ্চু। এদিকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইছমাইল হোসেন খোকন ও বিএনপির প্রার্থী এ বি এম জিলানীসহ ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম। লাকসাম প্রতিনিধি জানান, জাতীয় পার্টির মোখলেছুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম ফারুকসহ ২ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

 লাকসাম উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার রাশেদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এ দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এদিকে লাকসামে নিখোঁজ বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির পারভেজের পত্নী লাকসাম পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি থেকে। তিনি বলেন, আমার এ নির্বাচন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমার স্বামী হুমায়ুন কবির পারভেজ বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক অপহৃত হন। দুই বছর ধরে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। প্রতিদিন আমার সন্তানরা তাদের বাবার প্রতীক্ষায় রয়েছে। কখন যে তাদের বাবা ফিরে আসবে। তাই জনগণ এ অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ব্যালেটের মাধ্যমে রুখে দাঁড়াবে। জনগণ যদি ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আমি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত। 

 পৌর নির্বাচনে ৮ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ৭টি বৈধ ঘোষণা করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৭ জনের মধ্যে ৬টি বৈধ ঘোষণা করা হয়।
 
 পরশুরাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী সাজেলের মনোয়নয়নপত্র বৈধ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাহেদা আক্তার জানান, বিধি মোতাবেক জামানত না দেয়ায় মো. মোস্তাফিজুর রহমানের মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে। এতে একক প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নিজামউদ্দিন আহাম্মেদ চৌধুরী সাজেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার দাঁর প্রান্তে রয়েছেন। নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের চাচাতো ভাই। এদিকে ফেনী পৌরসভায় বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ফজলুর রহমান বকুলের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ সময় ফেনী পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আতিকুল আলম মজুমদারেরও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অন্যদিকে দাগনভূঞা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ওমর ফারুক খান (বর্তমান মেয়র) ও বিএনপি মনোনীত কাজী সাইফুর রহমান স্বপন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। 

 ছেংগারচর পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সারোয়ারুল আবেদীনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জজের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন।

 ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী আসকরের মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং অফিসার শান্তি মণি চাকমা।

 হোমনা পৌরসভা নির্বাচনে দুই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউএনও আহমেদ জামিল। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন বর্তমান মেয়রের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জহিরুল হক জহর। এ দুজন সম্পর্কে দেবর-ভাবী।
উদ্বেগ-আতঙ্ক
চারদিকে আতঙ্ক। কখনও হামলার, কখনও গ্রেপ্তারের। আসন্ন পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এবং সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে আতঙ্কের মাত্রা। প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। প্রশাসন ও প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীর তরফে আসছে হুমকি-ধমকি। চাঁদপুরের ছেংগারচরে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ও বগুড়ায় বিএনপি সমর্থিত এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের হুমকি দেয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন। বগুড়ায় হুমকি পাওয়া কাউন্সিলর প্রার্থী এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। গ্রেপ্তার ও হামলার ভয়ে বহু জায়গায় সশরীরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বিরোধী জোটের প্রার্থীরা। আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। বিভিন্নস্থানে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দানে বাধা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কেউ কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। নির্বাচন কমিশন তা স্বীকার করলেও আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি। এছাড়া নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে আগেই। গত এক মাসে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের ওপর চলছে অব্যাহত ধরপাকড়। বিএনপি নির্বাচন সমন্বয়কারী ও তৃণমূল নেতারা এমন অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি নগ্নভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকেও। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সবাই বলে এরা সরকারের ক্যাডার বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এদিকে চাপের মধ্যে পড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আতঙ্ক থেকে মুক্ত নন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল এমনকি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও। চাপ, গ্রেপ্তার ও হামলার আতঙ্কের ওপর বাতিলের খড়গে কাটা পড়ছে অনেকের মনোনয়নপত্র। গতকাল চাঁদপুরের ছেংগারচর, ফেনী সদর, পরশুরাম ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ বেশ কিছু পৌরসভায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের। অনেক পৌরসভায় স্বতন্ত্র ও বিএনপি জোটের শরিক দল জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে নানা কারণ দেখিয়ে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেছেন, পৌর নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের যেসব প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। 

এদিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নাসির উদ্দিনের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। নাসির উদ্দিন জানান, মিলাদের প্রস্তুতিকালে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রায় ২০০ সন্ত্রাসী লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে আকস্মিকভাবে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে মিলাদের জন্য টানানো শামিয়ানা ছিঁড়ে ফেলে এবং বাড়িতে হামলা চালায়। পরে আগামী ৩০শে ডিসেম্বরের আগে কোনো মিলাদ করা যাবে না বলে তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়। হামলার সময় নাসির উদ্দিন বাড়িতে ছিলেন। হামলার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া দলীয় বিতর্কিত প্রার্থীর পক্ষে বিরোধী মেয়র প্রার্থীদের দিনভর মুন্সীগঞ্জ নির্বাচন অফিসে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বর্তমান মেয়র ও মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম শাহীনের হস্তক্ষেপে মীরকাদিম পৌরসভার সচিবের দেয়া একটি হোল্ডিংয়ের ৩ হাজার ৪শ’ টাকা ট্যাক্স বকেয়া থাকার অভিযোগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শামসুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এ ব্যাপারে শামসুর রহমান বলেন, জেলা নির্বাচন অফিসার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনের উপস্থিতিতে সচিবের দায়ের করা ৮৪ নং হোল্ডিংয়ের ৩৪০০ টাকা ট্যাক্স বকেয়ার দাবি জানান। এ হোল্ডিংয়ে আমার কোন বাড়ি নেই। আমি হোল্ডিং সম্পর্কে জানি না ও চিনি না। ওই হোল্ডিংয়ে আমি আগে-পরে কোন ট্যাক্স দিয়েছি কিনা-তাও পৌরসভার সচিব দেখাতে পারেননি। তিনি বলেন, নির্বাচন হবে দূরের কথা, এখন দেখা যায় আমাকে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না। বিরোধী পার্টিকে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিভাবে। আমার তো মনে হয় না নির্বাচন হবে এখানে।

প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্ট আতঙ্কের বিষয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলটির অন্যতম নির্বাচন সমন্বয়কারী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশে আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রত্যেক প্রার্থীর মধ্যে একরককম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক আসনে ভালো প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও জুলুম, নির্যাতনের আশঙ্কায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হননি। এর কারণ প্রচুর অর্থ ব্যয় ও মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা ধরনের হয়রানির ভয়। এমনকি বিজয়ী হওয়ার পর বরখাস্ত বা জেলে যাওয়ার মতো বিপদের আশঙ্কা তো রয়েছেই। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মনোনয়ন প্রত্যয়নকারী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আমরা মনে করেছিলাম ভোটের সময় হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্ক কমবে। একটি সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, উল্টো আতঙ্কের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। বেশকিছু জায়গায় অন্যায্যভাবে আমাদের মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। কোথাও মনোনয়ন জমা দিতে দেয়া হয়নি। বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর গ্রেপ্তারের স্টিমরোলার চলছে। তিনি বলেন, প্যালেস্টাইন যুগের পর যুগ ধরে স্বাধীনতা যুদ্ধ করে আসছে। সেখানে যুদ্ধের মধ্যে যেসব শিশু জন্ম নিচ্ছে তারা বড় হচ্ছে, শিক্ষা-দীক্ষা নিচ্ছে, আবার প্রজন্মান্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির শিক্ষার হার খুব ভালো। ভিয়েতনামের কথাও উল্লেখ করা যায়। আমরা এ দেশ দুটির মানুষের কাছে শিক্ষা নিতে চাই, যুদ্ধের মধ্যেও জীবন থেমে থাকে না। মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে আমরা একটি রাজনৈতিক যুদ্ধের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছি। আতঙ্কের মধ্যেই আমাদের জীবনযাপন, রাজনীতি। এখন এটাকেই আমরা শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছি। যতই আতঙ্কের মধ্যে থাকি না কেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের রাজনৈতিক লড়াই থামবে না। তিনি বলেন, যেখানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেখানে আপিল করব। সব ধরনের কৌশলেই আমরা নির্বাচনে থাকার চেষ্টা করব। 

এদিকে ফেনীর তিন পৌরসভার ৩৩টি কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। এর মধ্যে ফেনী পৌরসভায় সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১টি, সংরক্ষিত পদে ৪টি, দাগনভূঁঁঞায় সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪টি, সংরক্ষিত পদে ৩টিতে ৩টি, পরশুরাম সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯টিতে ৯টি ও সংরক্ষিত পদে ১টি। এ ব্যাপারে ফেনী জেলা বিএনপি নেতারা জানান, ওইসব পদে বিএনপি সমর্থক বা স্বতন্ত্র কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দাখিল করার সুযোগ দেয়া হয়নি। পুলিশি হয়রানি ও সরকারি দলের কর্মীদের হামলার ভয়ে তারা এলাকায় পর্যন্ত যেতে পারেননি। ফলে বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ফেনীর তিন পৌরসভায় এত বিপুল সংখ্যক পদে কোন প্রার্থীই নেই বিরোধী জোটের।

 বিএনপি নেতাদের এ অভিযোগ আরও দৃঢ়তা পেয়েছে ফেনীতে দুইটি পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার ঘটনায়। উল্লেখ্য, ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, ফেনী সদর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ফজলুর রহমান বকুল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এদিকে কুমিল্লার বরুড়া ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় মেয়র পদে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন- চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, স্বতন্ত্র (জামায়াত) ও জাতীয় পার্টি মনোনীত তিন মেয়র প্রার্থী ও বরুড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। কুমিল্লা বিএনপি নেতারা জানান, চৌদ্দগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত জেনেই তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে তাদের দলীয় প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতেই বিরোধী প্রার্থীদের সরিয়ে দিচ্ছে। বরগুনায় বর্তমান মেয়রসহ দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। যাদের একজন মহাজোট সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী। এদিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের খবর শুনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হক। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ৩০শে ডিসেম্বর ২৩৫টি পৌরসভায় প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতোই পৌর নিবার্চনের জন্য কর্মকৌশল ঠিক করেছে সরকার। আর সেটা বাস্তবায়ন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে তা শুধু ট্রেলার, পিকচার এখনও বাকি। কিন্তু কারচুপি হবে জেনেও, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জেনে-শুনে বিষপান করেছি।
বগুড়ায় বাউন্সিলর প্রার্থীকে হুমকি, জিডি

 বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপিদলীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মনোনয়ন প্রত্যাহারের হুমকির অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে হুমকিটি প্রদান করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। শনিবারে বিএনপিদলীয় ১০নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রার্থী মাহবুবুর রহমান লুলকা থানায় অভিযোগটি করেন। অভিযোগে বলা হয়, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টায় ওয়ার্ড অফিসের সামনে লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামি ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুর রহমানের বন্ধু নাসিম কনক ছোট আরিফসহ ১৫-২০ জনের একটি দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বলে ‘পৌর নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নে। এখন বাসায় যা, কাল থেকে বাসার বাইরে বের হবি না। এমনকি ভোটের কোন প্রচারও করবি না। বের হলে খুন করতে দ্বিধা করবো না। প্রয়োজনে যেখানে পাবো সেখান থেকে তুলে নিয়ে খুন করে লাশ গুম করবো। আজকে প্রাণে ছেড়ে দিলাম।’ এ কথা বলে ধাক্কাতে ধাক্কাতে আমার বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। বাসার ভেতরে নিয়ে যাওয়ার পর আমার স্ত্রী ও সন্তানদের বলে বাসা থেকে বের হলে মেরে লাশ গুম করে ফেলবো। প্রয়োজনে তোদেরও মেরে ফেলবো। এরপর তারা চলে যায়। ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাই। পুলিশ বাসায় এলে সব ঘটনা খুলে বলি। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুবুর রহমান অভিযোগ দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শুধু থানায় নয়, নির্বাচন অফিসেও লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু মনোনয়ন বাছাই কাজে ব্যস্ততার কথা বলে রোববারে অভিযোগটি দাখিল করার কথা বলেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আরিফুর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। লুলকার জনপ্রিয়তায় ধস নামায় তিনি এলাকাবাসীর সমবেদনা এবং সমর্থন আদায়ের কৌশল হিসেবে নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়ে এ অভিযোগটি করেছেন। বগুড়া সদর থানার ওসি আবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরিফুর রহমানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates