কল্পনার চেয়েও আরো অনেক বেশি সুন্দর আয়ারল্যান্ডের সবুজ প্রকৃতি। আয়ারল্যান্ডের মানুষ হাসিখুশি ও আড্ডাপ্রিয়। এই ছোট দ্বীপ দেশটির আয়তন মাত্র ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। অসংখ্য পাহাড়-পর্বত, বেশ কয়েকটি নদী ও অনেক হ্রদ আছে এই দেশে। ছোট এই দেশটিতে ভ্রমণে গেলে যে জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন তা সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।
১। কাইলিমোর অ্যাবি
আয়ারল্যান্ডের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কাইলিমোর ক্যাসেল অন্যতম। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যে সন্ন্যাসীরা বেলজিয়ামে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাদের জন্য এই দুর্গটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আসলে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যই এই দুর্গটি নির্মাণ করেন মিশেল হেনরি তার স্ত্রীকে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য যিনি পরবর্তীতে তরুণ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আর বিয়ে করেন নি। দুর্গের ভেতরেই একটি ছোট ক্যাথেড্রাল বা গির্জা তৈরি করেন তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে। আয়ারল্যান্ডে গেলে অবশ্যই এই সুন্দর দুর্গটি না দেখে আসবেন না।
২। কনেমারা ন্যাশনাল পার্ক
কাইলিমোর অ্যাবের কাছাকাছি অবস্থিত কনেমারা ন্যাশনাল পার্ক। আয়ারল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল থেকে বেশ দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত এই পার্কটি। এজন্যই এটি আরো বেশি বিশেষত্বের দাবীদার। অত্যন্ত সুন্দর এই পার্কটিতে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দই অন্য রকম।
৩। ডাবলিন
আয়ারল্যান্ডের বড় শহর ও রাজধানী হচ্ছে ডাবলিন। যার জনসংখ্যা মাত্র ৬ লাখের মত। আয়ারল্যান্ড ভ্রমন অসম্পূর্ণই থেকে যাবে যদি না আপনি একটি ছুটির দিন এই শহরে কাটান। এই শহরটি মিউজিক, পাব ও স্ট্রিট কালচারের জন্য জীবন্ত হয়ে থাকে, বিশেষ করে ছুটির দিনে।
৪। স্লিভ লীগ
আয়ারল্যান্ডের উপকূলীয় রেখা বরাবর স্লিভ লীগ অবস্থিত যা ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লিফ। এই স্থানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আপনি বিমোহিত হবেন।
৫। গ্লেনিফ হর্সশু
১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ঘোড়ার খুরের ন্যায় গ্লেনিফ হর্সশু খুবই সুন্দর একটি দর্শনীয় স্থান। এটি স্লিগো প্রদেশে অবস্থিত। রাজপথ থেকে দূরে আইরিশ গ্রামাঞ্চলের প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত স্থান এটি। এখানে হাইকিং ও ট্রেকিং এর সুবিধা আছে।
৬। দ্যা রক অফ ক্যাসেল
রক শুনেই মনে করবেন না যে এটি একটি পর্বতের নাম। এটি একটি প্রাচীন ধর্মীয় কাঠামো ও ঐতিহাসিক সম্পদ। যা টিপেরারি কাউন্টিতে সবুজ পাহাড়ের উপর অবস্থিত। এটি ১২ শতকের রোমান স্থাপত্য কলার নিদর্শন এবং ১৩ শতকের গথিক ক্যাথেড্রাল। কিন্তু এর ইতিহাস আরো অনেক পুরোনো। প্রায় ১০০০ বছর আগে এটি শক্তির প্রতীক ছিলো এবং রাজা ও পাদ্রিরাই এই অঞ্চল শাসন করত।
৭। জায়ান্ট কজওয়ে
উত্তর আয়ারল্যান্ডের ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকাভুক্ত একটি স্থান হচ্ছে জায়ান্ট কজওয়ে। পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম স্থান এটি। এই স্থানটিতে ৪০,০০০ বহুভুজাকৃতির ব্যাসল্ট পাথর আছে যা সারিবদ্ধ কলামের মত পাশাপাশি অবস্থান করছে। প্রাচীন আগ্নেয়গিরি হতে সৃষ্টি হয়েছে এই পাথরের সিরিজ যা উপকূল বরাবর অবস্থিত। প্রকৃতির সবচেয়ে অদ্ভুত পথে হাঁটার অভিজ্ঞতা করতে পারেন দর্শনার্থীরা এই স্থানটিতে গেলে।
বেড়ানোর আরো যে জায়গা গুলো আছে আয়ারল্যান্ডে : মোহেরের ক্লিফ, কিং অফ কেরি, স্কেলিগ আইল্যান্ড, আরান দ্বীপপুঞ্জ, গ্লেনভেগ ন্যাশনাল পার্ক, বারেন, গ্লেনডালু, কুলি পেনিনসুলা ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment