গত ২৫ বছরে বিশ্ব শান্তির সর্বোচ্চ অবনতি ঘটেছে। কারণ বিশ্বে সহিংসতাও সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। শান্তির অবনতির জন্য মূলত মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতকেই দায়ী করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের সংঘাতের অবসান ঘটলেই বিশ্ব অনেক শান্তিপূর্ণ হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বে শান্তির সূচক নির্ধারণকারী সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি)। সূচকে ১৬৩ টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় আছে আইসল্যান্ড। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১০৩ নম্বরে। গতকাল বুধবার জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চেভেলে’র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ব শান্তি সূচক-২০১৬ তে বলা হয়েছে, শান্তির পরিমাপের জন্য ২৩টি নির্দেশককে ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সহিংস অপরাধ, সামরিকীকরণ, অস্ত্রের আমদানি প্রভৃতি। সিরিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে।
আইইপি’র প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ কিল্লেলিয়া জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের অব্যাহত সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য আমরা অনেক ইতিবাচক প্রবণতার দিকে লক্ষ্য রাখতে পারছি না। আমরা যদি গত বছরের দিকে তথা গত হওয়া মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির দিকে তাকাই তাহলে দেখতো পাবো ওই সময়টা বেশি শান্তিপূর্ণ ছিল। ২০১৪ সালে সংঘাতে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, সেখানে ২০০৮ সালে নিহত হয়েছিল ২০ হাজার। এক লাখের মধ্যে সিরিয়ায়ই নিহত হয় ৬৭ হাজার। জাতিসংঘ বলছে, ২০১৫ সালে ৬ কোটি মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
চরম আর্থিক মূল্য
সংস্থাটি জানিয়েছে, সংঘাতের জন্য বিশ্বকে চরম আর্থিক মূল্য দিতে হয়েছে। এই সময় শান্তিরক্ষী বাহিনীতে জাতিসংঘের ব্যয় বেড়েছে বহুগুন। ২০১৫ সালের সহিংসতার জন্য আর্থিক ব্যয় হয়েছিল ১৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার যা বিশ্বের জিডিপি’র ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ১১ গুন। কিল্লেলিয়া বলেন, সশস্ত্র সংঘাত থেকে রক্ষা তথা শান্তিরক্ষায় বিশ্ব দুই শতাংশ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
ইউরোপ এখনো নিরাপদ
প্যারিসে এবং ব্রাসেলসে হামলার পরও ইউরোপকে নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আইসল্যান্ড সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ। এরপর আছে যথাক্রমে ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং পর্তুগাল। জাপান নবম, জার্মানি ১৬ তম এবং ব্রিটেন ৪৭ তম অবস্থানে। সবচেয়ে কম শান্তিপূর্ণ দেশ সিরিয়া। এরপর আছে দক্ষিণ সুদান, ইরাক, আফগানিস্তান এবং সোমালিয়া।


No comments:
Post a Comment