Social Icons

Friday, December 8, 2017

মানসিক উত্তেজনা থেকে হার্ট অ্যাটাক

প্রাচীনকাল থেকেই হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে মনের সম্পর্কের কথা বলা হয়ে আসছে। মানসিক উৎকণ্ঠা বা উত্তেজনার সময় দ্রুত হৃৎস্পন্দন, বুক ধড়ফড় করা বা বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। অনুভূতির সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের নিবিড় সম্পর্কের কথা জানা যায়। জীবনের কোনো উত্তেজনাকর বা সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কোনো কোনো মানুষ হঠাৎ হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারে।
 
সাময়িক মানসিক উত্তেজনা শরীর সহজেই অ্যাডজাস্ট করে নেয়। একটানা মানসিক উত্তেজনা ও দুশ্চিন্তা হৃদরোগের বা হার্ট অ্যাটাকের একটি ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান। অনেক সময় দেখা যায় হার্ট অ্যাটাকের আগে রোগী কোনো না কোনো ধরনের দুশ্চিন্তা বা উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়েন। মানসিক উত্তেজনা বলতে আমরা বুঝি উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, অসংলগ্ন কথা বলা বা অসুখকর পারিপার্শ্বিক অবস্থা। এই মানসিক উত্তেজক ব্যক্তি নানারকম অভিযোগ নিয়ে আসতে পারে; যেমন- মনের অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, মাথাব্যথা, নিদ্রাহীনতা ও হতাশা।
 
রোগী যখন দীর্ঘদিন ওই উপসর্গ নিয়ে থাকে তখন হৃদযন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হয়। এতে হৃৎস্পন্দন ও হৃদযন্ত্রের ভেতর রক্ত সঞ্চালনের হার বেড়ে যায় ও হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। মানুষের চিন্তা-ভাবনা, উত্তেজনা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে সিম্পেথিক নার্ভাস সিস্টেম, টেনশন বা উত্তেজনার ফলে সিম্পেথেটিক নার্ভতন্ত্রের কাজ বহুগুণ বেড়ে যায়। এ অতিরিক্ত সিম্পেথেটিক ক্রিয়ার ফলে এড্রেনালীন নিঃসরণ বাড়ে, হৃৎস্পন্দন বাড়ে, উচ্চ রক্তচাপ হয় ও ধমনিতে চর্বির আস্তরণ পড়ার গতি বেড়ে যায়। যারা সব সময় অর্থ সম্পদের কথা ভাবেন ও উচ্চাকাক্সক্ষী, তারা সহজে স্থির থাকতে পারেন না, প্রায় সময় টেনশনে ভোগেন এবং সব কাজে তাড়াহুড়া করেন; এদের টাইপ ‘এ’ পারসোনালিটি বলা হয়। এ টাইপ ‘এ’ পারসোনালিটির মানুষের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেশি। কারণ মানসিক চাপের ফলে শুধুই যে অ্যাথরোস্কেলেরোসিস বা রক্তে চর্বি জমাট বাঁধা বেড়ে যায় তা নয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনও বেড়ে যায় ও রক্ত চাপও বাড়তে থাকে। ধমনির স্পাজমও বাড়ে। এ অবস্থা নিয়মিত চলতে থাকলে হৃৎপিণ্ডের রক্ত চলাচল বাধা পায়। ফলে প্রথম এনজাইনা ও পরে হার্ট অ্যাটাকের আশংকা বহুগুণ বেড়ে যায়।
 
মানসিক উত্তেজনার প্রতিকার
 
যেহেতু এটা মনের ব্যাপার সেহেতু একজন ব্যক্তিকে মানসিক উত্তেজনা থেকে মুক্ত থাকতে হলে সার্বিক মানসিক প্রস্তুতির দরকার। অল্পে সন্তুষ্টি, প্রশান্ত চিত্তে সহজভাবে জীবনের ঘটনাপুঞ্জিকে গ্রহণ করতে পারলেই মনপীড়ন থেকে বহুলাংশে মুক্ত থাকা যায়। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, নিজেকে কোনো আনন্দমুখর হবিতে নিয়োজিত রাখা, আত্মসম্মোহন পদ্ধতির দ্বারা নিজেকে মানসিক টেনশন থেকে মুক্ত রাখা যায়।
 
অনেকের মানসিক টেশনের সঙ্গে ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি গ্রহণের পরিমাণও বেড়ে যায় যা হার্ট অ্যাটাককে আরও ত্বরান্বিত করে। এ কারণে মানসিক টেনশন ও হার্ট অ্যাটাক থেকে মুক্ত থাকতে হলে ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদিকে বর্জন করতে হবে।
 
লেখক : হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates