২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের নেতারা বিভিন্ন উৎসব এক সঙ্গে পালন করার আহ্বান জানালেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনগাঁর পেট্রাপোল এবং বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্তে কয়েক হাজার মানুষ ভাষা দিবসের শহীদদের স্মরণে সমবেত হন।
এ উপলক্ষে নোম্যান্সল্যান্ডে বিশেষভাবে তৈরি ভাষা শহীদ স্মারক স্থাপনায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এবং অন্য নেতারা।
শহীদ স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর দুই দেশের নেতারা বাংলাদেশের বেনাপোলে ২১ ফেব্রুয়ারির সুসজ্জিত মঞ্চে যান। সেখানে অতিথিদের বিশেষভাবে স্বাগত জানানো হয়। এখানে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও বনগাঁ (উত্তর) বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ (দক্ষিণ) বিধায়ক সুরজিত বিশ্বাস, উত্তর ২৪ পরগণা জেলা পরিষদের সভাপতি রহিমা মন্ডল, বনগাঁর এমপি মমতা ঠাকুর, বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁর সাবেক বিধায়ক গোপাল শেঠ, দুই বাংলা মৈত্রী সমিতির সম্পাদক ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ এবং অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তার আবেগপূর্ণ বক্তব্যে দুই বাংলার মধ্যে কেন পাসপোর্ট থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,‘এপার বাংলার অনেকেরই ওপার বাংলায় জন্মস্থান। দুই বাংলার মানুষের মাতৃভাষা ‘বাংলা’ তাই আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আপনারা ভাল থাকলে, আমরা ভাল থাকব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।’ তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের এই অনুষ্ঠানে প্রতিবারই আসব।’
তিনি এদিন শুধু ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালন নয়, দু’পার বাংলার স্বাধীনতা দিবস ভাষা দিবস পালনের মতো একসঙ্গে করার প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশের মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ওপার বাংলার মানুষের সঙ্গে আমাদের হাজার বছরের সম্পর্ক, আত্মার সম্পর্ক, নাড়ির এবং রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্কে কোনোদিন মুছে দেয়া যাবে না।’ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেন। তিনি সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে দুই দেশের মানুষকে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথার খেই ধরে ‘বৈশাখী মেলা’, ‘বসন্ত মেলা’ একসঙ্গে করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের বেনাপোল থেকে অনুষ্ঠান শেষে দুই দেশের আমন্ত্রিত অতিথিরা ভারতের পেট্রাপলের মঞ্চে আসেন। এখানে খাদ্যমন্ত্রী ‘বৈশাখী উৎসব’, ‘স্বাধীনতা দিবস’ একসঙ্গে পালন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট দিনই নয়, ধারাবাহিকভাবে এখানে যৌথভাবে অনুষ্ঠান করব আমরা।’
পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোলের ভাষা দিবস পালন মঞ্চে বাংলাদেশের মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন ‘খুবই সময় উপযোগী আহ্বান জানিয়েছেন বালু দা (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক)। আমরা পয়লা বৈশাখ, বর্ষবরণ, বসন্ত উৎসব একসঙ্গে করতে পারি।’
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অনুষ্ঠান মঞ্চে ঘোষণা করেন, ‘আগামীতে ইলিশ মাছ ভাত দিয়ে আমরা ‘বৈশাখী উৎসব’ পালন করব। বাংলাদেশের ইলিশের কোনো তুলনা হয় না!’ দু’পার বাংলার মঞ্চেই এদিন স্বনামধন্য শিল্পীদের সমন্বয়ে সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়।
সূত্র: রেডিও তেহরান
Monday, February 22, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment