লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লীতে চাঁদার টাকা না পেয়ে মা ও মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে এনে ঘরে আটকিয়ে রেখে শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতিত গৃহপরিচারিকা জোছনা বেগম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে নির্যাতন ও চাঁদার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক কামরুল হাসান রুবেলকে প্রধান করে তার দুইসহযোগি গোলাম মাওলা আকাশ ও রাজুকে আসামি করা হয়। কামরুল হাসান রুবেল সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফারিহা আক্তার পারুলের স্বামী। এ ঘটনায় রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার মূল আসামী কামরুল হাসান রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মহেশখীল গ্রামের হতদরিদ্র মানিক হোসেনের স্ত্রী জোছনা বেগম বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। এছাড়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফারিহা আক্তার পারুলের বাসাও কাজ করতেন জোছনা বেগম। রুবেলের স্ত্রী বাসায় না থাকার সুবাধে বুধবার রাতে রুবেল তার দুইসহযোগি গোলাম মাওলা আকাশ ও রাজুকে নিয়ে ঘরে মদের আড্ডায় বসে। এ সময় মদ শেষ হয়ে গেলে গৃহপরিচারিকার ছেলে সিএনজি চালক জসিম উদ্দিনকে মোবাইল ফোনে অন্য স্থান থেকে মদ আনতে বলে রুবেল। কিন্তু জসিম মদ আনতে রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ভোররাত সাড়ে তিনটায় জোর করে বাড়ি থেকে জসিমের মা জোছনা বেগম ও বোন মিনু আক্তারকে তুলে নিয়ে আসে রুবেল ও তার দুইযোগি। পরে তাদের দুইজনকে ঘরে আটকিয়ে রেখে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন শুরু করে তারা। এসময় তাদের কাছে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত গৃহপরিচারিকা জোছনা বেগম। আটকের খবর পেয়ে পুলিশ বেলা আড়াইটার দিকে চৌপল্লীর উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে রাতে নির্যাতিত জোছনা বেগম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় কামরুল হাসান রুবেল ও তার দুইযোগিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজিজুর রহমান জানান, ঘরে চাঁদার দাবীতে আটকিয়ে রেখে মা ও মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতা কামরুল হাসান রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
সহকারী পুলিশ সুপার(সার্কেল) মো. নাসিম মিয়া জানান, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যানের বাড়িতে মা ও মেয়েকে আটকিয়ে রেখে নির্যাতনের খবর পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
Friday, February 26, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment