Friday, February 26, 2016
বিবিসিতে ৯৩ জনকে ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়ন করেছিলেন স্যাভিল-হল
ব্রিটিশ রেডিও ও টেলিভিশন তারকা জিমি স্যাভিল ও ব্রডকাস্টার স্টুয়ার্ট হল খ্যাতনামা সংবাদ সংস্থা বিবিসিতে থাকাকালীন মোট ৯৩ জনকে ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়ন করেছিলেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে নয়া এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে সাবেক এই দুই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের যৌন নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে বলে বিবিসি জানিয়েছে। নিপীড়নের শিকারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুও রয়েছে। ৯৩ জনের মধ্যে স্যাভিল একাই ৭২ জনকে যৌন নিপীড়ন করেছেন। তাদের মধ্যে আটজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর বাকি ২১ জন হলের যৌন পীড়নের শিকার। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জ্যানেট স্মিথ-এর নেতৃত্বে এই অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৫৯ সাল থেকে পাঁচদশক ধরে এই যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো ঘটে। কিন্তু সহকর্মীরা তাদের ‘তারকাখ্যাতি’ ভীত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিষয়গুলো আড়াল করেছিলেন। প্রতিবেদনে বিষয়টিকে ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ বলে অভিহিত করা হয়। জ্যানেট স্মিথ বলেন, সহকর্মীরা তাদের তারকা খ্যাতিতে এতই ভীত ছিলেন যে তাদের বাধা দেওয়া কিংবা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পরিচালকদের এ বিষয়ে জানাননি। মহাপরিচালক লর্ড হল বলেন, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যবেক্ষণে তারা দেখতে পেয়েছেন, “ভয়ের পরিবেশের” কারণে স্যাভিলের বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ পরিচালকদের কাছে অভিযোগ জানানো হয়নি। ওই ধরনের পরিবেশ (ভয়ের) বিবিসিতে এখনো রয়েছে। অবশ্য স্টুযার্ট হলের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ম্যানচেস্টারে বিবিসির খুব কম সংখ্যক পরিচালকই জানতেন। ১৩ বালিকার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ার পর ২০১৩ সালে টেলিভিশস শো ‘নকআউট’-এর প্রেজেন্টার ৮৬ বছর বয়সী স্টুযার্ট হলকে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ২০১১ সালে ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী স্যাভিল কখনোই যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হননি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবিসি তাদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের ঘটনা বন্ধের সুযোগ বেশ কয়েকবারই হাতছাড়া করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০ দশকের শেষ দিকে একজন জুনিয়র কর্মী তার সুপারভাইজরের কাছে স্যাভিলের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ জানালে তাকে বলা হয়, “তোমার মুখ বন্ধ রাখো। তিনি (স্যাভিল) একজন ভিআইপি।” একহাজার পাতার তিন খণ্ডের প্রতিবেদনটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৬৫ লাখ পাউন্ড। ৭শ’র বেশি মানুষের কাছে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ শোনা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১৭ জনই প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন যারা বিবিসিতে থাকাকালীন স্যাভিলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বা গুজব শুনেছিলেন।
Labels:
আন্তর্জাতিক
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment