Wednesday, February 24, 2016
বাংলাদেশকে সহজেই হারালো ভারত
এক পাশে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার গল্প। অন্য পাশে সাকিব আল হাসানের একটি ক্যাচ মিস। তাহলে কি মিস করা একটি ক্যাচেই বাংলাদেশের মানসিকতায় লেগেছিল বড় ধাক্কা! যে ধাক্কা আর কখনোই সামলে ওঠা যায়নি! ২১ রানে সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন রোহিত শর্মা। ভারতীয় ব্যাটসম্যান পরে খেলেছেন ৮৩ রানের আলো ঝলমলে ইনিংস। ভারতের ৬ উইকেটে ১৬৬ রানের সংগ্রহ গড়ে উঠেছে রোহিতের ইনিংসের ওপর। এরপর টাইগার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দিয়ে গল্পটা শেষ করেছেন। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ৪৫ রানে। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২১ রান করেছে স্বাগতিকরা। রোহিতের ক্যাচ মিস করার আগ পর্যন্তই আসলে ম্যাচে ছিল বাংলাদেশ। ১০.৩ ওভার। ৪ উইকেটে ৬২ রান। দারুণ না! না। তা হয়নি সাকিব ক্যাচটা মিস করলেন বলে। বাগে পেয়েও ভারতের ব্যাটসম্যানদের আরো চেপে ধরা হলো না। ওখান থেকেই দ্রুত ছিটকে পড়তে থাকে টাইগাররা। ব্যাট হাতে সৌম্য সরকার (১১) আসলে পারছেন না। তার নতুন সঙ্গী মোহাম্মদ মিথুন (১) ব্যর্থ। ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ। সাব্বির রহমান ও ইমরুল কায়েস মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। ওটাই ইনিংসে সর্বোচ্চ। ইমরুল ১৪ রানে বিদায় নেন। ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৩১। ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৫১। এখান থেকে ম্যাচ জিততে হলে বাংলাদেশের একজন রোহিত শর্মা দরকার ছিল। কিন্তু রোহিত তো ভারতের ব্যাটসম্যান! ম্যাচের সেরা। সাকিবের (৩) ইনিংস গুটিয়ে যায় অকারণ রান আউটে। ১ ও ২২ দুটি জীবন পেয়েও চমৎকার খেলছিলেন সাব্বির রহমান। ৩২ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ রান করেছেন। কিন্তু তার আউটের সময়ও আসলে ম্যাচ জেতার মতো অবস্থায় ছিল না দল। মাহমুদুল্লা (৭) ও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে (০) আউট করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন অভিজ্ঞ পেসার আশিষ নেহরা। হয়নি। তবে ৪ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই সফলতম বোলার। অন্য বোলাররাও ছিলেন দারুণ নিখুত। অথচ টাইগারদের শুরুটা কি আশা জাগানিয়াই না ছিল! মাশরাফি টস জিতলেন। ভারী আবহাওয়ায় চার পেসার নিয়ে বোলিং করার সঠিক সিদ্ধান্তই নিলেন। দ্বিতীয় ওভার আল আমিন হোসেন শিখর ধাওয়ানের (২) অফ স্টাম্প উড়িয়ে দিলেন। মাশরাফি পঞ্চম ওভারে বিপজ্জনক বিরাট কোহলিকে (৮) তুলে নিয়েছেন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৩১ রান করে ভারত। চার পেসার নিয়ে খেললেও অষ্টম ওভারে অফ স্পিনার মাহমুদুল্লাকে আক্রমণে আনেন। ফল পান। সুরেশ রায়না (১৩) উইকেটে নেমে এসে মিডল স্টাম্প হারিয়েছেন। সবকিছু বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১০ ওভারে ৩ উইকেট ৫২ রান। চারটি মাত্র বাউন্ডারি। ছক্কা নেই। চাপ ভারতের ওপর। কিন্তু একাদশ ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে পয়েন্টে সোজা সাকিবের কাছে গেল ক্যাচটা। অপ্রস্তুত সাকিব ক্যাচটা নিতে পারলেন না। জীবন পাওয়া রোহিত পরের তিন বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা মেরে উদযাপন করলেন। ভোজবাজির মতো চিত্র পাল্টাতে শুরু করলো। এরপর সাকিব তুলে নিয়েছেন যুবরাজ সিংয়ের (১৫) উইকেট। কিন্তু রোহিত ততক্ষণে সংহারী মূর্তী নিয়েছেন। মাশরাফির এক ওভারে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারলেন। একটি ছক্কা মারলেন কাটার বিশেষজ্ঞ মুস্তাফিজুর রহমানের পরের ওভারে। ১৭তম ওভারে মুস্তাফিজ ২১ রান দিলেন। একটি ছক্কা আছে রোহিতের। শেষ ওভারে দুটি উইকেট নিয়েছেন আল আমিন। রোহিতের পর ১৮ বলে ৩১ রান করা হার্দিক প্যাটেলনকে ফিরিয়েছেন। আর আমিন ইনিংসের সেরা বোলার। ৪ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট তার। মুস্তাফিজ এই প্রথম ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে উইকেট পেলেন না। ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসে সবচেয়ে বড় আক্ষেপ হয়ে থেকেছে সাকিবের মিসটা। ৫৫ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রান করেছেন রোহিত। তার ৬২ রানই যে এসেছে সাকিবের কল্যাণে! বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যর্থতায় ম্যাচ হারলো। তবু সামনে উঠে আসে সাকিবের ক্যাচ মিস!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment