বিয়ের পর সংসার জীবনকে সুখী করা প্রত্যেক যুগলের প্রত্যাশা। অনেক সময় সেই প্রত্যাশা সবাইর ক্ষেত্রে পূরণ হয় না। সংসার জীবনে অমিলের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিক্ততা থেকে পৃথক বসবাসের পর তালাক বা বিয়ে ভেঙে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যাকে আমরা তালাক নামে অবহিত করি। আগের তুলনায় বর্তমান সময়ে বিয়ে বিচ্ছেদের হার অনেক বেশি। কিন্তু অনেকের এ বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর সময় বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে তাদের দেনমোহর ও ভরণ-পোষণ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
তালাক কী
মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ককে আইনগত উপায়ে ভেঙে দেওয়াকে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ বলে। আইন অনুযায়ী যে কোনো পক্ষ বিয়ে ভেঙে দিতে পারে। যাকে আমরা বিবাহ বিচ্ছেদ বলি। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী সবার সমান অধিকার রয়েছে। মানুষের প্রচলিত ধারণা, স্বামী যে কয়দিন চাইবে সে কয়দিন স্ত্রী ঘর সংসার করবে। স্বামী না চাইলেই বিদায়। এই ধারণা সমাজে প্রচলিত থাকলেও তা আইন ও ধর্মীয় দৃষ্টিতে বেআইনি। আইনের দৃষ্টিতে তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ স্ত্রীও তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারে।
তালাকের নিয়মাবলি
মুখে পরপর তিনবার 'তালাক' উচ্চারণ করলে তালাক কার্যকর হয় না। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭ (১) ধারা অনুযায়ী, স্বামী তালাক দেওয়ার পর পরই তালাক দেওয়ার সংবাদটি একটি নোটিশের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে (যে চেয়ারম্যানের এলাকায় স্ত্রী বাস করছেন) জানাতে হবে। সেই নোটিশের একটি কপি স্ত্রীকে পাঠাতে স্বামী বাধ্য থাকবেন।
এ আইনের ৭ ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে, সে যেকোনো পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর দ্রুত চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে নোটিশ দেবে এবং স্ত্রীকে নোটিশের একটি কপি প্রদান করবে। কোনো ব্যক্তি যদি নোটিশ না দেয় তাহলে সে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো তালাক যদি প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখের নব্বই দিন পর তা কার্যকর হবে।
তবে তার আগে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশে একটি সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং উক্ত সালিশি পরিষদ এই জাতীয় পুনর্মিলনীর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি যদি সমাধানযোগ্য হয়, তবে তার সমাধান করতে হবে। এটিই মূলত চেয়ারম্যান বা কমিটির কাজ। চেয়ারম্যানকে নোটিশ প্রদানের কারণ এটাই।
একই আইনের ৯ ধারায় আছে, কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে পর্যাপ্ত ভরণ-পোষণ বা খোরপোষ দানে ব্যর্থ হলে বা একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে তাদের সমান খোরপোষ না দিলে, স্ত্রীরা চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং ওই পরিষদ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ প্রদানের জন্য টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে সার্টিফিকট জারি করবে। স্বামী যদি ভরণ পোষণের কোনো টাকা যথা সময়ে বা সময়মতো পরিশোধ না করে তাহলে তা বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসেবে তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
যেসব কারণে স্ত্রীও তালাক দিতে পারে
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী একজন স্ত্রী কী কী কারণে স্বামীকে তালাক দিতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছে । কারণগুলো হলো- ১. যদি চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে, ২. দুই বছর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হয়। ৩. স্বামীর সাত বৎসর কিংবা তার চেয়েও বেশি কারাদণ্ডাদেশ হলে। ৪. স্বামী কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময় ধরে (তিন বছর) দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে। ৫. বিয়ের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন থাকলে ৬. স্বামী যদি দুই বছর পাগল থাকে অথবা কোনো গুরুতর ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে ৭. স্বামীর ধারাবাহিক নিষ্ঠুরতার কারণেও স্ত্রী তালাক দিতে পারে।
তালাক কী
মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ককে আইনগত উপায়ে ভেঙে দেওয়াকে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ বলে। আইন অনুযায়ী যে কোনো পক্ষ বিয়ে ভেঙে দিতে পারে। যাকে আমরা বিবাহ বিচ্ছেদ বলি। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী সবার সমান অধিকার রয়েছে। মানুষের প্রচলিত ধারণা, স্বামী যে কয়দিন চাইবে সে কয়দিন স্ত্রী ঘর সংসার করবে। স্বামী না চাইলেই বিদায়। এই ধারণা সমাজে প্রচলিত থাকলেও তা আইন ও ধর্মীয় দৃষ্টিতে বেআইনি। আইনের দৃষ্টিতে তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ স্ত্রীও তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারে।
তালাকের নিয়মাবলি
মুখে পরপর তিনবার 'তালাক' উচ্চারণ করলে তালাক কার্যকর হয় না। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭ (১) ধারা অনুযায়ী, স্বামী তালাক দেওয়ার পর পরই তালাক দেওয়ার সংবাদটি একটি নোটিশের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে (যে চেয়ারম্যানের এলাকায় স্ত্রী বাস করছেন) জানাতে হবে। সেই নোটিশের একটি কপি স্ত্রীকে পাঠাতে স্বামী বাধ্য থাকবেন।
এ আইনের ৭ ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে, সে যেকোনো পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর দ্রুত চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে নোটিশ দেবে এবং স্ত্রীকে নোটিশের একটি কপি প্রদান করবে। কোনো ব্যক্তি যদি নোটিশ না দেয় তাহলে সে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো তালাক যদি প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখের নব্বই দিন পর তা কার্যকর হবে।
তবে তার আগে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশে একটি সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং উক্ত সালিশি পরিষদ এই জাতীয় পুনর্মিলনীর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি যদি সমাধানযোগ্য হয়, তবে তার সমাধান করতে হবে। এটিই মূলত চেয়ারম্যান বা কমিটির কাজ। চেয়ারম্যানকে নোটিশ প্রদানের কারণ এটাই।
একই আইনের ৯ ধারায় আছে, কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে পর্যাপ্ত ভরণ-পোষণ বা খোরপোষ দানে ব্যর্থ হলে বা একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে তাদের সমান খোরপোষ না দিলে, স্ত্রীরা চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিশি পরিষদ গঠন করবে এবং ওই পরিষদ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ প্রদানের জন্য টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে সার্টিফিকট জারি করবে। স্বামী যদি ভরণ পোষণের কোনো টাকা যথা সময়ে বা সময়মতো পরিশোধ না করে তাহলে তা বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসেবে তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
যেসব কারণে স্ত্রীও তালাক দিতে পারে
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী একজন স্ত্রী কী কী কারণে স্বামীকে তালাক দিতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছে । কারণগুলো হলো- ১. যদি চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে, ২. দুই বছর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হয়। ৩. স্বামীর সাত বৎসর কিংবা তার চেয়েও বেশি কারাদণ্ডাদেশ হলে। ৪. স্বামী কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময় ধরে (তিন বছর) দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে। ৫. বিয়ের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন থাকলে ৬. স্বামী যদি দুই বছর পাগল থাকে অথবা কোনো গুরুতর ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে ৭. স্বামীর ধারাবাহিক নিষ্ঠুরতার কারণেও স্ত্রী তালাক দিতে পারে।
No comments:
Post a Comment