টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রন জানায় ওমান। তামিমের ১০৩ রানের উপর ভর করে ওমানের বিপক্ষে ২ উইকেটে ১৮০ রান করে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের শুরুতেই সতর্কতার সাথে শুরু করেন তামিম-সৌম্য জুটি। প্রথম ৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ১৯। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে লালচিতাকে চার মেরে প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে টি২০ তে হাজার রানের কোটা পূর্ণ করেন তামিম ইকবাল।
অপরপ্রান্তে শুরু থেকেই সপ্রতিভ ছিলেন না সৌম্য সরকার। তামিম যখন চার-ছয়ের ফুলঝুঁড়ি ছুটিয়েছেন তখন অন্যপ্রান্তে রান নেবার জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে সৌম্যকে। শেষ পর্যন্ত দলীয় ৪২ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লালচিতার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন সৌম্য সরকার।
এরপর সাব্বিরকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের স্কোরটা এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তামিম। তবে ওমান বোলারদের আটোসাট বোলিংয়ের সামনে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না এই দুই ব্যাটসম্যান। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭০/১। শেষ ১০ ওভারে তামিম-সাব্বিররা মিলে সংগ্রহ করেন ১১০ রান।
উইকেটে এসে কিছুটা সময় নিলেও খুব তাড়াতাড়িই ছন্দে ফিরেন সাব্বির। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে কলিমকে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। ৩৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করা তামিম পরের বলেই বোলারের উপর দিয়ে মানে বিশাল এক ছয়। ওই ওভারেই একশ রানের ঘরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
১৬তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অসাধারণ খেলতে থাকা সাব্বির রহমান। আউট হবার আগে ২৬ বলে ৪৪ রান করেন সাব্বির। বাছাইপর্বের গত দুটি মাচের মতো এই ম্যাচেও রুদ্রমূৃর্তি ধারণ করেছেন তামিম। হাফ সেঞ্চুরির পর আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেন তিনি। অর্ধশতক করার আগে একটি ছয় ও ৭টি চার মারেন তামিম। সেখানে পরের পঞ্চাশ রানে আরো ৪টি ছক্কা হাঁকান দেশ সেরা এই ব্যাটসম্যান।
এবারের বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৮৩ রান করেন এই বামহাতি ওপেনার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ম্যাচেও ৪৭ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেন তামিম। এই ম্যাচে তামিম ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকেই। ১৯তম ওভারে বেলাল খানের বলে চার মেরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টি২০ তে সেঞ্চুরি পান তামিম।
অপর প্রান্তে ঝড় তোলেন সাকিবও। ৯ বলে ২টি চার ও একটি ছয়ে ১৭ রান করেন সাকিব। ওমানের হয়ে লালচিতা নেন একটি উইকেট। সামনে লক্ষ্য ১৮১ রান। জিততে হলে প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করতে হবে একথাটা জানত ওমান। কারণ ক্রিকেটের নবীনতম দল হিসেবে ১৮১ রান তাড়া করে জেতাটা তাদের জন্য বেশ কষ্টকর। আর সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে দলটি। প্রথম ওভারেই জিসান মাকসুদকে ফিরিয়ে দিয়ে হাত দুটোকে পাখির ডানা বানিয়ে উদযাপন করেন তাসকিন। এরপর দলীয় ১৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ওমান।
আল-আমিনের বলে মাশরাফির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন খাওয়ার আলী। আউট হওয়ার আগে ৮ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। এরপর সপ্তম ওভারের খেলা শুরু হবার আগে আবার শুরু হয় বৃষ্টি। মিনিট বিশেক পর বৃষ্টি থামলেও তার মিনিট খানিক বাদে আবার বৃষ্টি শুরু হয়। ততক্ষণে অবশ্য বেশ খানিকটা এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কারণ ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১৯ রানে এগিয়ে ছিল টাইগারাররা।
বৃষ্টি থামলে ওমানের লক্ষটা বেড়ে দাড়ায় ১৬ ওভারে ১৫৪ রান। যার অর্থ বৃষ্টি শেষ পর ৫৪ বলে ১১১ রান করতে হতো ওমানের। তবে অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে রান আউট হয়ে ফিরে যান আদনান ইলিয়াস। আদনান আউট হবার পর জয়ের স্বপ্নটা প্রায় ফিকে হয়ে আসে ওমানের। আদনানের পরপরই আউট হন আমীর কলিম। এরপর আবার শুরু হয় বৃষ্টি।
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে ওমানের জন্য জয়ের লক্ষ্যটা আরো কঠিন হয়ে হয়ে যায়। নতুন লক্ষ্য দাড়ায় ১২ ওভারে ১২০ রান। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে মাত্র ৬৫ রান রান তুলতে সক্ষম হয় ওমান। সবোর্চ্চ ২৫ রান করেন জিতেন্দ্র সিং। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব চারটি উইকেট নেন। ১৯ মার্চ ইডেনে মূলপর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে মাশরাফিরা।
No comments:
Post a Comment