ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলায় ১৮ আসামির বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর এ সম্পূরক অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মো. শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু ও ফাহিমা ইসলাম লোপা। এদের মধ্যে প্রথম চারজন শুরু থেকে পলাতক ও শেষের দুইজন জামিনে যেয়ে পলাতক হয়েছেন।
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) উত্তম কুমার বিশ্বাস মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে আগের ১১ আসামির সঙ্গে আরও সাতজনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে সম্পুরক চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্ত ১৮ আসামি হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, মো. সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, মো. চুন্নু মিয়া, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. সাহিদুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, মো. জাহাঙ্গীর মন্ডল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মো. শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু, তুহিন রহমান ফাহিম, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশ রুমী, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, মো. সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মো. মামুন উর রশীদ। এছাড়া, এসএম জাহিদ সিদ্দিক তারেক ওরফে কিলার তারেক, মো. মাহবুবুল হক হিরক, জাহিদুল ইসলাম টিপু, আবুল মোনায়েম মোহাম্মদ আমিনুল এহসান বাবু ওরফে টমেটো বাবু ওরফে ডিস বাবু, এনামুল হক, মাসুম উদ্দিন, আহকাম উল্লাহ, ওয়াহিদুল আলম প্রকাশ আরিফ ভূঁইয়া ও তানজিম মাহমুদ তানিমকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া ৭৫ জনকে সাক্ষি করা হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক কাজেমুর রশিদ ১১ জনের বিরুদ্ধে প্রথমবার চার্জশিট দাখিল করেন।
ওই চার্জশিটে এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে ফাহিম, রুমি, রাশেদ, নরুজ্জামান, সুজন, টিপু ও ওয়াহিদুল আলম আরিফের নাম বাদ পড়লে মামলার বাদী ৬ জুন আদালতে নারাজি দেন।
নারজীতে বলা হয়, তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটিকে ভিন্নদিকে প্রভাবিত করতে মূল আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে জাহিদুল ও ওয়াহিদুলকে বাদ দেয়া হয়েছে। আমার ভাই হত্যার পরিকল্পনায় ছিলেন জাহিদুল। আর ঘটনার সময় আশপাশে ছিলেন ওয়াহেদুল। অথচ তাদের নাম বাদ দেয়া হলো। আমরা ধরে নেব, যারা তাদের নাম বাদ দেয়ার কলকাঠি নেড়েছে, তারাও আমার ভাই হত্যায় জড়িত। ভবিষ্যতে তারাও এ মামলার আওতাভুক্ত হতে পারে।
এর প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৭ জুন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ তারেক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়া মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। প্রায় এক বছর তদন্তের পর ফের চার্জশিট দাখিল করা হয়।
২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড মার্কেটের ফটকে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী। এ ঘটনায় র্যাব যুবলীগ নেতা জাহিদ সিদ্দিকী তারেককে উত্তরার একটি হাসপাতাল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে। নিহতের ছোট ভাই মেজর রাশেদুল হক খান গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
No comments:
Post a Comment