Social Icons

Thursday, August 31, 2017

দ.আফ্রিকায় অর্থনৈতিক মন্দা; ফিরে আসছে অনেক বাংলাদেশি


আফ্রিকা মহাদেশের প্রধান শিল্প প্রধান ও সম্পদশালী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার নাগরিক জীবিকা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সন্ধানে ছুটে যায় দেশটিতে। বাংলাদেশ থেকেও প্রায় দেড় লাখের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে সেখানে। যাদের অধিকাংশই অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করে ব্যবসা বাণিজ্য করছে দীর্ঘ দিন ধরে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা আর মুদ্রামানের দরপতন থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সুদিন হারিয়েছে ব্যবসায়ীরা। যার বড় ধরণেল প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের । অতিরিক্ত উপার্জন আর বেঁচাকেনা না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে বহু বাংলাদেশি ফিরে আসছে দেশে। স্বপ্ন আর বাস্তবতার এই বিস্তর ফাঁরাকে কেউ কেউ সর্বস্ব হারিয়ে আত্মহত্যার মত পথও বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
কিন্তু কি এমন কারণ যার জন্যে দ. আফ্রিকা থেকে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের? ভুক্তভোগী এমনই একজন প্রবাসী ব্যাক্তির সন্ধান মিলল ঢাকার দোহারে। যার নাম মোযাফফর হোসেন। যিনি অনেক স্বপ্ন আর বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে চার মাস আগে দ.আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। নিজের এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ. আফ্রিকায় কেপটাউন শহরে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের দোকান দেন। যেখানে তিনি পাঁচ লাখের মত বাংলাদেশি টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু সারাদিনে যে পরিমান বেঁচা-কেনা হয় তাতে তিনি দেখেন যে তার থাকা-খাওয়াটা কোনভাবে চলে যায়। দেশে টাকা পাঠানো আর হয়না। এমন পরিস্থিতি দেখে এক পযায়ে তিনি দোকান বিক্রি করে চলে আসেন দেশে। ঢাকার মোযাফফরের মতো মানিকগঞ্জের আমজাদ ও ফারুক হোসেনেরও অবস্থা একই। অতিরিক্ত মুনাফা আর ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে দ.আফ্রিকায় গিয়েছিলেন প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনা আর দেশটির সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক দুর্দশায় তাদেরকে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হতে হয়।
সম্প্রতি দেশটির অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে হাজার হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে। কারণ দ. আফ্রিকায় শতকরা ৮০ ভাগ প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িত। যাদের কেউ দোকান মালিক আবার কেউ সেই দোকানের কর্মচারী। বাকী ২০ ভাগ বাংলাদেশি দেশটিতে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। বাংলাদেশ থেকে যেসব শ্রমিক দক্ষিণ আফ্রিকায় যায় তাদের শতকরা ৮০ ভাগ দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে দোকান ভাড়া নিয়ে বা ক্রয় করে ব্যবসা করে। আর যাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তারা যৌথভাবে দেশটির শহরে ব্যবসা করছে। মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিরা দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান, কেপটাউন, জোহানেসবার্গ কিংবা প্রিটোরিয়ার মত প্রশাসনিক রাজধানীতে ব্যবসা করে থাকে। এভাবে ব্যবসা গুটিয়ে বাংলাদেশিদের দেশে ফিরে আসার কারণ জানতে চাইলে প্রবাসী সাংবাদিক আলম আল-আমিন ভয়েস বাংলাকে জানান, দুটি কারণে মূলত প্রবাসী ব্যবসায়ীরা দেশে ফিরে যাচ্ছে, তার মধ্যে প্রথমটি হলো- সাম্প্রতিক সময়ে দ.আফ্রিকার অর্থনৈতিক মন্দা ও মুদ্রামানের নিম্নগতি এবং দ্বিতীয়টি হলো ডাকাতদের অত্যাচার ও লুটপাট।
এর বাইরে তিনি আরও জানান, প্রবাসী বাংলাদেশি হত্যা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হওয়ার পেছনে আর যে কারণটি গুরুতর, তা হলো নারী ঘটিত ব্যাপার । বেশিরভাগ প্রবাসী ব্যবসায়ী বিশেষ করে যারা শ্রমিক হিসেবে প্রবেশ করে দেশটিতে ব্যবসা করছে, তারা দেশটির মেয়েদের সাথে এক ধরণের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়ে নির্মম অত্যাচার কিংবা জীবন হারাতে হয়েছে।তবে ভিন্ন চিত্র রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অনেকেরই। যারা দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বানিজ্য করছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কেপটাউন শহরে ব্যবসা করছেন ঢাকার দোহারের সাইফুল ইসলাম। যিনি এখন পরিবার নিয়ে সেখানে ব্যবসা বানিজ্য করছেন। ভয়েস বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘সার্বিক দিক বিবেচনা করলে আসলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তবে অনেকেই আবার ভালো অবস্থানে রয়েছে। ৯৬ এর প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিল তাদের অনেকেই খুব ভাল অবস্থান করে নিয়েছেন। সেখানে বাড়ি, গাড়ি, বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আবার অনেকেই স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে আগে যে পরিমান ইনকাম ছিল এখন সে পরিমান নেই।
তার কারণ হিসেবে তিনি জানান, দেশটির মুদ্রামান, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রবাসী দেশটিতে প্রবেশ করা।তবে এখন যারা যাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে গিয়ে সে টাকা তুলতে না পারায় হতাশ হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে দ.আফ্রিকায় বাংলাদেশ দূতাবাস চালু হলেও কূটনৈতিক তৎপরতা না থাকায় বৈধভাবে শ্রমিক প্রবেশের কোন অনুমতি আজও মেলেনি। যার কারণে লাখ লাখ টাকা খরচ করে এজেন্টদের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশ করছে বাংলাদেশি শ্রমিকরা। তারপর সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে এসব প্রবাসীরা।
তবে সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটির দাবি, যদি বাংলাদেশ সরকার এবং দূতাবাস তৎপর হয় তাহলে দেশটিতে অবস্থানরত দেড় লক্ষাধিক প্রবাসীর জীবনমানের একটা নিশ্চয়তা তৈরী হবে, তৈরী হতে পারে নতুন কোন শ্রমবাজার। এতে বৈধভাবে দেশে রেমিটান্স পাঠানো সম্ভব হবে, ফলে বেড়ে যাবে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ।

ইতালির ভারি শিল্পে ধস; ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা

এক সময়ের অন্যতম ধনী দেশ ইতালি বর্তমানে  ইউরোপের অনেক দেশের অর্থনীতির থেকে পিছিয়ে পড়েছে । মূলত অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়া দেশটি এখনও আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি। এর ফলে ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসীরাও অনেক বছর ধরে দুর্দিনের মধ্যে জীবনযাপন করছে। ইতালিতে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে বেশিরভাগই রেস্টুরেন্টে চাকরি করেন। এছাড়া অনেকেই জাহাজ নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন মেটাল ফ্যাক্টরিতেও কাজ করেন। বাকী যারা আছেন তাদের অনেকেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
মূলত ইতালিতে যারা বিভিন্ন চাকরির সঙ্গে জড়িত তাদের বেতন অনেক কম। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে অবৈধ শ্রমিক ঢুকছে ইতালিতে, এটাও অন্যতম একটি কারণ।  ফলে চাকরির বাজার হয়ে পড়ছে অস্থিতিশীল। মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে অনেককেই সমপরিমাণ টাকা ইতালি সরকারকে ট্যাক্স হিসেবেও দিতে হয়। এক সময়ের শিল্পোন্নত দেশ ইতালি ভারি শিল্পের অন্যতম উৎপাদন ক্ষেত্র ছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে তাদের টিকে থাকাটা এক ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশেষ করে চীনের তৈরি পণ্যের মূল্য অনেক কম হওয়ায় ইতালির পণ্য গুণগত মানে ভালো হয়েও টিকতে পারছে না। এ ধরণের নানাবিধ কারণে ইতালির অনেক ভারি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।  অন্যদিকে চীনা তৈরি পণ্যের জয়জয়কার পৃথিবীব্যাপী। আবার তাদের পণ্যের উৎপাদন খরচও অনেক কম। তারা কম মূল্যে পণ্য উৎপাদন করে বিশ্ব বাজার ধরে ফেলছে। ফলে দিনকে দিনকে তাদের পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে।  এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের মত দেশগুলোর অভিবাসী শ্রমিকদের উপর। বৈধ বা অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। তাদেরকে টিকে থাকতে ইতালিতে অনেক কম বেতনে বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশি কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী খোকন প্রায় পাঁচ বছর ধরে ইতালিতে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইতালিতে আসার আগে প্রায় আট বছর বাহরাইন ছিলাম। ওখানে অনেক ভালোই ছিলাম। কিন্তু চিন্তা করলাম ইউরোপে গেলে আরো ভালো থাকতে পারবো । তখন ইতালির অবস্থা ভালোই ছিল। তবে যখন ভিসা হাতে পেলাম তখন বুঝলাম ইতালির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তবে ইতালিতে পার্মানেন্ট হতে পারলে ইউরোপের অনেক দেশে গিয়েই বসবাস করা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্রেক্সিট  পূর্ববর্তী সময়ে যেমন ব্রিটেন যাওয়ার প্রবণতা ছিল অভিবাসী বাংলাদেশিদের। আর এখন এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে জার্মানি অভিমুখী। কিন্তু কোথাও গিয়ে এখন আর স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না।’
অন্যদিকে ইতালিতে যেসব বাংলাদেশি অভিবাসী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা অনেকটা নিরাপদ জীবনযাপন করে থাকেন। তারপরও তারা তাদের বাড়ি গাড়ি ফেলে ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন ব্রিটেন বা জার্মানিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মূলত ইতালির ব্যবসা বাণিজ্যেও আগের মত নিশ্চয়তা আর নেই। ফলে এখন প্রবাসীরা নিরাপদ জীবনের সন্ধানে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে বেড়ান।
ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি খোকন ভয়েস বাংলাকে আরো জানান, ‘সত্যি বলতে ভারি শিল্পের দেশ ইতালিতে নিয়মিত ভাবেই শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। মূলত চীনা পণ্যের কারণে ইতালির ভারি শিল্পে এসেছে দুঃসময়। শিল্পোন্নত ইতালির উৎপাদন ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়ার একটি অন্যতম কারণ এটি। যার প্রভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা হয়ে পড়ছে বেকার’।
এ ধরণের বিভিন্ন কারণে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতি মূহুর্তেই অনিশ্চয়তায় ভোগে। ইতালির মানবাধিকার ব্যবস্থা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো হলেও এখানে বর্ণবাদী মানসিকতাও এখন চোখে পড়ে। এক সময়ের শিল্পোন্নত দেশ ইতালি যেমন ধুঁকছে, তার সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ধুঁকছে প্রতি মূহুর্তের বিপন্নতাকে সঙ্গী করে।

জাপানে বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু; শ্রমবাজারে নতুন সম্ভাবনা

মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন কারণে শ্রমবাজার ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সৌদি-কাতার দ্বন্দ্ব, সৌদি আরবের শ্রমবাজার সৌদিকরণসহ অন্যান্য কারণে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও অন্য দেশগুলোর শ্রমবাজারে দৃষ্টি দেয়া এখন অনেকটাই সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সূত্র ধরেই জাপানের শ্রমবাজারের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে, জাপান বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়া শুরু করেছে। তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ১৭ জনের প্রথম ব্যাচটি ৩০ আগস্ট জাপান গিয়েছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) জানিয়েছে, বিদেশে চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধনকৃতদের মধ্যে থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রাথমিক অবস্থায় ৫০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। পরে গণিত ও জাপানি বর্ণমালা পরীক্ষা এবং শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে আইএম জাপানের প্রতিনিধিরা প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিংয়ের জন্য চূড়ান্তভাবে ১৭ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন নির্বাচিত করেন। প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং সম্পন্নকারী ১৭ জনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০ জন ৩০ আগস্ট জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে ৩ বছরের চুক্তিতে গেছেন। বাকি ৭ জন আগামি অক্টোবরে জাপান যাবেন। টেকনিক্যাল ইন্টার্নদের কর্মক্ষেত্রে সফলতা ও কোম্পানির চাহিদার ভিত্তিতে এ চুক্তি আরও ২ বছরের জন্য নবায়ন হতে পারে। জাপানের কোম্পানিগুলোর চাহিদার ভিত্তিতে ২য় ব্যাচে আরও ৩০ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠানোর লক্ষ্যে এরইমধ্যে প্রাথমিক বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং অক্টোবরে শুরু হবে। জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণ সংক্রান্ত এ প্রক্রিয়া জাপানের কোম্পানিসমূহের চাহিদার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে চলমান থাকবে। জাপানে কোম্পানি ভেদে টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা মাসিক ৬৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এর বাইরে অতিরিক্ত কাজের জন্য তারা আলাদাভাবে ভাতা পাবেন। ৩ বছর শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ সফলভাবে সমাপ্তির পর টেকনিক্যাল ইন্টার্নদেরকে দেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থানসহ নতুন ব্যবসা শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট জাপানের কোম্পানি ৪ লাখ টাকা করে দেবে। আর ৫ বছর শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্নকারীদের কোম্পানি ৬ লাখ করে টাকা দেবে। তবে এজন্য কিছু শর্ত রয়েছে।
টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা নিয়োগ দেয়া কোম্পানি থেকে পালিয়ে অন্য কোন কোম্পানিতে যোগ দিতে পারবে না এবং সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়া যাবে না। টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা জাপানের আইন যথাযথভাবে মেনে প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরলে তাদের জন্য আইএম জাপান দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ফলে এই প্রথম ব্যাচের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে, জাপান আরও কত সংখ্যক টেকনিক্যাল ইন্টার্ন নেবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এখনই জাপানের শ্রমবাজারের ব্যাপারে অতিরিক্ত আশা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। গত ১০ বছরে মাত্র ৩০০ টেকনিক্যাল ইন্টার্ন নিয়েছে জাপান। সম্প্রতি বিদেশি কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে নতুন আইন করায় এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশটিতে শ্রমবাজার খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ সরকার। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহৎ শ্রমবাজারগুলো বন্ধ থাকা এবং বাকিগুলোতে শ্রমিক যাওয়ার হার কমে আসায় নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু হয় জাপানের বাজার নিয়ে। ২০২০ সালে জাপানের টোকিও-তে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অলিম্পিক গেমসের আসর। এ আসর উপলক্ষে দেশটিতে প্রচুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এসময় দক্ষকর্মী পাঠিয়ে এ দেশের বাজার ধরতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু জাপানের শ্রমবাজারে প্রবেশ করা বাংলাদেশের জন্য কষ্টসাধ্য। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশ যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের বেশির ভাগই অদক্ষ। জাপানে এ ধরনের কর্মীর কোনো দরকার নেই। তবে বছরে যে অল্প সংখ্যক টেকনিক্যাল ইন্টার্ন দেশটি বাংলাদেশ থেকে নিয়ে থাকে, সেই সংখ্যা কিছুটা বাড়াবে দেশটি। তবে এখানেও আশার কিছু নেই। সেই সংখ্যা খুবই সামান্য।
তবে বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তিতে অসামান্য উন্নতি করায় বাংলাদেশ থেকে জাপানে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ নেয়া সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। গত ২২ আগস্ট জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের জনসম্পদ শীর্ষক সেমিনারেও একই রকম আশা প্রকাশ করেছেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। সেমিনারে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মেধাবী ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ অনেক জনবল রয়েছে। তাদের জাপানি কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে, তা দুই দেশের জন্যই কল্যাণকর হবে।

ধর্মগুরু রাম রহিম সিংয়ের ডেরা থেকে ১৮ নাবালিকা ও বিপুল পরিমাণ কনডম উদ্ধার


নারী ধর্ষণের মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম সিংয়ের বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা কর্মকাণ্ড সামনে আসতে শুরু করে ২৫ আগস্ট শুক্রবার ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণার পর থেকে। তবে এবার বেরিয়ে এসেছে গুরুর আস্তানার ভেতরের নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য ও সেখানে কীভাবে তিনি অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালাতেন তার বর্ণনা।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য সামনে এনেছেন ওই মামলার প্রধান তদন্তকারী সিবিআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম নারায়ণন। ধর্ষণ মামলায় গুরমিতের জেল হওয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় তার ডেরায়। সেখান থেকে ১৮ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের ওপরেও যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গেছে।

নারায়ণন জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০২ সালের মধ্যে শুধুমাত্র যৌন নির্যাতনের কারণেই ডেরা ছেড়ে গিয়েছিলেন দুই শতাধিক নারী। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে খুঁজে পেয়েছে সিবিআই। তাদের মধ্যেও মাত্র দু’জন আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। বাকিরা মুখ খুলতে চাননি।
তিনি জানান, রাম রহিমের ভাণ্ডারে লেক্সাস, রেঞ্জ রোভারের মতো বিলাসবহুল গাড়ির সংখ্যা একাধিক। বিশাল বিশাল ঘরের অধিকাংশ জায়গাই খাঁটি সোনায় মোড়া। এখান থেকেই রাজকীয় হালে নিজের সাম্রাজ্য পরিচালনা করতেন ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত গুরমিত রাম রহিম সিং। গুরমিতের গোপন গুহা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর পরিমাণ কনডম, গর্ভনিরোধক বড়ি, অশ্লীল সিডি, ভিডিও এমনকি সেক্স টনিকও।

একেবারে মনের মতো করে ডেরায় পরিবেশ সাজিয়েছিলেন রাম রহিম। তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণন আরও জানান, নিজের গোপন গুহায় সুন্দরী অল্পবয়সী সাধ্বীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতেন বাবা। তার ব্যক্তিগত পরিচর্যার দায়িত্বে থাকতেন এই সাধ্বীরাই। কিন্তু অনেক সময় তাতেও মন ভরত না বাবার। ঠিক রাত ১০টার সময় ফোন যেত প্রধান সাধ্বীর কাছে। ‘আবদার’ থাকত নতুন তরুণী সাধ্বী পাঠানোর।
তিনি বলেন, ডেরার সকলেই জানত এ বিষয়ে। কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতেন না কেউ। সামাজিক কাজকর্মের আড়ালে স্বেচ্ছাচার চালাতেন ভণ্ড বাবা। নারায়ণনের ভাষ্য, ‘ও মানসিক রোগগ্রস্ত। জন্তু ছাড়া আর কিচ্ছু নয়।’

শুধু ধর্ষণ মামলাই নয়, রাম রহিমের মাথার ওপর ঝুলছে দু’টি খুনের মামলাও। ২০০২ সালে ধর্ষণের কথা জানিয়ে দুই সাধ্বী চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটোলবিহারী বাজপেয়ীকে। ওই দুই সাধ্বীর মধ্যে একজন ছিলেন ডেরা ম্যানেজার রঞ্জিত সিংহের বোন। ‘দেশ সেবক’ নামের একটি পত্রিকায় এই চিঠি প্রকাশ করেন সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি। অভিযোগ, এরপরেই রঞ্জিত সিংহ এবং ছত্রপতিকে খুন করান রাম রহিম। আগামী মাসেই শুরু হবে সেই মামলার শুনানি।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

যেভাবে পর্নোগ্রাফি দিয়ে খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে জীবন

অনলাইনে পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতার ফলে পুরো পৃথিবী জুড়ে বহু মানুষের বিনোদনের খোরাক এখন পর্নোগ্রাফি। পর্ন সিনেমার অভিনেত্রীরা মেকআপ, লাইট ও ক্যামেরার সাহায্যে কৃত্রিম আচরণ ও সৌন্দর্য দিয়ে পূর্ণ করছেন মানুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা। তবে এই পর্নোগ্রাফি দিয়ে খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে একটি জীবন। পর্ন সিনেমার যৌন আচরণ আর বাস্তব জীবনের যৌন মিলনের মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। কিন্তু পর্নোগ্রাফির কৃত্রিম আচরণ, অনুকরণ করে যখন কেউ তা নিজের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন ঠিক তখনি তাকে অসুখী হয়ে পড়তে হয় এবং ব্যর্থতার গ্লানি চলে আসে নিজের জীবনে, যার প্রভাব পড়ে মানুষটির ব্যক্তিগত যৌন জীবনে।
এ সম্পর্কে পর্ন স্টার লুসি বেই বলেন- ‘পর্নোগ্রাফিতে নিখুঁত যৌন মিলন দেখা গেলেও বাস্তব জীবনে সেই নিখুঁত যৌন মিলন খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। পর্নোগ্রাফির যৌনতা শুধুমাত্র কিছুক্ষণ দর্শকদের আনন্দ দেওয়া।’
এ দিকে পর্নোগ্রাফির অনুকরণ নিয়ে আরেক পর্ন তারকা রয়ান জেমস বলেন- ‘পর্দায় ভালো লাগার জন্যই পর্নোগ্রাফির যৌন আচরণগুলো নিখুঁত ভাবে দেখানো হয়। তবে এটা কখনই ব্যক্তিগত মিলনে সুখ এনে দেবে না। ব্যক্তিগত মিলনে সুখের জন্য প্রয়োজন সঙ্গী ও নিজের ভালোলাগাকে প্রাধান্য দেওয়া।’

 সূত্র: ডেকান ক্রনিকল।

খালুকে আসামী করে ধর্ষণের মামলা দায়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তারই খালুর বিরুদ্ধে। ৩০ আগস্ট বুধবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বাদী হয়ে খালুর বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে করেছে। মামলাটি আমলে নিয়ে ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, দুই মাস আগে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে নির্জন বনে নিয়ে প্রথমবার ধর্ষণ করে ওই ছাত্রীর খালু। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে গত ৭ জুলাই ওই ছাত্রী বাড়িতে একা থাকাকালীন খালু কর্তৃক আবারও ধর্ষণের শিকার হয় ওই ছাত্রী। পরে মেয়েটি তার মা-বাবাকে ঘটনাটি খুলে বলে। তার মা-বাবা বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুর রউফ তালুকদারকে জানালে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু অভিযু্ক্ত ব্যক্তি তাতে সাড়া দেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ছাত্রীর মা বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ধর্ষণের শিকার হলে মেয়ে আর বিদ্যালয়ে যেতে চায়নি। ইউপির সদস্য আবদুর রউফ তালুকদার জানান, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে, সে এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, দাদনের ব্যবসাও রয়েছে তার। অভিযোগ পেয়ে তাকে কয়েকবার ডাকলেও সে আসেনি।
অভিযোগের অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, ঘটনাটি শুনছি। এটা খুবই লজ্জার। ঘটনাটি সত্য না মিথ্যা, তা বুঝতে পারছি না। তবে আমার স্বামী অপরাধ করলে আমি তার বিচার চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সখীপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তারকা হোটেলে মানুষের মাংসের রেসিপি – ফাঁস হল রহস্য


খেতে গিয়েছেন ঝাঁ চকচকে তারকা ক্যাটেগরির রোস্তোরাঁয়। মনের আনন্দে খুলেছেন মেনু। পাতা ওল্টাতেই চোখ উঠলো কপালে। একটি খাবারের নাম ‘মৃত পল’। আঁতকে উঠে টেবিল ছেড়ে পালাবেন, নাকি পলের মৃতদেহের উপরে কাঁটা-চামচ চালাবেন, সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষেরই এমন মেনুর-বর্ণনায় আত্মা খাঁচাছাড়া হয়ে যাওয়ার কথা।
এমনটাই ঘটেছে ইরাকের কুর্দিস্তানের এক মহার্ঘ্য রোস্তোরাঁয়। সেখানকার রাজধানী এরবিলের বিখ্যাত হোটেল এরবিল ইন্টারন্যাশনাল-এর মেনুতে এই চমকে যাওয়া রেসিপি’র নাম জ্বলজ্বল করছে বলে জানিয়েছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। খবর মোতাবেক, এই হোটেলের রেস্তোরাঁয় ‘পল ইজ ডেড’ নামে একটি খাবার পাওয়া যাচ্ছে, যাকে নিয়েই এই বিভ্রান্তি।
কিন্তু কী এই খাবার? সত্যিই কি পল নামের কোনও ব্যক্তির মৃতদেহের সঙ্গে এই খাবার সংশ্লিষ্ট? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তত্ত্ব-তালাশ করে জানা গিয়েছে, এই ভয়ানক নামের খাবারটি আর কিছুই নয়, নেহাতই নিরীহ মিটবলস বা সাদা বাংলায় মাংসের বড়া। আর অবশ্যই সেই মাংস চিকেন, মটন কিংবা দুম্বার। নর মাংসের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্কই নেই।
তা হলে কেন এমন নাম? খোঁজখবর নিয়ে জানা গিয়েছে, মেনুকর্তারা মেনু লেখার সময়ে ‘মিটবল’ শব্দটির আরবি প্রতিশব্দ খুঁজছিলেন। ট্রানশ্লেটরে শব্দটি ফেলতেই অনুবাদে যা ভেসে আসে, তা হলো, ‘মাইত বাউল’। আরবি ভাষায় এই শব্দবন্ধের অর্থ— ‘মৃত পল’। আর সেই নামেই এই জনপ্রিয় খানাটিকে মেনুতে তুলে দেন রেস্তোরাঁর কর্তারা। হেন্ড অ্যামরি নামের জনৈকা টুইট করে বিষয়টা সবার নজরে আনেন। ভাইরাল হয়ে যায় তাঁর টুইট।
‘মৃতের মানুষের মাংসের বড়া ভাজা’ নিয়ে ভয়ানক সব ফচকেমি শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

জানেন কি যেসব কারণে কোরবানি দিলেও কোরবানি হবে না


কোরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ আর ঈদ শব্দের অর্থ খুশি। অতএব ঈদুল আযহা অর্থ কোরবানির খুশি। এই কোরবানির দিনে আল্লাহর উদ্দেশ্যে জানোয়ার (পশু) জবাই করা হয়। এর দ্বারা মালের ত্যাগ স্বীকার করা হয়। এই মালের কোরবানি দিতে পারার মধ্যে মুমিনের একটা আনন্দবোধ থাকে। এজন্যই একে কোরবানির ঈদ বলা হয়।
ইসলামে অনেক ধরণের কোরবানির বিধান রয়েছে। এক ধরণের কোরবানি হল জানের কোরবানি। যেমন, নামায, রোজা, হজ্ব, জিহাদ ইত্যাদির বিধান। আর এক ধরণের কোরবানি হলো মালের কোরবানি। যেমন, যাকাত, ফিতরা, কোরবানি, দান, সদকা ইত্যাদির বিধান। এসব বিধান পালনের মাধ্যমে মালের কোরবানি দেওয়া হয়।
কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব। অধিকাংশ মুসলমান ব্যক্তি এই ঈবাদত পালন করতে চান। এ কারণে আনন্দের সঙ্গেই সাধ্যমত কোরবানি দিয়ে থাকেন। কিন্তু ইসলাম বা কোরবানি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকায় মনের অজান্তেও এই ঈবাদত যথাযথ ভাবে হয় না। তাই কোরবানি দিলেও বেশ কিছু কারণে না হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
বেশ কিছু কারণ নিম্নে তুলে ধরা হল:
১) জানোয়ার (পশু) জবাই করার মাধ্যমে মালের কোরবানি হবে সেই সাথে মনেরও কোরবানি হবে। এই কোরবানি জন্তু জবাই করতে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় হয়। এই অর্থের প্রতি মনের যে মায়া সেই মায়াকে ত্যাগ করে কোরবানি করতে হবে। তাহলেই কোরবানি সহিহ হবে।
২) কোরবানি করতে গেলে মনের মধ্যে যদি গোশত খাওয়ার চিন্তা চেতনা আসে তাহলে ওই ব্যক্তির কোরবানি সহিহ হবে না।
৩) সুদ, ঘুষ এবং অসৎ টাকায় কোরবানি দিলে কোরবানি সহিহ হবে না।
৪) কোরবানির জন্তু ভাগে ক্রয় করলে অংশিদারদের মনের ভিতর কোন প্রকার গোশত খাওয়া বা অন্য কোন গলদ ধারণা থাকলে কোরবানি সহিহ হবে না।

- হাফেজ মাওলানা শিহাব উদ্দিন

রামপুরায় কিশোরী গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ


রাজধানীর রামপুরায় এক কিশোরী গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।  বুধবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কিশোরীর স্বামী। রাতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে পুলিশ বলছে, অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়। রামপুরা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ঘটনা সম্পর্কে দুই ধরনের ভাষ্য পাওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
 
গৃহবধূর স্বামী হাসপাতালে জানান, রামপুরার ওয়াপদা রোডের জাহাজ বিল্ডিং এলাকার একটি বাসায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। এ সুযোগে বিকাল ৫টার দিকে স্থানীয় বখাটে দীন ইসলামসহ চার-পাঁচজন বাসায় ঢুকে তার স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণের পর পালিয়ে যায়। পরে তিনি বাসায় ফিরলে ঘটনাটি জানায় স্ত্রী। রাতে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য প্রথমে গাইনি বিভাগে পাঠানো হয়। পরে তাকে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।
 
এদিকে রামপুরা থানা পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূর পুরনো প্রেমিককে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য রয়েছে। গতকালও এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে কিশোরী অভিমান করে ঘুমের ওষুধ খান বলে জানা গেছে। তার প্রেমিকের ওই বাসায় যাওয়া নিয়েও কিছু ঝামেলার কথা শোনা যাচ্ছে। ঘুমের ওষুধের প্রভাবে রাতেও তিনি ভালোভাবে কথা বলতে পারছিলেন না। তবে তার স্বামীর অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
 
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এ ঈদ কার্ড আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে পৌঁছে দেন দলের সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
 
টিপু বলেন, 'বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ ঈদ কার্ডটি আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে আমরা পৌঁছে দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-দফতর সম্পাদক সেকেন্দার আলী মোল্ল্যা ঈদ কার্ডটি গ্রহণ করেছেন। এসময় আরেক সাবেক সহ-সম্পাদক মিজানুর রহমান জনী উপস্থিত ছিলেন।'
 
চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় আছেন তিনি। সেখানে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন।
 
এর আগের দিন বুধবার একইভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ঈদ কার্ড পাঠান।

জাপানের ‘ধ্বংস অতি আসন্ন’ বলে উ. কোরিয়ার হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নেয়ায় জাপানের ‘ধ্বংস অতি আসন্ন ’ বলে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ উত্তর কোরিয়া টোকিওকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। জাপানের ওপর দিয়ে পিয়ংইয়ং ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ায় কোরীয় উপদ্বীপ অঞ্চলের উত্তেজনা অনেক বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটেই উত্তর কোরিয়া এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলো। 
এর আগে, এশিয়ার এ দ্বীপ রাষ্ট্রের ওপর দিয়ে মাঝারি পাল্লার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে বিশ্বব্যাপী একধরণের সতর্কাবস্থা তৈরি করে উত্তর কোরিয়া। দেশটির এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ পিয়ংইয়ংয়ের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে উত্তর কোরিয়ার এ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে ‘নজিরবিহীন হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করে এর কঠোর নিন্দা জানান। তিনি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে চাপ আরো জোরদার করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্মত হন। অপরদিকে উত্তর কোরিয়া ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হবে বলে সতর্ক করেছে।
 এএফপি।
 

Wednesday, August 30, 2017

মক্কায় ৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু


হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে ৭ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত ২৮ আগস্ট সোমবার ও ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার এসব হজযাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোহাগী বেগম (৬৮), তার পাসপোর্ট নম্বর বি কে ০১৪৪৪৫৫। কিশোর গঞ্জের ওয়াসিম উদ্দিন আহমদ(৭৫), তার পাসপোর্ট নম্বর বি কে ০৪১৪৬৯১। বরিশাল জেলার আবদুল মালেক সর্দার(৭৪), তার পাসপোর্ট নম্বর বি এম ০৮৭২৫৮১। দিনাজপুর জেলার মো.আজিজুর রহমান (৬২), তার পাসপোর্ট নম্বর বিএন ০০৩৭০২৮, কুমিল্লা জেলার নুরুল ইসলাম (৮৫), তার পাসপোর্ট নম্বর  বি এফ ০০৬৯৪৫৮। খুলনা জেলার মো. খলিলুর রহমান (৫৪), তার পাসপোর্ট নম্বর ও সি ৮০৬৫০২১। ঢাকা মিরপুরের মো: আমজাদ হোসেন (৬৪), তার পাসপোর্ট নম্বর ও সি ৮০৬৫০২১।
হজের প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রায় ৪০ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৭ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। বাংলাদেশ হজ মিশনের সর্বশেষ তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন মক্কায় পৌঁছেছেন।

অসুস্থ হয়ে সিসিইউতে মোশাররফ করিম


বর্তমানে বাংলা নাটকের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিমের একটি নাটকের শুটিং চলাকালে গত ২৯ আগস্ট রাতে পূবাইলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর দ্রুত তাকে উত্তরার লুবনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
৩০ আগস্ট দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে প্রিয়.কম তার পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য জানতে পেরেছে। জানা গেছে, অসুস্থ হওয়ার আগে ঈদে প্রচারের জন্য নির্মিত ‘জমজ ৮’ নাটকের শুটিং করছিলেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা।
‘জমজ ৮’ রচনা করেছেন অনিমেষ আইচ। নাটকটি পরিচালনায় আজাদ কালাম। এতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, রুমি, শাওনসহ আরও অনেকেই। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিতে ঈদের ৩য় দিন রাত ৮টা ৩০ মিনিটে নাটকটি প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে।
নাটকটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন অরণ্য পাশা। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, পুবাইলে নাটকটির শেষ অংশের শুটিং চলছিল। মঙ্গলবার রাতে মোশাররফ করিম ভাই একটু দেরি করেই শুটিং সেটে আসেন। এরপর রাত ১টার দিকে তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। এরপর পরই দ্রুত তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর রাত ২টার দিকে তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে অরণ্য পাশা আরও জানান, হঠাৎ প্রেসার হাই হওয়াতেই এমনটা ঘটেছে। এখন তিনি আশঙ্কা মুক্ত। তবে বেশ কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে হবে।
এদিকে মোশাররফ করিমের অসুস্থতার কারণে এরই মধ্যে ঈদের আগে তার সমস্ত শুটিং বাতিল করা হয়েছে।

আজ পবিত্র হজ

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা  ওয়াননি’ মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক....মধুধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে পবিত্র আরাফাতের পাহাড় ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত এখন।

সু-উচ্চকণ্ঠ নিনাদের তালবিয়ায় মহান আল্ল­াহ তায়ালার একত্ব ও মহত্ত্বের কথা বিঘোষিত হচ্ছে প্রতি অনুক্ষণ। ‘আমি হাজির। হে আল্ল­াহ! আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধুই তোমার। সাম্রাজ্য তোমারই। তোমার কোনো শরিক নেই।’ শুরু হলো বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মিলন পবিত্র হজ। আরাফাতের আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময় শুভ্রতায় ভরে উঠেছে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজীদের অবস্থানের কারণে সাদা আর সাদায় একাকার। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ পালন করেছেন।

আজ ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত  লক্ষ লক্ষ মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।  ৯ জিলহজ মূল হজের দিন তারা এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরো প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত। মুসলমানদের অতি পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আছরের নামাজ পড়বেন। আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন গ্র্যান্ড ইমাম। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্ল­াহ তা’আলার জিকির আসকার ইবাদতে মশগুল থাকবেন। অতঃপর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশা’র নামাজ এশা’র ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মীনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মীনার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। ১০ জিলহজ মীনায় পৌঁছার পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মীনাকে ডান দিকে রেখে হাজীরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্ল­াহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মীনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। জিলহজের ১১ তারিখ মীনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজীরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের উপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ মীনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজীরা তিনটি শয়তানের উপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মীনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজীদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে ক্বাবা শরীফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ী তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাত্ ক্বাবা শরীফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজীরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

এদিকে গতকাল সারাদিন এবং গত রাতে হজযাত্রীরা মীনায় অবস্থান করেন। সেখানেই শুরু হয় পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতি বছর হজের সময় মুসলিম­দের অস্থায়ী আবাস হিসেবে মীনায় বসানো হয় লাখ লাখ তাঁবু। পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার অদূরের মীনা যেন তাঁবুর শহর। যেদিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। তাঁবুতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ফোম, বালিশ, কম্বল বরাদ্দ। ফোমের নিচে বালু। মীনায় অবস্থান করা হজের অংশ। হজযাত্রীরা নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন।

পবিত্র হজ উপলক্ষে মক্কা, মদীনা, মীনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ও এর আশেপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদী সরকার। মোতায়েন আছে এক লাখের বেশি নিরাপত্তাকর্মী।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বৈঠকে বসতে জাতিসংঘের প্রতি যুক্তরাজ্যের আহবান

মিয়ানমারে রোহিংগাদের ওপর সরকারী বাহিনীর অভিযানে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা পর্যালোচনা করে দ্রুত বৈঠকে বসতে জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এক টুইট বার্তায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বৃটেনের দূত ম্যাথ্যু রিক্রফট বলেন, মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। রাখাইন ইস্যুটিকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত বৈঠকটি হবার কথা রয়েছে। এর আগে সোমবার মানবিক ত্রাণ সরবরাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মিয়ানমারে প্রবেশাধিকার দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতারেস। দেশটির রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ব্যাপারে গভির উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

ক্রেতাদেরও ভিড় বেড়েছে পশুর হাটগুলোতে

 ঢাকা থেকে মোঃ নুর হুসাইন ----- 
ঈদুল আযহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। ক্রেতাদেরও ভিড় বেড়েছে পশুর হাটগুলোতে। তবে রাজধানীর গাবতলী হাটে এবার দেশি গরুই বেশি। আর দামও বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তবে ব্যাপারি, হাট ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন এখন পর্যন্ত গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
কোরবানীর ঈদের আগে এটিই নিয়মিত দৃশ্য। হাট থেকে কেনার পর, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গাবতলী থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া।গাবতলীর পশুর হাট গতকাল পর্যন্ত জমে না উঠলেও ব্যাপারিরা জানিয়েছেন আজ পুরোপুরি জমে উঠেছে এই হাট। সকাল থেকে বেচা-বিক্রিও বেড়েছে।
গাবতলী হাটে এবার বড় সাইজের গরু আকারভেদে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১০-১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। বিভিন্ন জাতের গরুর মধ্যে এবার কুষ্টিয়া থেকে আনা গরুর চাহিদাই বেশি। তবে বন্যা হওয়ার কারণে এবার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু এসেছে কম।
এখন পর্যন্ত পশু সরবরাহ ভাল । তবে ব্যাপারীরা দাম হাঁকাচ্ছেন বেশ। তাই দরদাম করে গরু কিনে কেউ খুশি আবার কেউ একটু অখুশি।
গাবতলী পশুর হাটে এবার ভারত থেকে তেমন একটা গরু আমদানি হয়নি। তবে ঈদের দুই দিন আগে যদি আমদানী করা গরু বাজারে আসে তাহলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ব্যাপারীরা।


জেনে নিন কোরবানির ইতিহাস, শিক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ আমল সমূহ


আলহামদুলিল্লাহ একটি বছর পরে আবার আমাদের মাঝে পবিত্র জিলহাজ মাস ফিরে এসেছে। এই মাসে সমগ্র দুনিয়া থেকে আল্লাহর বান্দাগণ কাবা ঘরের দিকে অভিমুখী হচ্ছে।
একদিকে হাজীরা হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অন্যদিকে আমরা আল্লাহর দেয়া বিধান কোরবানির প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। কোরবানি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে এক বিশেষ অনুগ্রহ। কেননা বান্দাহ কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে। কোরবান শব্দটি কুরবুন শব্দ থেকে উৎকলিত। অর্থাৎ নিকটবর্তী হওয়া, সান্নিধ্য লাভ করা। শরিয়তের দৃষ্টিতে ১০ জিলহজ হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু জবেহ করাকে কোরবানি বলে।
কোরবানির ইতিহাস
মানবসৃষ্টির শুরু থেকেই কোরবানির বিধান চলে আসছে। প্রত্যেক উম্মতের ইবাদতে এ কোরবানি ছিল একটি অপরিহার্য অংশ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির এক রীতিপদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওই সব পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে, যেসব আল্লাহ তাদের দান করেছেন’ (সূরা হজ-৩৪)।
মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম কোরবানি হজরত আদম আ:-এর দুই ছেলে হাবিল ও কাবিলের কোরবানি। আন্তরিকতা ও উদ্দেশ্যের সততার কারণে হাবিলের কোরবানির কবুল হলো, কিন্তু নিষ্ঠার অভাব ও অমনোযোগিতার কারণে কাবিলের কোরবানি আল্লাহর কাছে প্রত্যাখ্যাত হলো।
কোরবানির ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন হজরত ইবরাহিম আ: ও হজরত ইসমাঈল আ:। মহান আল্লাহর জন্য হজরত ইবরাহিম আ:-এর সর্বোৎকৃষ্ট ত্যাগ এবং হজরত ইসমাঈল আ:-এর আত্মোৎসর্গ আল্লাহর কাছে এতই পছন্দ হলো যে, তিনি ইব্রাহিম আ:-কে আপন বন্ধুরূপে (খলিলুল্লাহ) গ্রহণ করলেন। শুধু তা-ই নয়, মহান আল্লাহ তাকে মুসলিম জাতির পিতার আসনে অভিষিক্ত করলেন এবং তার ছেলে ইসমাঈল আ:-এর পবিত্র বংশধারায় সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর উত্থান ঘটালেন। তিনি হজরত ইব্রাহিম আ: ও হজরত ইসমাঈল আ:-এর ত্যাগের ইতিহাসকে চিরঞ্জীব করে রাখার জন্য সর্বকালের সব সচ্ছল মানুষের জন্য কোরবানিকে বাধ্যতামূলক করলেন।
কোরবানির মৌলিক শিক্ষা
আমাদের জীবন, আমাদের সম্পদ সব কিছুই মহান আল্লাহর দান। পরম প্রভুর জন্য প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে পারাই কোরবানির শিক্ষা। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, তার প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত, তারই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা হলো কোরবানি। আমাদের জীবনসম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। কোরবানি দোয়ার মধ্যে মৌলিক যে কথাটি আমরা বলি তা হলো “আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহর জন্য” (সূরা আনআম-১৬২)। মূলত আমাদের জীবন ও সম্পদের মালিক আল্লাহ। এ দুটো জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ঈমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন’ (সূরা তওবা-১১০)। কাজেই জীবনসম্পদ আল্লাহর এবং তা আমাদের কাছে আমানত। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ও তার পছন্দনীয় পথে ব্যয় করাই ঈমানের দাবি। কোরবানি মানুষকে ঈমানের এ দাবি পূরণের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।
কোরবানির প্রাণশক্তি
কোরবানির উদ্দেশ্য আবশ্যই সৎ হতে হবে এবং তাতে ত্যাগের বহিঃপ্রকাশ থাকতে হবে। কোরবানি প্রদর্শন ইচ্ছা ও অহঙ্কারমুক্ত হতে হবে। অনেকেই বাহবা পাওয়ার জন্য ও আলোচিত ব্যক্তিত্ব হওয়ার লক্ষ্যে লক্ষাধিক টাকার গরু বা উট কিনে লাল ফিতা বেঁধে পথে পথে ঘোরান। এটা যেমন ঠিক নয়, তেমনি কোনো সচ্ছল ব্যক্তির জন্য জীর্ণশীর্ণ কম দামি পশু কোরবানিও অনুচিত। এ ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর বাণীর দিকেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন- ‘ওই সব পশুর রক্ত-গোশত আল্লাহর কাছে কিছুই পৌঁছে না, বরঞ্চ তোমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের তাকওয়া তাঁর কাছে পৌঁছে ’ (সূরা হাজ )। এ আয়াত থেকে সুস্পষ্ট, উদ্দেশ্যের সততা ও খোদাভীতি কোরবানি কবুলের শর্ত। পশুটি কত বড় ও কত দামের সেটা আল্লাহর কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। ভোগ নয়, ত্যাগেই আনন্দ- এটিও কোরবানির একটি শিক্ষা। কোরবানির গোশত গরিবদের মাঝে বিতরণ করে তাদের মুখে হাসি ফোটানোও কোরবানির অন্যতম লক্ষ্য। রাসূল সা: কোরবানির তিন ভাগের এক ভাগ গোশত গরিবদের মাঝে বিতরণ করাকে মুস্তাহাব করেছেন। ইচ্ছে হলে এর বেশি; এমনকি সবটাও দান করা বৈধ। কোরবানির গোশত খাওয়া ও সংরক্ষণ বৈধ, তবে তা করতে গিয়ে কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য ‘অন্যের জন্য ত্যাগ’ যেন লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শুধু পশু নয়, পশুত্ব কোরবানি করাও কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য। পশুর রক্ত প্রবাহিত করার সাথে আমাদের ভেতরের পশুত্বকেও কোরবানি করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ আমল সমূহ
কোরবানি সংক্রান্ত একটা বিশেষ মাছআলা হল- ৯ জিলহজ্জ ফজর থেকে শুরু করে ১৩ জিলহজ্জ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। জামাআতে নামায হোক বা একাকী, সর্বাবস্থায় এটা বলতে হবে। পুরুষ হোক বা নারী সকলকে বলতে হবে। তাকবীরে তাশরীক হলো :- أَللّٰهُ أَكْبَرُ أَللّٰهُ أَكْبَرُ لَا إِلٰهَ إلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ أَللّٰهُ أَكْبَرُ وَلِلّٰهِ الْحَمْدُ
ঈদুল আযহার দিনে যে সমস্ত সুন্নাত রয়েছে, সেগুলোও আমরা খেয়াল করে আমল করি। ঈদুল আযহার দিনে বিশেষ ১৩ টা সুন্নাত রয়েছে :
১. ভোরে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা।
২. মেসওয়াক করা।
৩. গোসল করা।
৪. যথা সাধ্য উত্তম পোশাক পরিধান করা।
৫. শরীয়ত সম্মতভাবে সাজ-সজ্জা করা।
৬. খুশবূ লাগানো।
৭. ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কোন কিছু না খাওয়া।
৮. আগে আগে ঈদগাহে যাওয়া।
৯. ঈদুল আযহার নামায সকাল সকাল পড়া।
১০. পারলে ঈদগাহে যেয়ে ঈদগাহে নামায পড়া উত্তম।
১১. পায়ে হেটে ঈদগাহে যাওয়া।
১২. যাওয়ার সময় এই তাকবীর জোরে জোরে পড়ে পড়তে যাওয়া- أَللّٰهُ أَكْبَرُ أَللّٰهُ أَكْبَرُ لَا إِلٰهَ إلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ أَللّٰهُ أَكْبَرُ وَلِلّٰهِ الْحَمْد
১৩. এক রাস্তায় যাওয়া, অন্য রাস্তা দিয়ে প্রত্যাবর্তন করা।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদের সব কিছু সহীহভাবে আমল করার তাওফীক দিন। পশু কোরবানির মাধ্যমে ঈমানের সাক্ষ্য প্রদান এবং পশুত্ব কোরবানির মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানুষ হওয়াই কোরবানির দাবি। কোরবানির মাধ্যমে ক্রোধ, হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, শত্রুতা ইত্যাদি পশুত্বকে দমন করে মানুষের সুকুমারবৃত্তিগুলোকে জাগিয়ে তুলতে পারলে আমাদের কোরবানি সার্থক হবে এবং সমাজে শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে পড়বে। পরিশেষে আল্লাহর কাছে সকলের কোরবানি কুবল ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।

ভারতে এত বাবা, এসব বাবাদের কার আয় কত জানলে আকাশ থেকে পড়বেন


দুই নারী শিষ্যাকে ধর্ষণের দায়ে স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ২০ বছর জেল ঘোষণার পর তার নানা অপকর্ম সামনে আসতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে তার মতো ধর্মগুরুদেরও মুখোশ উম্মোচন হচ্ছে। তাদের বার্ষিক আয় কত, সম্পত্তি কত তাও আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে।
বাবা রামদেব: পতঞ্জলি ব্র্যান্ড, পতঞ্জলি যোগপীঠ এবং দিব্যা যোগী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা বাবা রামদেবের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার কোটি রুপি।

মা অমৃতানন্দময়ী: দেশ-বিদেশে প্রায় তিন কোটি ভক্ত রয়েছে মাতা অমৃতানন্দময়ীর। তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। নিজের নামে স্কুল, কলেজ, টিভি চ্যানেলও রয়েছে তার।

শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর: আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের বাৎসরিক আয় প্রায় হাজার কোটি। বিশ্বের ১৫১টি দেশে প্রায় তিন কোটি সদস্য রয়েছে আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশনের।

শ্রী আসারাম বাপু:
আলোচিত এবং বিতর্কিত ধর্মগুরুদের মধ্যে অন্যতম আসারাম বাপু। এই মুহূর্তে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে রয়েছেন তিনি। সারা দেশে বাপুর ৩৫০টি আশ্রম রয়েছে। রয়েছে ১৭ হাজার বাল শঙ্কর কেন্দ্রও। এই মুহূর্তে তাঁর বাৎসরিক আয় প্রায় ৩৫০ কোটি রুপি।

গুরমিত রাম রহিম সিংহ:
সদ্য দু’টি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ২০ বছর জেলের সাজা পেয়েছেন বাবা রাম রহিম। ডেরা সাচ্চা সৌদার কর্ণধার রাম রহিমের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি রুপি। তার ডেরাতে রয়েছে ৭০০ একর চাষযোগ্য জমি, স্কুল, কলেজ, মাল্টিপ্লেক্স, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট, শপিংমল, হাসপাতাল এমনকি পেট্রোল পাম্পও। দেশ-বিদেশে ২৫০টি আশ্রম রয়েছে রাম রহিমের।

শ্রী মোরাই বাপু:
দেশ-বিদেশে রাম-কথা শোনান তিনি। এই সংক্রান্ত কোর্সও করান তিনি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার বাৎসরিক আয় ১৫০ কোটি রুপি।

অদ্ভুত বাবা শিবানন্দজি মহারাজ:
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই বাবারও বাৎসরিক আয় প্রায় ৪০ কোটি টাকা।







এয়ার হোস্টেসদের দেহ ব্যবসা বিমানেই, কারন জানলে অবাক হবেন


কিছু দিন আগে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিমান সংস্থায় কর্মরত বিমানসেবিকা এক যাত্রীর সঙ্গে সঙ্গমরত অবস্থায় বিমানের মধ্যেই ধরা পড়েন।
তার স্বীকারোক্তি শুনে অনেকেরই চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। তিনি দাবি করেছেন, এ ভাবে যাত্রীদের সঙ্গে সেক্স করার বিনিময়ে চড়া দাম নিতেন তিনি।
রোজগার করেছেন প্রায় ৭ লাখ পাউন্ড। বেতন তো ছিলই তবে এ ভাবে উপরি আয়ের হাতছানি সহজে ছাড়তে পারেননি তিনি। তাই লং ডিসট্যান্স ফ্লাইটেই বেশি কাজ করতে পছন্দ করতেন।
দুবাইয়ের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছে, ওই এয়ার হোস্টেস সেক্সের বিনিময়ে দেড় হাজার পাউন্ড দাবি করতেন যাত্রীদের কাছে। এটাই শেষ নয়।
জাপানের এয়ার হোস্টেসরাও এই কাজে নাকি সিদ্ধহস্ত। মাঝ আকাশে বিমানচালক এবং অন্যান্য ক্রু মেম্বারদের সঙ্গে সেক্সের বিনিময়ে তারাও এ ভাবে রোজগারের অন্য পন্থা বার করেছেন।
কিন্তু এত জাঁকজমকের জীবনে, ভালো বেতনের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে কি? উত্তরটা এয়ার হোস্টেসরাই দিয়েছেন।
অনেকেই জানিয়েছেন, শুধুমাত্র রোজগারই একমাত্র কারণ নয়। দীর্ঘদিন নিকটজনের কাছ থেকে দূরে থাকায় শারীরিক চাহিদাও এর পেছনে অন্যতম কারণ।

নবীর কবর দেখতে পারলামনা, আল্লাহ্ তোমার কাছে বিচার দিলাম

হে আল্লাহ্, তোমার কাছে বিচার দেয়া থাকল, তোমার হাবিবের কবর দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল, কিন্তু যেতে পারলামনা’ এভাবেই অসহায়ের মতো কান্নাজড়িত কন্ঠে আহাজারি করছিলেন হজে যেতে না পারা এক বয়বৃদ্ধ।
জীবনের শেষ সঞ্চয় দিয়ে শেষ ইচ্ছাটুকু না পূরণ হওয়ার জন্যেই তার এ আকুতি। অভিভাবকহীন এই মানুষগুলো এখন সবচেয়ে অসহায়ের মতো অবস্থা অনুভব করছে।
ভিসা থাকার পরেও টিকিট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ১২২ জন হজে যেতে পারছেনা বলে নিশ্চিত হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হলেও শেষ ফ্লাইটে আর কোনো হজ যাত্রীকে বহনের অনুমতি দেয়নি সৌদি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবার যারা হজে যেতে পারলেন না আগামীবতে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
দায়ী হজ ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জানালেন কর্তৃপক্ষ। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, হজ এজেন্টদেরকে ধরে
আনতে আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত র‌্যাব এর সাহায্য নিতে হয়েছে। যে সমস্ত এজেন্সি এধরনের ভোগান্তির জন্যে দায়ী তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৮ জন হজ যাত্রীর হজে যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত হজে যেতে পেরেছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১০৩ জন।

স্বাধীন আরাকানের স্বপ্ন, রুখে দাঁড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানে অন্তত ৮০ বিদ্রোহীসহ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক দশক ধরে চলা রোহিঙ্গা নির্যাতনের পর এবার মিলছে প্রতিরোধের আভাস। শুধু পালিয়ে বেড়ানো নয়, অস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়াচ্ছেন রোহিঙ্গারা। খবর ডয়চে ভেলে।
গত ২৫ আগস্ট ভোরে বিদ্রোহীরা অন্তত ৩০টি পুলিশ ও সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১২ জন সদস্য তাতে নিহত হন। এরপর থেকে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় নিপীড়ন ও নির্যাতন। সীমানা পেরিয়ে আবারও দলে দলে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেন রোহিঙ্গারা। তবে বরাবরের মতোই বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফেরত পাঠাচ্ছে রোহিঙ্গাদের। ফলে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে আটকা পড়েছেন শত শত রোহিঙ্গা। তবে এবার শরণার্থীদের ঢলে একটু পরিবর্তন দেখছেন বিজিবি সদস্যরাও।
অন্যবার পুরো পরিবারসহ রোহিঙ্গারা পালিয়ে এলেও এবার শরণার্থীদের দলে পুরুষদের সংখ্যা একেবারেই কম বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, পুরুষদের কী হয়েছে, আমরা তাদের (রোহিঙ্গা নারীদের) জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমাদের জানানো হয়েছে লড়াই করার জন্য পুরুষরা রয়ে গেছে। নতুন সহিংসতায় পালিয়ে আসাদের ভাগ্য সহায় না থাকলেও সন্তানসম্ভবা হওয়ায় আয়েশা বেগম স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশে কক্সবাজারের একটি ক্যাম্পে। তবে ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দেখতে পারছেন না তার স্বামী। রোহিঙ্গাদের হয়ে যুদ্ধ করার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইনেই রয়ে গেছেন তিনি। তিনি জানান, ‘আমাদের তিনি (আয়েশার স্বামী) নদী পাড়ে এনে বিদায় দিয়েছেন। বলেছেন, বেঁচে থাকলে দেখা হবে স্বাধীন আরাকানে, মারা গেলে বেহেশতে।
আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মি (এআরএসএ)। অক্টোবর হামলার দায় স্বীকারের পর থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পরিচিত হয়ে উঠেছে এআরএসএ। দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত নির্যাতনের শিকার হলেও সাধারণ রোহিঙ্গারা এতদিন সহিংসতা এড়িয়ে চলছিল। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরে এবং চলমান সেনা অভিযানের পর সাধারণ রোহিঙ্গারাও হাতে তুলে নিচ্ছেন অস্ত্র। মিয়ানমারে গত অক্টোবরে ৯ পুলিশ হত্যার অভিযোগ ওঠে এক রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
তারপর থেকে সেদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর আবারও দমন-পীড়ন শুরু হয়। ফলে সত্তর হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা যেসব ক্যাম্পে বসবাস করেন, সেগুলোর একটি এই কুতুপালং। সীমান্তে আসা রোহিঙ্গা নেতা শাহ আলম জানান, আশপাশের তিন গ্রাম থেকে অন্তত ৩০ জন যুবক ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে’ যোগ দিয়েছে এআরএসএতে।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তাদের কী-ইবা করার ছিল! পশুর মতো খুন হওয়ার চেয়ে লড়াই করে মারা যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন তারা। মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি এআরএসএকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন বলে উল্লেখ করেছেন। সংগঠনটির বিরুদ্ধে শিশু যোদ্ধা ব্যবহারের অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে এআরএসএ এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবেই এখন বিশ্বজুড়ে এআরএসএকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত করানোর উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। কঠোর বিবৃতি এবং এআরএসএ’র গুলিতে নিহত বেসামরিক নাগরিকদের ছবি প্রকাশ করে বিশ্বে জনমত গড়ে তোলারও চেষ্টা চালাচ্ছে মিয়ানমার। কিন্তু পাল্টা প্রচার চালাচ্ছে এআরএসএ-ও। শুধু মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেই নয়, বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের কাছেও পৌঁছে গেছে যুদ্ধের ডাক। এআরএসএ বিদ্রোহীদের ভারি অস্ত্র বলতে কিছুই নেই। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ছুরি, ঘরে তৈরি বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র। ফলে মিয়ানমারের সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে কতটুকু টিকতে পারবে বিদ্রোহীরা, সে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
কিন্তু তাতে দমছেন না রোহিঙ্গারা। সীমান্তে এএফপিকে এক রোহিঙ্গা যোদ্ধা জানিয়েছেন, আমাদের শত শত যোদ্ধা পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আরাকানকে রক্ষায় শপথ নিয়েছি, সেটা চাকু এবং লাঠি দিয়ে হলেও আমরা করব। কুতুপালং ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবকের মন্তব্য ছিল এমন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের তরুণরাও চিন্তা করছেন যুদ্ধে যোগ দেওয়ার। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, প্রথম সুযোগেই আমরা সীমান্ত অতিক্রম করব। হাজেরা বেগম তিন ছেলেকে নিয়ে গত মাসে সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছেন। তার আরও দুই ছেলে রয়ে গেছেন যুদ্ধ করবেন বলে। বাংলাদেশে আসার এক সপ্তাহের মধ্যে তার আরেক ছেলেও যোগ দেন লড়াইয়ে।
এএফপিকে তিনি বলেন, ‘ওরা (মিয়ানমার সেনাবাহিনী) আমাদের এমনিতেই মারবে। এরা (এআরএসএ) আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। আমি আমার ছেলেদের পাঠিয়েছি স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের উত্সর্গ করেছি, আরাকানের জন্য।’

তনুর মতো রূপাকেও আমরা ভুলে যাব

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা আরও একবার কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার তনুকে মনে করিয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনা বাংলাদেশের বিবেকে নাড়া দিয়েছিল। পাশবিক ঘটনাগুলো বার বার ফিরে অাসলেও অপরাধীরা বিচারের আত্ততায় আসে না।
সেই সংকোচ নিয়ে সাংবাদিক শেখ মামুন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন: ধর্ষিত হলো রূপা নামের মেয়েটি। চলন্ত বাসে ধর্ষিত হলো, এরপর জীবনও দিলো। কাজটি যারা করল, তাদের মধ্যে কোনো বিকার ছিল না।
ধর্ষণ ও হত্যার মতো এত বড় একটা অপরাধ ঘটানোর পরও অপরাধীরা নির্বিকারভাবে প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে চলছিল। ভাবখানা এমন, কি হবে ? কিছুইতো হবে না।
দেশে ধর্ষণের ঘটনা যেন ডালভাত। তনুর কথা মনে আছে ? দুদিন পর রূপার কথাও ভুলে যাব। নতুন কোনও ধর্ষিতার কাহিনী আমরা লিখব, এ নিয়ে খানিকটা ঝড় উঠবে। এরপর সব ভুলে যাব। কোনও অসুখ নয়, বিসুখ নয়, কোনো দুর্যোগের আলামতও নেই, এর মধ্যে আচমকা ‘নেই’ হয়ে গেল রূপা। আসুন রুপাদের বাচাই, রূপাদের পাশে দাঁড়াই।

কুয়েতে দালালদের কাছে জিম্মি নারী শ্রমিকরা


মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ কুয়েতের শ্রমবাজার বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৯৭৮ সালে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী কুয়েতে বর্তমানে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ কর্মী রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, পুরুষ কর্মীদের তুলনায় নারী কর্মীদের জীবন যাপন আরও বেশি মানবেতর।
কুয়েতে দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন বাংলাদেশি নাসরিন আক্তার মৌসুমী। তিনি কুয়েত বাংলা রেডিও পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজের সাথেও জড়িত। এই কুয়েত প্রবাসী নারী জানান, কুয়েতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের অর্ধেকেরও বেশি বিভিন্ন ক্লিনিং কোম্পানিতে কাজ করে। তাদের জীবন যাত্রা অন্ত্যন্ত নিম্ন মানের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কুয়েতি নারী কর্মী বলেন, আমরা এখানে ছোট্ট একটা রুমে ডাবল ডেকার বেডে একসাথে ৬/৭ জন থাকি। ছয় সাত মাসেও কখনো মাংস খেতে পাই না। ৫ জনের বাজারে ১৫ জনের খাবার চলে। তাও আবার সবজি আর ডাল ভাত। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঠিকমতো খাবার ও সুস্থ্য বাসস্থানের অভাবে অনেক নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরে। কর্মক্ষেত্রে গিয়ে ভালো পরিশ্রম না দিতে পারায় অনেকে চাকরি হারায়।
কুয়েত প্রবাসী মৌসুমী বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব নারী কুয়েতে কাজের জন্য যায়, তারা সাধারনত সেখানে গিয়েও দালালচক্রের কাছে জিম্মি হয়ে থাকেন। আবাসন, খাবার থেকে শুরু করে আকামা পর্যন্ত সব কিছুই পরিচালিত হয় ওইসব দালালদের নির্দেশে। ফলে নিজেদের জীবন যাপনের উপর তাদের কোন কর্তৃত্ব থাকে না ।
এই প্রবাসী নারী জানান, বাংলাদেশি নারীরা কর্মীরা বেশিরভাগই অশিক্ষিত। এ কারণে তাদেরকে বাইরে গিয়েও দালাল নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। সামান্য কোন বিষয়ে কাগজ পত্র নিয়ে হাজির হতে হয় দালালের কাছে। এই সুযোগে দালালরা তাদের সর্বস্ব দখল করে বসে। এমনকি ভুয়া জায়গায় অসহায় কর্মীদের সই নিয়ে বেতন ও বোনাস তুলে নেয়ারও অনেক অভিযোগ রয়েছে নারী কর্মীদের কাছে। এই কুয়েত প্রবাসী আরও জানান, স্থানীয় কুয়েতিরা বাংলাদেশিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেনা। বিদেশি কর্মীদের প্রতি তারা সহানভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।
বরং কুয়েতে এক শ্রেণির দালাল চক্র গড়ে উঠেছে যারা দেশীয় একটি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। এই চক্রগুলো বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের অসহায় ও অশিক্ষিত নারীদের বিদেশে বেশি টাকা বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে এসে বিপদে ফেলে। প্রতিটা স্তরে নিজেদের লোক দিয়ে এরা নারী কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করে। ওই দালাল চক্রেরই একটি অংশ নারী কর্মীদের কোম্পানিতে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়। এরপর বেতন, ভাতা, বোনাস সবকিছুতেই তাদের একটা শেয়ার থাকে। এমনকি এসব টাকা সরাসরি নারী কর্মীরা পায়না। কোম্পানির কাছ থেকে দালালের হাত ঘুরে তাদের কাছে আসে। ফলে কোম্পানি না ঠকালেই শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। লাভবান হয় মধ্যস্বত্তভোগী বিদেশে থাকা দালাল শ্রেণি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্যান্যের মত নারী কর্মীদেরও ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে তারপর বিদেশ পাঠাতে হবে। তাহলে তারা ভিনদেশে গিয়ে আর দালালের জিম্মায় থাকবে না। অন্যদিকে, যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে বিদেশে কর্মীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates