মালয়েশিয়া সরকারের মাই সেকেন্ড হোম (এমএমটুএইচ) কর্মসূচির আওতায় ৩ হাজার ৫৪৬ বাংলাদেশি সেকেন্ড হোম গড়ার অনুমতি পেয়েছেন। দেশটির পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী নাজরি আজিজ জানিয়েছেন, ওই কর্মসূচির আওতায় ২০০২ সাল থেকে এ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ার অনুমতি পেয়েছেন ১২৬টি দেশের ৩৩ হাজার ৩শ’ জন।
আবেদনকারীরা ভিসা নবায়ন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চালু ও অন্যান্য সম্পদ ক্রয়ের কারণে মালয়েশিয়ার রাজস্ব আয় হয়েছে ২৯০ কোটি রিঙ্গিত। দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বশেষ প্রকাশিত ওই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটির ৮ হাজার ৭১৪ ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করেছেন। এরপরের অবস্থানে আছে জাপান (৪ হাজার ২২৫ জন)। তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। এরপর কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের অবস্থান।
মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সেকেন্ড হোম প্রজেক্ট প্রথম চালু হয় ২০০২ সালে। কিন্তু প্রথমবার কোনো বাংলাদেশি সেকেন্ড হোমের জন্য আবেদন করেননি। এরপর ২০০৩ সালে প্রথমবার বাংলাদেশিরা আবেদন করেন। তখন থেকে এ পর্যন্ত মোট আবেদন করেছেন প্রায় ৮ হাজার ৩৫০ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে অনুমতি পেয়েছেন ৩৫৪৬ জন।
মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত এমএমটুএইচ প্রোগ্রামে মালয়েশিয়ার ২৩৮টি এজেন্টের বাইরে অনুমোদিত এজেন্ট ছিলোনা। কিন্তু দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় এমএমটুএইচের বাংলাদেশে সাব-এজেন্টের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। এমনকি বিভিন্ন অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে রীতিমত এ ব্যাপারে বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের তৃতীয় সাশ্রয়ী অবসরকালীন অভিবাসন সুবিধা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম। এর ফলে দেশটিতে বাংলাদেশিরাও সেকেন্ড হোম সুবিধা নিয়েছে এবং সে সংখ্যা উল্লেখজনক। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১০ বছরের নন-মালয়েশিয়ান ভিসার জন্য আবেদন করতে বাংলাদেশি ৫০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টে জমা থাকতে হয় ৫ লাখ রিঙ্গিত বা ১ কোটি ৬ লাখ টাকা এবং মালয়েশিয়ার ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করতে হয় ৬৫ লাখ টাকা। ৫০ ঊর্ধ্বদের জন্য অ্যাকাউন্টে থাকতে হবে সাড়ে ৩ লাখ রিঙ্গিত বা ৭৫ লাখ টাকা।
মালয়েশিয়ায় ফিক্সড ডিপোজিট করতে হবে ৩২ লাখ টাকা। তবে উভয় ক্ষেত্রে মাসিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ২ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ হিসেব শুধু কাগজে কলমে।
মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্যে জানা গেছে, যে কোনো দেশের নাগরিক মালয়েশিয়ার মাই সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজেন্সি মারফত বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি এ প্রোগ্রামের সুবিধার জন্য আবেদন করা যাবে। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে নানা সমস্যার মুখে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কায় অনেকে সেকেন্ড হোম সুবিধা নিয়ে থাকেন। এ কারণে সরকার পরিবর্তনের সময়গুলোয় সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামে আবেদনের হিড়িক পড়ে।
No comments:
Post a Comment