Social Icons

Thursday, August 24, 2017

শিলংয়ে মেঘ-পাহাড়ের টান


যদি কখনও মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, 'মেঘ তোমার ঘর কোথায়?', মেঘের উত্তর একটাই, 'মেঘালয়'। নামটি শোনামাত্র চোখের সামনে ভেসে ওঠে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের গায়ে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ, সবুজ উপত্যকা, পাইন বনের সারি, উচ্ছ্বল নদী, মনোমুগ্ধকর ঝর্না আর অর্কিডের সমারোহ।
 
ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে মেঘালয়ের শিলং নিয়ে জানানো হয়েছে বিস্তারিত তথ্য।
 
১৯৭২ সালের ২১শে জানুয়ারি মেঘালয় ভারতের ২১তম রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭০-এ অসম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েই সৃষ্টি হয়েছিল মেঘালয়। গারো পাহাড়, খাসি পাহাড়, জয়ন্তিয়া পাহাড়- এই তিন অঞ্চলকে নিয়েই গড়ে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের এই ছোট রাজ্যটি। মিশনারিদের প্রভাবে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ খ্রিস্টান।
 
মনোরম আবহাওয়ার কারণে সারা বছর পর্যটক সমাগম বেশ ভালই হয় মেঘালয়ের শিলংয়ে। প্রধানত খাসি পাহাড়কে কেন্দ্র করে পর্যটনশিল্প গড়ে উঠলেও জয়ন্তিয়া পাহাড়ের আকর্ষণও নেহাত কম নয়। তবে গারো পাহাড় পর্যটন মানচিত্রে আজও তেমন জায়গা করে নিতে পারেনি। এখানকার আধিবাসীরা গারো, খাসি, জয়ন্তিয়া, এই তিনটি প্রধান গোষ্ঠীতে বিভক্ত।
 
মেঘালয়ে সমাজব্যবস্থা মাতৃতান্ত্রিক। ছেলেরা মায়ের পদবি ব্যবহার করে। মায়ের সম্পত্তির মালিক হন মেয়েরা। মেয়েদের হাতেই সব দায়িত্ব। মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে বাংলাদেশ। সুতরাং, বাঙালির সংখ্যা নেহাত কম না। কর্মসূত্রে বহু বাঙালির স্থায়ী বাসস্থান। অধিকাংশ পরিবারের মূল শিকড় বাংলাদেশের সিলেট জেলায়।
 শিলং
 
বাঙালি শিলং শহরকে মানসচক্ষে দেখেছে কবিগুরুর ‘শেষের কবিতা’র পাতায় পাতায়। তবে আজ আর অমিত-লাবণ্যের সেই শহরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। জনবহুল, ব্যস্ত শহরে জায়গা করে নিয়েছে বহুতল, কংক্রিটের জঙ্গল। ব্রিটিশরা তাদের অবসরের অধিকাংশ সময় কাটাতেন সৌন্দর্যে ঘেরা এই শৈলশহরে। তাদের ভালবাসায় নামকরণ হয় ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’। আজও ব্রিটিশ আমলের কিছু বাড়ি সেই সাক্ষ্য বহন করছে। ১৪৯৬ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত রাজধানী শহর শিলংকে কেন্দ্র করেই বেড়ানো যায় মেঘালয়।
 
চরিত্রের দিক দিয়ে এ অঞ্চলের পাহাড়গুলি ভারতের অন্য শৈলশহরগুলির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। চড়াই-উতরাই কম। চারপাশে ছোট ছোট সবুজ টিলায় ঘেরা মনোরম এই সরোবরে বোটিংয়ের ব্যবস্থা আছে। সফরসূচিতে একটা দিন বাড়িয়ে নিতে পারলে লেকের পাশে মেঘালয় ট্যুরিজমের লজ ‘অর্কিড লেক রিসর্টে’ একটি নিশিযাপন খুবই রোম্যান্টিক হবে।শিলংয়ে মেঘ-পাহাড়ের টান
 যদি কখনও মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, 'মেঘ তোমার ঘর কোথায়?', মেঘের উত্তর একটাই, 'মেঘালয়'। নামটি শোনামাত্র চোখের সামনে ভেসে ওঠে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের গায়ে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ, সবুজ উপত্যকা, পাইন বনের সারি, উচ্ছ্বল নদী, মনোমুগ্ধকর ঝর্না আর অর্কিডের সমারোহ।
 
ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে মেঘালয়ের শিলং নিয়ে জানানো হয়েছে বিস্তারিত তথ্য।
 
১৯৭২ সালের ২১শে জানুয়ারি মেঘালয় ভারতের ২১তম রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭০-এ অসম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েই সৃষ্টি হয়েছিল মেঘালয়। গারো পাহাড়, খাসি পাহাড়, জয়ন্তিয়া পাহাড়- এই তিন অঞ্চলকে নিয়েই গড়ে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের এই ছোট রাজ্যটি। মিশনারিদের প্রভাবে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ খ্রিস্টান।
 
মনোরম আবহাওয়ার কারণে সারা বছর পর্যটক সমাগম বেশ ভালই হয় মেঘালয়ের শিলংয়ে। প্রধানত খাসি পাহাড়কে কেন্দ্র করে পর্যটনশিল্প গড়ে উঠলেও জয়ন্তিয়া পাহাড়ের আকর্ষণও নেহাত কম নয়। তবে গারো পাহাড় পর্যটন মানচিত্রে আজও তেমন জায়গা করে নিতে পারেনি। এখানকার আধিবাসীরা গারো, খাসি, জয়ন্তিয়া, এই তিনটি প্রধান গোষ্ঠীতে বিভক্ত।
 
মেঘালয়ে সমাজব্যবস্থা মাতৃতান্ত্রিক। ছেলেরা মায়ের পদবি ব্যবহার করে। মায়ের সম্পত্তির মালিক হন মেয়েরা। মেয়েদের হাতেই সব দায়িত্ব। মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে বাংলাদেশ। সুতরাং, বাঙালির সংখ্যা নেহাত কম না। কর্মসূত্রে বহু বাঙালির স্থায়ী বাসস্থান। অধিকাংশ পরিবারের মূল শিকড় বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। শিলং
 
বাঙালি শিলং শহরকে মানসচক্ষে দেখেছে কবিগুরুর ‘শেষের কবিতা’র পাতায় পাতায়। তবে আজ আর অমিত-লাবণ্যের সেই শহরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। জনবহুল, ব্যস্ত শহরে জায়গা করে নিয়েছে বহুতল, কংক্রিটের জঙ্গল। ব্রিটিশরা তাদের অবসরের অধিকাংশ সময় কাটাতেন সৌন্দর্যে ঘেরা এই শৈলশহরে। তাদের ভালবাসায় নামকরণ হয় ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’। আজও ব্রিটিশ আমলের কিছু বাড়ি সেই সাক্ষ্য বহন করছে। ১৪৯৬ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত রাজধানী শহর শিলংকে কেন্দ্র করেই বেড়ানো যায় মেঘালয়।
 
চরিত্রের দিক দিয়ে এ অঞ্চলের পাহাড়গুলি ভারতের অন্য শৈলশহরগুলির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। চড়াই-উতরাই কম। চারপাশে ছোট ছোট সবুজ টিলায় ঘেরা মনোরম এই সরোবরে বোটিংয়ের ব্যবস্থা আছে। সফরসূচিতে একটা দিন বাড়িয়ে নিতে পারলে লেকের পাশে মেঘালয় ট্যুরিজমের লজ ‘অর্কিড লেক রিসর্টে’ একটি নিশিযাপন খুবই রোম্যান্টিক হবে।
কী কী দেখবেন
 
শহরের মধ্যমণি কর্মব্যস্ত পুলিশবাজার সংলগ্ন এলাকাতেই রয়েছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানবাজার, শপিং মল, বাস টার্মিনাস, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, ট্যুরিজ্‌ম-এর অফিস। গাড়ি ভাড়া করে অথবা মেঘালয় পর্যটন দফতর আয়োজিত কন্ডাক্টেড ট্যুরে বেড়িয়ে নিন শিলং কেন্দ্রিক সিটি ট্যুর।
 
শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ‘শিলং পিক’। আপার শিলং অঞ্চলের মধ্যে এ জায়গাটি পুরোটাই বায়ুসেনার অধীনে। ৬৪৫০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মেঘালয়ের উচ্চতম এই পয়েন্ট থেকে শিলং শহরের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতে হয়। চারপাশে পাইন বনের সারি। পাহাড়ের মাথায় আছে ওয়াচটাওয়ার ও ভিউপয়েন্ট। সেখান থেকে দেখা যায় পাহাড়ের প্যানোরামিক ভিউ।
 
শিলং পিকের কাছেই ২ কিলোমিটার দূরে এলিফ্যান্ট ফলস। রাজ্যের সবচেয়ে বড় ও সুন্দরী জলপ্রপাত। তিনটি ধাপে ঝর্নাধারা নীচে নেমেছে। জলপ্রপাতটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দর্শনে বাঁধানো সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যেতে হবে একেবারে নীচে। সঙ্গী হবে চেনা-অচেনা পাখির কলতান। বর্ষায় এই রূপসী ঝর্নার লাবণ্য আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। পরিবেশ খুবই মনোরম।
 
আপার শিলংয়ে অন্য দ্রষ্টব্য ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড মিউজিয়াম। মূলত ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঐতিহাসিক তথ্য জানা যায়। বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র, আলোকচিত্র ও মডেল প্রদর্শিত হয়েছে এখানে। মিউজিয়ামের বাইরে রাখা আছে কয়েকটি বিমান ও হেলিকপ্টার।
 
শিলংবাসীদের আর একটি জনপ্রিয় স্থান ওয়ার্ডস লেক। পুলিশবাজার থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্ব। ১০০ বছরের পুরনো এই কৃত্রিম হ্রদটি ফুলের বাগান ও গাছপালায় ঘেরা অতি মনোরম এক স্থান। লেকের মাঝ বরাবর পারাপারের জন্য আছে কাঠের সেতু। বাঁধানো পথ ধরে লেক পরিক্রমা করতে করতে দেখা যায় পাইন গাছের সারি, ফুলের শোভা। মাছের জলকেলি দেখতে দেখতে সময় কেটে যায়। লেকে বোটিং-এর ব্যবস্থা আছে। মন চাইলে নৌকা নিয়ে ভেসে পড়ুন শান্ত জলে। লেক সংলগ্ন বটানিক্যাল গার্ডেনে আছে শতাব্দী প্রাচীন পাইন গাছ ও দুষ্প্রাপ্য অর্কিড।
 
দেশবিদেশ থেকে সংগৃহীত নানান কীটপতঙ্গ নিয়ে তৈরি এক অভিনব সংগ্রহশালা ওয়াংখার বাটারফ্লাই মিউজিয়াম। ১৯৭৩ সালে এটি গড়ে ওঠে। নানা প্রকার প্রজাপতি, ফড়িং, মথ, মাকড়সা, বিছে প্রভৃতি পোকামাকড়ের অসাধারণ সংগ্রহ দেখে বিস্মিত হতে হয়।
 
গলফ কোর্সের সৌন্দর্য শিলংয়ের অহঙ্কার। ৫২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দেশের অন্যতম পুরনো এই গলফ কোর্সটি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম। ১৮টি হোল আছে গলফ মাঠে। পাশেই পোলো গ্রাউন্ড। ঢেউ খেলানো পাহাড়ের বিস্তার, সবুজ ঘাসের কার্পেট আর পাইন বনের শোভা— এক অনবদ্য কোলাজ।
 
শহরের ৫ কিলোমিটার দূরে যমজ দুই ফলস বিডন আর বিশপ। একই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে এই দুই জলপ্রপাত। বাঁ দিকে বিডন আর ডানপাশে বিশপ। দূর থেকে দেখা যায় সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা বিডন-বিশপের সৌন্দর্য। বর্ষাকালে এরা হয়ে ওঠে অপরূপা।
 
ক্যাথলিক ক্যাথিড্রাল চার্চের মূল আকর্ষণ এর অভিনব স্থাপত্যশৈলী। যিশুখ্রিস্টের জীবনের নানা কাহিনি, উপাখ্যান ও ঘটনাবলীকে অবলম্বন করে অসাধারণ তৈলচিত্র আঁকা আছে। মেঘালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায় স্টেট মিউজিয়ামে। এখানে উপজাতিদের সমাজজীবনের প্রদর্শন ছাড়াও আছে ঐতিহাসিক সামগ্রী ও পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন।
 
শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে স্যুইট ফলস। বহু দূরে পাহাড় থেকে প্রায় ২০০ ফুট নীচে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এই ঝর্নাটি। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তিন বার শিলংয়ে গিয়েছিলেন। ১৯১৯-এ ব্রুকসাইড বাংলোয় লিখেছিলেন ‘শেষের কবিতা’। ১৯২৩-এর এপ্রিল, মে, জুন মাসে রিলবং এলাকায় ‘জিৎভূমি’ বাংলোয় কিছু দিন তিনি বসবাস করেন। এখানেই লিখেছিলেন রক্তকরবী, শিলঙের চিঠি। তবে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত বাংলোটি কেবলমাত্র বাইরে থেকে দেখার সুযোগ মেলে। তবু বাঙালি পর্যটকদের আবেগ তাদের টেনে নিয়ে যায় এই বাংলোর দোরগোড়ায়। শেষ বার কবিগুরু শিলং এসেছিলেন ১৯২৭-এ।
 
আপার শিলং ছাড়িয়ে শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মফলং। উপজাতি মানুষদের কাছে এটি একটি ‘পবিত্র অরণ্য’। এই অরণ্য তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মার আশ্রয়স্থল বলে মনে করেন উপজাতীয়রা। মফলং-এর খ্যাতি তার অর্কিডের জন্য। এখানে বিরল প্রজাতির কিছু অর্কিড ও বৃক্ষ দেখতে পাওয়া যায়। খুবই যত্নসহকারে এই পবিত্র বনকে সংরক্ষণ করা হয়।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates